ইসলামী সঙ্গীত লিরিক্স

Saturday 5 March 2011

দেশের মানুষ হইলো বেহুঁশ

দেশের মানুষ হইলো বেহুঁশ
হারাইয়া স্বজন
বানের তোড়ে ভাইসা গেছে
কত আপন জন।।

সেদিন রাতে আইলো ঝড়
পাহাড় বরাবর,
তুফান আইয়া কাইড়া নিল
তামাম বাড়ী ঘর,
উজাড় কইরা লইয়া গেল
সবুজ গাছ আর বন।।

বুড়ীর চরের সবাই গেছে
বাঁইচা আছে বুড়ী,
বিরান ভিটায় অবোধ শিশু-
আছে মানব কুঁড়ি,
কেমন ধারায় বাঁচাও মরাও
বোঝেনা এ মন।।

বিরান দেশে আসলে সওয়াল
জবাব পাইমু না,
কাইন্দা কাইট্টা বুক ভাসাইবো
হাজার জনের মা,
কোন খানেতে ভাইসা গেছে
ওদের বুকের ধন।।

-আবু জাফর মোহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ-

যে ফুল যুগ যুগান্তরে খুশবু ছড়ায়

যে ফুল যুগ যুগান্তরে খুশবু ছড়ায়
এঁকেছি সে ফুল মোরা
মনের ওই কাবায়।।

হাবীবে খোদা তিনি নবী কামলিওয়ালা,
তাঁরই ছোঁইয়াতে আজো দুনিয়া উজালা,
তাঁরই বিরহে দু'চোখ
অশ্রু ঝরায়।।

গাহে গুণগান যার খোদ খোদাতায়ালা,
কবি- আকবি গাঁথে শত সুরমালা,
ঝরে ধারা অবিরত
কভু না ফুরায়।।

যাঁরে খোদা ডেকে নিয়ে আরশ পাকে,
মধুর সুমধুর সুরে নাম ধরে ডাকে,
তাঁরই প্রেমে কাতর এ বুক
জ্বলে পুড়ে যায়।।

-তোফাজ্জল হোসাইন খান-

সেই সংগ্রামী মানুষের সারিতে

সেই সংগ্রামী মানুষের সারিতে
আমাকেও রাখিও রহমান
যারা কোরানের আহবানে নির্ভিক
নির্ভয়ে সব করে দান।।

তোমারই রঙ্গে যারা রঙ্গিন
তোমারই ডাকে ধরে সঙ্গীন
যারা সকল শক্তি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে
মিথ্যার করে অবসান।।

ফুলেল মানুষ করে ঘ্রানে উজালা
প্রানে ভালোবাসা আর সৌরভ
আকাশ সমান বুকে উদার সাহস
নিজেকে বিলিয়ে তার উৎসব।।

শাহাদাতে চলে শত ব্যথা ভুলে
তোমার প্রেমের ফুল হৃদয়ে তুলে
আছে সেই আলোময় ফুলের পথে
বিজয়ের পূত উদ্যান।।

-গোলাম মোহাম্মদ-

আর মস্কো পিকিং নয়

আর মস্কো পিকিং নয়
চলো নবীর মদীনা,
ঐ দিল্লী মার্কীন ভাই
নয় মোদের ঠিকানা।।

মোরা রাসুলের উম্মত, বাঙ্গালী মুসলমান
ফের ধরেছি কোরান, ছেড়ে কুফুরী বিধান।
ছেড়ে সকল গোলামী
হবো খোদার দিওয়ানা।।

শাহজালাল, শাহ পরাণ
শাহ মাখদুম, খান জাহান,
আছে শহীদ তুতুমীর,
বায়েজীদ ঈশা খান-
ওরা দ্বীনের সেনানী
সত্যের নিশানা।।

যদি চাও দেশের ভাল, যদি চাও স্বাধীনতা,
যদি চাও নিজের ভাল, যদি চাও সফলতা-
সবই মিলবে ইসলামে
যার হয় না তুলনা।।

-তোফাজ্জল হোসাইন খান-

আশেক রাসুল থাকি

আশেকে রাসুল থাকি
সবুজ বাংলায়
দরুদ ও সালাম পাঠাই
সোনার মদীনায়।।

যাঁর অছিলায় বিশ্ব জাহান
পয়দা করলেন প্রভু মহান
রওজাতে তাঁর
মনটা আমার
উড়াল দিয়ে যায়।।

পথ হারা সব মানুষেরে
পথ দেখালেন ধরে ধরে
কুল মাখলুকাত
তাই দিন রাত
তাঁর গুনগান গায়।।

সাম্য- মৈত্রী প্রীতির ডোরে
গাঁথলেন যিনি জগতটারে
বাংলাদেশের
এই আশেকের
হৃদয় তাঁরে চায়।।

- আমিনুল ইসলাম-

হে রহমান হে দয়াবান

হে রহমান হে দয়াবান
মন বেহাগে আজ সুরের ঘাটে ঘাটে
সাই তব গান

তোমার গুণ গাহি
তোমার দয়া চাহি
তোমার ভালবাসা
আমার চির আশা
অধম বান্দা এ যাচে ক্ষমা হে
রহীম রহমান।।

রহম আল্লাহ হে
করম আল্লাহ হে
গফুর নাম তোমার
মুয়ীন নাম তোমার
নিশার আঁধারে দিশা দাও মোরে
সীরাত দীপ্তমান।।

-মহিউদ্দিন আবু তাহের-

ধুমকেতু উঠে যা শয্যা ছেড়ে উঠে যা

ধুমকেতু উঠে যা শয্যা ছেড়ে উঠে যা
তোরে যেন কোনদিন কেউ টলাতে পারেনা।।

তোর পৃথিবী কেন মেঘে মেঘে গেল বল
চারিদিকে এ বিপত্তি তোর জীবন যে হয় অচল
কেন তবু বদ্ধ ঘরে মূঢ় হয়ে রইবি তুই
কেন রে তুই অগ্নি শিখা হয়ে আরো জ্বলবিনা।।

সত্য দিয়ে সত্যটারে নে ওরে নে চিনে
মিথ্যারে তুই যেন কভু নরম হাতে ছাড়বিনে
কেনরে তুই শুভকাজে শহীদ হয়ে মরবিনা
কেনরে তুই অগ্নিশিখা হয়ে আরো জ্বলবিনা।।

-চৌধুরী গোলাম মাওলা

একদিন জনতা নামবেই

একদিন জনতা নামবেই
রাজপথে মিছিলে
শ্বাশ্বত দাবীতে
অলিতে গলিতে
প্রানের দাবীতে
ও.........।।

শোষকের ঘরে জ্বেলে দিতে যে আগুন
হতাশার জীবনে আনতে ফাগুম
লক্ষ মজলুম পথে নামবেই।
ও...............

মুহাম্মদ (সঃ) প্রিয়জন তাঁর কথা
দিকে দিকে শুনি তাঁরই বারতা
আসার আবার এ' বিশ্ব
খুলাফায়ে রাশেদার সজীবতা

মিথ্যার করে যারা আজো বেসাতি
ধ্বংসের পদধ্বনি নিকটে অতি
উচ্ছেদ করে ত্রা সুখ আনবেই।

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

শরতের কোমলতা দেখেছ ঘাতক

শরতের কোমলতা দেখেছ ঘাতক
চৈত্রের দাবদাহ দেখনি
শিকলে বাঁধা বাঘ দেখেছ তুমি
হিংস্র নখর তার দেখনি।।

বুক ভেঙ্গে বারবার ভেবেছ
এ'বুকে বুঝি নেই কোন প্রতিরোধ
আর ঘরভেঙ্গে কড়কুটো করেছো
তবুও বুঝি নেয়নি নেয়নি তারা প্রতিশোধ
তাগুতের বিষদাঁত ভাংবে ওরা (জেনে)
শপথের দৃঢ়তা দেখনি।।

যাতনার বিষ ঢেলে ভেবেছো
মরে গ্যাছে ভোরেরই পাখীরা
আর বারুদের গোলা ছুঁড়ে দেকেহছো
তো থামেনি থামেনিতো সত্যের সাথীরা
চলছে চলবে ওরা নির্ভয়ে সমুখে
শাহাদাত কামনা দেখনি।।

-এম শামসুজ্জামান-

হৃদয় ভরে গা আল্লাহরই গান

হৃদয় ভরে গা আল্লাহরই গান
দরবারে তার বেড়ে যাবে দেখবি তোরই মান।।

আমাদের স্রষ্টা তিনি এ জীবন দিলেন যিনি
জীবনের পদে পদে তারই গান জয়ধ্বনি।।

তবে কেন রইলি ভুলে দেখনা নয়ন মেলে
বিশ্বজুড়ে তার দয়া অফুরান।।

দুনিয়ার লালসা ছেড়ে আয়রে খোদার পথে
নইলে পরপারে ঠেকবি পুলছিরাতে।।

এ' সময়ে নাওরে করে সম্বল নিজের তরে
তবে তো পাবে নাজাত পাবে ইহছান।।

-চৌধুরী আব্দুল হালিম-

বাধার প্রাচীর সব ভাংবোই

বাধার প্রাচীর সব ভাংবোই
মুক্তির সূর্যটা আনবোই
জেগেছি এবার মোরা লক্ষ তরুণ সেনা
নতুন এক পৃথিবী গড়বোই।।

প্রলয়ের বান দেখে আমরা তো টলিনি
করিনি তো কভুও চিৎকার
সত্যের পথ জানি তারও চেয়ে সুকঠিন
নির্মম বজ্রের হুংকার
প্রাচির আর প্রতিরোধ রুদ্রতাকে
ভয় নাই ঝঞ্জা ঘুর্ণিপাকে (আর) (২)
সৈনিক আমরাই লড়বোই।।

শত্রুর কষাঘাতে আমরা তো ভীত নই
নই নীচু রয় চির উঁচু শির
সত্যের পথ জানি উত্তাল ঝনঝা
সাগরের নেই নেই তীর
নিঃসীম আঁধারের পথ বেয়ে ঈমানের
নূর শিখা চেয়ে চেয়ে (আমরা)
বহু দূর মঞ্জিলে পৌঁছবোই।।

-এম শামসুজ্জামান-

Friday 4 March 2011

ঘুমিয়ে আছ এই মাটিতে

ঘুমিয়ে আছ এই মাটিতে
ও দুনিয়ার পরশ পাথর
তোমার জন্য ব্যর্থ এ প্রান
হয় যে আমার কেবল কাতর।।

নাম শুনেছি রাসুল তোমার শ্রেষ্ঠ তুমি সব মানুষের
তোমার ছোঁয়ায় ফুটলো কুসুম
ভাংলোরে ঘুম এ জগতের
মর্ত্যে তুমি আশার দোলক
প্রতীক সকল আলোর।।

শত শত বছর পরে এলাম দুনিয়ায়
স্বার্থ লোভে পাপে সত্যের আলো নিভে যায়
আছে জেহেল আছে লাহাব রুখবে তাদের সাধ্য যে কার
সংসারে ওই মাতাল ঝড়ে
কেমনে তরী নেবরে পার
তাইতো তোমার দোয়া চাহি
চোখে আমার দাওগো জ্যোতি
প্রান থেকে দাও মুছে প্রিয়
গ্লানি যত কালোর।।

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

এ তোমার হৃদয় ভরা আকুল করা জন্মভূমি

এ তোমার হৃদয় ভরা আকুল করা জন্মভূমি
এ আমার স্বপ্ন সুনীল ভালবাসার পূণ্যভূমি।।

এখনো সাত সকালে কোকিল ডাকে
শালিক আর পায়রাগুলো যায় উড়ে যায় অনেক দূরে
লাঙ্গল কাঁধে ছুটে চাষী
তুলে সুর মনমাঝি
দাঁড় টেনে যায় আপন মনে।।

বিকেলের মিষ্টিরোদে খেলার মাঠে
কানামাছি দাড়িয়া বান্ধা, লুকোচুরি ওঠে মেতে
সূর্য্য পাটে গেলে মিনারে আজান হ'লে
যায় ফিরে সব আপন ঘরে।।

-চৌধুরী আব্দুল হালিম-

ঐ কালো পর্দা তুমি টেনে টেনে

ঐ কালো পর্দা তুমি টেনে টেনে
ছিঁড়ে ফেল-
লাল জামাটা উড়িয়ে দাও
এই আঁধারে জ্যোৎস্না ছড়াও
সাবধানে পা ফেলে এগিয়ে চলো
ও............

সত্যের সুরমা নয়নে এঁকে
পথ চলি দিশাহীন অবিরাম
শত ষড়যন্ত্রের অভ্র ভেঙ্গে পেতে
চাই শ্বাশ্বত পরিণাম
জীবনের মায়াজাল ছিন্ন করি
আপোষের লালসা দীর্ণ করি
শোষকের ও প্রাসাদ উপড়ে ফেলো
ও............

আল্লাহকে প্রভু মোরা জেনেছি
রাসুলের পথ সেরা জেনেছি
সে পথেই জানি স্বস্তি
সে সুখের সন্ধানে চলেছি
যতদূর দেখা যায় শত্রু শিবির
ততদূর যাও তুমি সমুখে
বুকে বাঁধো সাহসের নব কবিতা
ভাঙ্গনের গান ধরো এ মুখে
এসো এসো গড়ি বিশ্ব রইবে না যেথা কোনো নিঃস্ব
সেই সপথের বৃক্ষ মূলে ঢালো তোমার রক্ত ঢালো
ও...............

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

সবুজের সমারোহে

সবুজের সমারোহে এই পৃথিবী
পাখীর গানে গানে নদির কলতানে
নয়ন জুড়িইয়ে যায় দেখে এ ছবি।।

সন্ধ্যার আকাশে লক্ষতারা চেয়ে থাকি
শুধু ঐ আকাশ পানে
হাজারো ভাবনা জাগে আপন মনে
তারই মাঝে খুঁজে পাই খোদারই সাড়া।।

হিম হিম বাতাসে গা ছুঁয়ে যায়
অনুভুতি জাগে শুধু দেখাতো না পায়
তারই মাঝে খুঁজে পাই স্রষ্টা তোমায়
নিত্য তোমার তাই গান গেয়ে যাই।।

-ইকবাল করীম রিপন-

সীমাহীন আশা নিয়ে বক্ষে

সীমাহীন আশা নিয়ে বক্ষে
সুমহান জীবনের লক্ষ্যে
চলতে হবে, চলতে হবে, চলতে হবে
জীবনের কথা আজ বলতে হবে।।

উন্নত জীবনের নিতে সন্ধান
বাঁচার মন্ত্র হবে কন্ঠের গান,
ভাগ্যের চাবী কিনে শ্রমের দামে
সুখের দুয়ারটা খুলতে হ'বে।।

সংগ্রামী চেতনায় শিক্ষা নিয়ে
নির্ভিক দেশ প্রেমে দীক্ষা নিয়ে-
অতন্দ্র প্রহরীর প্রেক্ষাপটে-
সূর্যশিখা হয়ে জ্বলতে হবে।।

-আব্দুল হাই আল হাদী-

সেই দুর্বা ছাওয়া আঙ্গিনাতে

সেই দুর্বা ছাওয়া আঙ্গিনাতে
ছোট্ট মাটির ঘর-
আঁচল ঝরা- পান্না হিরাসোহাগ ও আদর
হাত ছানিতে ডাকে
আমার- মনটা ঘিরে রাখে।।

শাপলা পুকুর মিষ্টি দুপুর
জোনাক জ্বলা রাত-
এখনো তো ডাকে আমায়
বাড়িয়ে দুটি হাত,
কি করে দেব ফাঁকি
আমার হৃদয়টাকে।।

মেঘলা দিনের সবুজ তৃণের
ডগায় শিশির ফুল-
এখনো তো ভাসে চোখে
করে যে আকুল,
স্মৃতিরা বাজায় বাঁশি
মন যমুনার বাঁকে।।

-আব্দুল হাই আল হাদী-

হয়ে খোদার প্রতিনিধি

হয়ে খোদার প্রতিনিধি
হলেন মোহাম্মদ
দীপ্ত আলোর ঝলক তিনি
নিখিল প্রেমাস্পদ।।

বিশ্ব যখন পংকিলতায়
ছিল নিমজ্জিত
মজলুমেরই আর্তনাদে
ছিল প্রকম্পিত,
কোরান হাতে এলেন তিনি
দেখাতে সুপথ।।

নূরের নবী এই ধরণীর
অতুল সম্পদ
মকলুকাতের সেরা যিনি
তিনিই মোহাম্মদ
তারই জন্যে সৃষ্টি হলো
জাহানে তাবত।।

-আব্দুল হাই আল হাদী-

দ্বীনের নবীর ভালবাসা

দ্বিনের নবীর ভালবাসা
পেতে যদি চাও
মনে প্রানে শরিয়তের
পথিক হয়ে যাও।।

শরিয়ত ভাই গাছের গোড়া
আগা মিছা গোড়া ছাড়া,
সিরাতুল মুস্তাকিম ধরো
ত্বরিক জেনে নাও।।

রাসুল- পন্থী না হলে ভাই
নাজাত পাওয়ার আশাতো নাই,
হাদিস কোরান মেনে চলো
হালাল রুজি খাও।।

-আব্দুল হাই আল হাদী-

সব মানুষের সেরা মানুষ

সব মানুষের সেরা মানুষ
নবীজ্বী আমার,
নূরের বাতি দাও জ্বেলে দাও
হৃদয়ে আমার।।

তোমার দয়ার কাঙ্গাল আমি
কাঁদি সারা দিবস যামী
দূর করো, দূর করো মনের
নিকষ আঁধার।।

খোদার হাবীব তুমি জানি
চাই তোমারই মেহের বানী,
রোজ হাশরে শাফায়াতের
খুলিও দুয়ার।।

-আব্দুল হাই আল হাদী-

তুমি আছো হৃদয়ের গভীরে

তুমি আছো হৃদয়ের গভীরে
ভুলবো তোমার বলো কি করে।।
দেখি নাই তোমারে কোন দিন
তবু আছ স্মরনে অমলিন
প্রেমের ভূবনে
তোমারি বিরহ ব্যথায়
নিশিথের শেফালীরা ঝরে।।

তোমায় ভুলে যদি যাইগো কভু
সে হবে আমারি পরাজয়
আমার সকল আশার আলো
অবেলায় হারিয়ে যাবে হায়।।

তোমারে যতবার খুঁজেছি
কোরানের পথ তত বুঝেছি
নিজেকে চিনেছি
হে রাসুল নবীজি তোমার
পাঠানো ঠিকানা পড়ে।।

-তারেক মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন-

খোদা তোমার নামেরই গান গাই দিবা- যামি

খোদা তোমারই নামেরই গান গাই দিবা- যামি
মনের কালি দূর করে দাও হে অন্তরযামী।।

তোমার রাহে কর রাহী
শুধুই তোমার আলো চাহি
হৃদয় জুড়ে তোমার সাহস
চাই প্রভু আমি।।

তোমার প্রিয় জনের ঈমান আমায় দাও
দ্বীনে হকের দীপ্ত দিশা নিশান আমায় দাও।।

তোমার রঙ্গে করে রঙ্গিন
দুহাতে দাও ন্যায়ের সঙ্গীন
স্বপ্ন সফল দাওগ প্রভু
দাও বিজয় দামী।।

-হাসান আখতার-

তোরা যারে মরণ বলিস

তোরা যারে মরণ বলিস
মরণ সেতো নয়
ঐ মরণে সাঁঝের বেলায়
আরেক সূর্যদয়।।

সেই সূর্যের রশ্মির ছটায়
গাফেল দিলের চোখ খুলে যায়
কবর হাশর সকল খানে
আলোয় আলোকময়।।

এই জীবন শেষ হলে যে আরেক জীবন শুরু
মরুদ্যানের পাবে দেখা পার হলে এ মরু।

মরণ দুয়ার খুলবে যখন
আরেক জগত দেখবে তখন
সেই জগতে যেতে করো
পূণ্যের সঞ্চয়।।

-ডাঃ মোর্শেদ আলী-

আবার আসবো ফিরে

আবার আসবো ফিরে
তোমার ঐ শান্তি নীড়ে
সারাটা হৃদয় জুড়ে
বাজিয়ে তোমার বীণ
ও আমার ফিলিস্তিন।।

আমি তো আসতে চাই
তোমাকে দেখতে চাই
স্বাধীন এক আকাশ তলে
বাজিয়ে তোমার বীণ।।

হৃদয়ে দিল ব্যথা
ভাইদের ঐক্য হীনতা
উম্মতে মুসলিমার
একী আচরণ!

আবারো আসবো ফিরে
যখন তোমাকে ঘিরে
বিশ্বের যত মুসলিম
জাগবে ফিরবে সুদিন।।

-আব্দুল মান্নান তালিব-

ওগো প্রভু রহমান

ওগো প্রভু রহমান
এ সবই তোমার দান
আমার স্বপ্নগুলো আবাদ করার
সুন্দর এ জাহান।।

নাও না আমার কাজগুলোকে
কবুল করে একে একে
তুমি ছাড়া নাই যে কেহ
এত মেহেরবান।।

তোমার দেয়া এই নেয়ামত
করতে পারি যেন হেফাযত
তুমি প্রভু মুক্তি দিও
আর তো কিছু চাইনা।।

-নুসরাত নুর উন নাহার সাবিনা-

গল্প বলি শোন

গল্প বলি শোন
প্রিয় নবীর
শ্রেষ্ঠ মানুষ যিনি
এই ধরণীর।।

ছোটদের দেখে তিনি
মিষ্টি হেসে
সালাম দিতেন আগে
ভালবেসে।।

চোখ দুটি ছিল তার শান্তির নীড়
পরম ঠিকানা যেন গরীব দুখীর।।

যাদের ছিলনা কোন
সহায় স্বজন
তাদের ছিলেন তিনি
বড়ই আপন

হৃদয় ছিল যে তাঁর অতল গভীর
পরের ব্যথাতে সদায় অধীর।।

-নুসরাত নুর উন নাহার সাবিনা-

বলতে শুনি নাম মুখে মুখে

বলতে শুনি নাম মুখে মুখে
যে নাম খোদার আরশ পাকে
সেই নবীজির নাম লক্ষ্য কোটি বুকে বুকে।।

যে নাম জ্বলে স্মৃতির পাতায়
যে নাম দোলে রক্ত কণায়
সেই নামের ওছিলায়
আমরা এলাম ধরার বুকে।।

যে নাম জপে পাপীর হৃদয়
হয়েছে পূণ্যময়
যে নাম জানায় আমার প্রভুর
ভুলে যাওয়া পরিচয়

যে নাম ভাঙ্গে ভোগের দেয়াল
যে নাম জ্বালে ত্যাগের মশাল
সেই ত্যাগের সুষমায়
গড়বো মোদের জীবনটাকে।।

- তোফাজ্জল হোসাইন খান-

তলা আল বাদরু আলাইনা

তলা আল বাদরু আলাইনা
মিনছানিইয়া তিল বিদায়ী
অজাবাস শুক্রু আলাইনা
মাদাআ লিল্লাহিদা।।

রাতের আঁধার কেটে কেটে
আকাশে চাঁদ উঠলো ঐ
সারা জাহানের দিগবিদিকে
আলোর ধারা ছুটলো ঐ।।

পাহাড় ঝর্ণা নদী সাগর সেই আলোতে হাসছে ঐ
সেই আলোতে নিখিল ভূবন আকুল হয়ে ভাসছে।।

মানবতার বন্ধু তিনি
রহমাতুল্লিল আলামীন
তাইতো শুকুর আদায় করে
কুল মাখলুকাত নিশিদিন।।

-মতিউর রহমান মল্লিক-

আজকে আমার প্রান সাগরে

আজকে আমার প্রান সাগরে
আল্লাহ নামের নূর
উথাল পাথাল ঢেউ তুলেছে
যেন পাহাড় তুর।।

আজকে আমার লাগছে ভীষন ভালো
নয়ন ভরে অশ্রু দিলো মনের সকল কালো
মরণ মাঝে জনম নেবার
একোন নিবিড় সুর।।

হারিয়ে যাবার ডাক শুনেছি উদাস বাউল মাঠে
ওরে বেহুঁশ ওরে বেভোল আয়রে তরা ঘাটে।

ওকোন ছবি আঁকা আকাশ নীলে
মন মানে না যায় উড়ে সে শাপলা শালুর ঝিলে
আপনাতে ভাই আপনি পাগল
আমার অচিন পুর।।

-মতিউর রহমান মল্লিক-

শ্রমিক মজুর মুটে মাঝি

শ্রমিক মজুর মুটে মাঝি
রিক্সাওয়ালা ভাই
বাঁচার কথা বলি শোন মন দিয়া সবাইরে।।

যার হুকুমে চন্দ্র ওঠে সূর্য অস্ত যায়
সারা দুনিয়া চলছে যার ইশারায়
যিনি সবার পালনেওয়ালা
মহান তিনি আল্লাহ তায়ালা
তারই দেয়া বিধান ছাড়া বাঁচার
উপায় নাইরে।।

শ্রমিকেরই গায়ের ঘাম
না শুকাতেই ভাই
দিতে হবে শ্রমেরই দাম
ইসলাম বলে তাই

ভাত কাপড়ে চিকিৎসা বিধান
শিক্ষা দীক্ষা বাসস্থান
সব সমস্যার সমাধান দেয় যে ইসলাম রে।।

-আবুল কাশেম-

বীর মুসলমান ধরো আল কোরান

বীর মুসলমান ধরো আল কোরান
ফিরায়ে আনো সেই হারানো সন্মান।।

নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার
তোল তাকবীর ধ্বনি ধরায় আরেকবার।।

যেই আওয়াজ শুনে ওরে মুসলমান
ভয়ে কাঁপিত কাফের ও বেঈমান
দাওরে সেই হুংকার করো তোলপাড়
পাপ দুনিয়া ভেঙ্গে করোরে চুরমার।।

যেই ঈমান বলে হয়ে বলীয়ান
শাসন করেছিলি দুনিয়া জাহান
সত্যের সেই তলোয়ার নাওরে তুলে আবার
পাপ দুনিয়া ভেঙ্গে করোরে চুরমার।।

-আবুল কাশেম-

Wednesday 2 March 2011

জেহাদের ঐ ডাক এসেছে

জেহাদের ঐ ডাক এসেছে জাগরে মুসলমান
আল কোরানের শমশীর হাতে হওরে আগোয়ান
লয়ে আল্লাহর নাম।।

ধরাতল জুড়ে আজ মানবতা বন্দি
সেরা জীব মানুষের কত যে অশান্তি
পথে কত পড়ে আছে দুখি অসহায়
মানব সমাজে নাকি ওরা কেউ নয়
হায় একি শংসয়!

উদর তৃপ্ত যার সেতো করে অভিমান
বুভুক্ষ মানুষ যে অনশনে মুহ্যমান
বাতিলের সয়লাবেতে আজ সারা জাহান
হারিয়েছে মানবতা হয়েছে পাষান
জাগো ওরে মুসলমান।।

মানব কূলে শোর পড়েছে অশান্তির এই
দুনিয়ায়
দুঃখ ব্যথার মুলক
কোথায় শান্তির দরীয়া?
ইসলাম ছাড়া শান্তির পথ আরতো কিছু নাই
কায়েম কর ইসলামী রাজ তবে অশান্তি যাবে ভাই।।

-আবুল কাশেম-

ভাইরে সুখ পাবেনা দুখ যাবে না

ভাইরে সুখ পাবে না দুখ যাবে না
কোন কালে
আল কোরানের রাষ্ট্র সমাজ
কায়েম না হলে
(ভাইরে) খোদার দেয়া জীবন বিধান
কায়েম না হলে।।

ওরে সৃষ্টি সবই স্রষ্টারই আইন
পালন করে তাই ( দেখরে সবাই)
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে
ছায়া পথে কক্ষ পথে
নাই গোলযোগ নাই
সেরা জীব আমরা মানুষ
তবু কেন হয় না রে হুঁশ
বিশৃংখলা শুধু মনগড়া ঐ মতবাদে।।

সারা দুনিয়া যাহার
হুকুমাত চলবে তাহার
খোদারই বিধান ছাড়া শান্তি পাবে না
খোদারই বিধান ছাড়া মুক্তি পাবে না
(হায় রে) বাতিল রাজ্যের শাসন এখন
চলছে দুনিয়ায় ( দেখরে সবাই)
জালিমের অত্যাচারে
অসহায় হাহাকারে
বাঁচার নাই উপায়
সেরা জীব আমরা মানুষ
তবু কেন হয় না রে হুঁশ
বিশৃংখলা শুধু মনগড়া ওই মতবাদে।।

- আবুল কাশেম-

ওগো রাসুল প্রিয় রাসুল প্রানের রাসুল

ওগো রাসুল প্রিয় রাসুল প্রানের রাসুল
তোমার জন্যে এ বিশ্বে মোরা
আলো পেয়েছি, পেয়েছি কুল।।

তোমারই জন্যে এ বিশ্ব থেকে দূর হলো যত পাপ অনাচার
তোমারই জন্যে হেদায়েত পেল যত ভ্রষ্ট পাপী দুরাচার,
তোমার সাথে যাদের ছিল আড়ি
একদিন তাদেরও ভেঙ্গে ছিল ভুল।।

তোমারই সে পথে চলতে গিয়ে দেখি সামনে বাধার পাহাড়,
বাধার পাহাড় দলে সঠিক পথে চলে তবু পার হই পারাবার,
তোমারই সে পথে থাকবোনা অটুট
না না নড়বোনা নড়বো না এক চুল।।

- আবুল হোসাইন মাহমুদ-

আল্লার সেনা কুল মুসলিম

আল্লার সেনা কুল মুসলিম
উন্নত শির জিন্দাবাদ
নিখিল জাহানে এনেছো সাম্য
দুর্জয় বীর জিন্দাবাদ।।

তোমাদের মাঝে জনম লভেছে
আলী হায়দার হামজা বীর
শঙ্কা বিহীন চির দুর্বার
বিস্ময় এই ধরিত্রীর
ঐক্য ঈমানে তোমরা গড়েছো
সারা দুনিয়ায় ইত্তেহাদ।।

সব মানুষের সম অধিকার
বাঁধার প্রাচির ধুলিস্মাৎ
মহা মানবতা চলেছো গড়িয়া
মহামিলনের এক জামাত।।

দিক দিগন্তে তাকবীর ধ্বনি
তুলিয়া আল্লাহু আকবর
দুস্তর মরু দুর্গম গিরি
তোমরা হয়েছো হেলায় পার
মুক্তি সনদ এনেছো বিশ্বে
সবকে করেছো চির আজাদ।

-সাবির আহমেদ চৌধুরী-

মুয়াজ্জীনের কন্ঠে ভেসে

মোয়াজ্জিনের কন্ঠে ভেসে
উঠছে ধ্বনি আজানের
মুসল্লী ভাই নামাজে যাও
সময় এখন নামাজের।।

নামাজেতে দাঁড়াবে যে আগে
পুন্য বেশী পায় সে ভাগে
সবার লাগি নামাজ ফরজ
নির্দেশ এযে কোরানের।।

নামাজকেই জেনো সবাই
বেহেস্তের সেই কুঞ্জী
নামাজ পড়ে জোগার করো
পরকালের পুঞ্জী।।

বান্দা যখন সেজদা করে
ক্ষমা চায় তার পাপের তবে
আল্লা তখন আরশ থেকে
ঢালেন বারি রহমের।।

-সাবির আহমেদ চোউধুরী-

খোদার রাসুল বলে গেছেন

খোদার রাসুল বলে গেছেন
সকল কথার সার
ধরার মানুষ সকলে মিলিয়া
এক মহা পরিবার।।

এই নিখিলের সবই আল্লার
একই দুয়ার আসা ও যাওয়ার
সব সম্পদে আছে সকলের
সমভাবে অধিকার।।

আমীরের হক ফকিরের কাছে
ফকিরের হক আমীরের কাছে
দু'জনেরই সম করণীয় জেনো
একের রয়েছে অপরের কাছে।।

জাতি আর ভাষা ভুলিয়ে বর্ণ
গড়ে তুলে এক মানব ধর্ম
প্রেম প্রীতির মহা আদর্শে
মহা মানবতার।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

একটি মানুষ খুন করিলে

একটি মানুষ খুন করিলে
খুন করা হয় কুল মানব
একটি জীবন বাঁচালে হয়
রক্ষা করা জীবন সব।।

আল্লার এই মহান বাণী
আমরা কি আজ কেউ তা মানি
নেই ধরণির শান্তি কোথাও
তাইতো শুনি হত্যা রব।।

রক্ত নেশায় মত্ত সবাই
সৃষ্টি বুঝি হয় যে শেষ
নেই মানুষের চিত্তে এখন
মানবতার চিহ্ন লেশ।।

শ্রেষ্ঠ যখন মানুষ ধরায়
তার কাজে সে নজীর কোথায়
স্বার্থ নিয়ে রক্ত ঝরার
চলছে কেন এই আহব।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

মাতা ও পিতার যত্ন

মাতা ও পিতার যত্ন
চির দিন দুজনের
বড়দের করো ভক্তি শ্রদ্ধা
ভালোবাসো ছোটদের।।

সকলের প্রতি করো সুবিচার
পর হিতে দিয়ে জীবন তোমার
সান্তনা দান করিয়ো সতত
দুখীতাপী ব্যথীজনে।।

আল্লার নামে ওয়াস্তে তাঁর
করিয়ো সকল কাজ কারবার
দান খয়রাত করিয়ো গোপনে
ছায়া পাবে আরশের।।

-সাবির আহমেদ চৌধুরী-

দোষ করে কেউ ক্ষমা যদি চায়

দোষ করে কেউ ক্ষমা যদি চায়
ক্ষমা করে দিয়ো তারে
ক্ষমাশীলদের উচ্চ আসন
আল্লাহর দরবারে।।

কারো মর্যাদা নষ্ট করোনা
কারো মনে তুমি কষ্ট দিয়োনা
কারো সাথে কভু বিবাদ করোনা
দুদিনের সংসারে।।

প্রতিশোধ সদা হিংসা বাড়ায়
ত্যাগ সেবা সুখময়
নিষ্ঠার সাথে কর্ম যে করে
সেই জেনো সুখী হয়।।

করোনা কখনো সত্য গোপন
বিলাসেতে নয় জীবন যাপন
পশ্চাতে ফেলে যেয়োনা কখনো
বন্ধু ভেবেছো যারে।।

-সাবির আহমেদ চৌধুরী-

তুমি যাহা খাও তাই খেতে দিয়ো

তুমি যাহা খাও তাই খেতে দিয়ো
ভৃত্যকে তব ভাই
আল্লাহর কাছে মনিব ভৃত্যে
কারো কোন ভেদ নাই।।

সন্তান সম করিয়া আদর
তার মতামতে দিয়ো যে কদর
অসুখ বিসুখে দয়ার দৃষ্টি
রাখিয়ো সর্বদাই।।

আজ যে বাদশা কাল সে ফকির
তারপরে সব শেষ
মনে রেখো সেই ভাগ্য নিয়ন্তা
দয়াময় পরমেশ।।

তোমার নিজের পছন্দ যাহা
পছন্দ করো তার তরে তাহা
প্রেমের আলোকে করিয়ো তাহার
অন্তর রোশনাই।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

যত পারো খাটো কুলীগিরি করো

যত পারো খাটো কুলীগিরি করো
ভিক্ষা করোনা ভাই
রুজী রোজগারে ভিক্ষার চেয়ে
হীন পেশা আর নাই।।

কারো আমানত করোনা নষ্ট
মানুষের মনে দিয়োনা কষ্ট
সকলের হিতে হৃদয় তোমার
উন্মুখ হওয়া চাই।।

কাজকেই তুমি করণীয় ভেবে
যেয়ো সদা কাজ করে
খোদার রহমে জীবন তোমার
সুষমায় যাবে ভরে।।

করোনা দুরাশা হয়োনা নিরাশ
নিয়োনা ঋণের বোঝা নাগপাশে
যা আছে নিজের তাই নিয়ে থেকো
তুষ্ট সর্বদাই।।

-সাবির আহমেদ চৌধুরী-

উপবাসী রেখে কোন প্রতিবেশী

উপবাসী রেখে কোন প্রতিবেশী
দিয়োনা অন্ন মুখে
দুখীর দুঃখে হয়ো দুঃখিত
সুখী হয়ো তার সুখে।।

কেউ যদি কিছু হাত পেতে চায়
দেখিয়ে সে যেন শরম না পায়
বিপদে আপদে ধৈর্য সাহস
রাখিয়ো তোমার বুকে।।

স্বজন পড়শী আর দশজন
খুশী যার ব্যবহারে
মানব প্রেমিক সেইতো মু'মুমিন
ভালবাসে খোদা তারে।।

অযথা করোনা কোন সংঘাত
দিয়োনা কাউকে পিষ্ঠে আঘাত
সত্য ন্যায়ের জেহাদে দাঁড়ায়ো
সাচ্চা ঈমানে রুখে।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

কল্প লোকের গল্প কথা

কল্প লোকের গল্প কথা
তোমরা সবাই অনেক শুনেছো
আজ শোনাবো যে কাহিনী
হয়তো বা কেউ বইতে পড়েছো।।

একটি ছেলে জন্মেছিলো
একদা দূর মরুর দেশে
পিতার দেখা পায়নি সে ভাই
এই দুনিয়ার বুকে এসে
মাকে ছেড়ে দাইয়ের কাছে
বড় হলো সেই সে ছেলে
দাদুও তাঁর বিদায় নিলো
চিরতরে তাঁকে ফেলে
সে ছেলে কে বলো দেখি
তোমরা কি কেউ একটু ভেবেছো।।

এমনি ছিল স্বভাব যে তাঁর
বলতো না সে মিথ্যে কথা
পরের দুখে কাঁদতো নিজে
দিতোনা সে কাউকে ব্যথা।।

বড় হয়ে সেই ছেলেটি
পথ হারাদের পথ দেখালো
এই দুনিয়ার মানুষকে ভাই
প্রেমের বাণী সেই শুনালো
মোহাম্মদ সে খোদার রাসুল
তোমরা এবার সবাই বুঝেছো।।

-সাবির আহমেদ চৌধুরী-

বৃদ্ধা এক চলেছে একা

বৃদ্ধা এক চলেছে একা
মরুর সে পথ ধরে
বোঝার ভারে শীর্ণ দেহ
একটু নুয়ে পড়ে।।

পথিক সে এক কাছে এসে
বোচকা নিলো পৃষ্ঠ দেশে
পৌঁছে দিবে গাঠোরী তার
দূর- দুরান্তরে।।

কেঁদে কেঁদে কয় সে বুড়ি
আপন সমাচার
মোহাম্মদ এক দেশে এলো
দুষ্ট দুরাচার
তার ভয়ে সে সকল ছেড়ে
চলছে দেশান্তরে।।

মৃদু হেসে পথিক সে কয়
যা'কে তোমার এতই ভয়
সেইতো আমি; চলো তোমায়
পৌঁছে দিব ঘরে।।

বুড়ি বলে ওরে মানিক
আয় বুকে আয় একটু খানিক
সত্যি তুই মহা মানিব
রাসুল ধরার পরে।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

রাসুল আমার ধ্যানের ছবি

রাসুল আমার ধ্যানের ছবি
আল্লাহ আমার প্রানের ধ্বনি
নামাজ আমার দেহের চেতন
রোজা আমার চোখের মনি।।

জাকাত আমার দোসর পথের
ঈমান সাথী নিত্য দিনের
হজ্জ করা যে ফরজ সেতো
সত্য বলে সদায় জানি।।

মানি আমি সব ফেরেস্তায়
কোরান কেতাব বাণী খোদার
কবর হাশর পুলসিরাত আর
আখেরাতে শেষের বিচার।।

তৌহিদেরই ঝান্ডা ধরে
রিপুর সনে জেহাদ করে
কুড়িয়ে নিতে পারি যেন
জাত ইলাহীর প্রেমের খনি।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

ফুল ফসলে আল্লা তুমি

ফুল ফসলে আল্লা তুমি
সাজায়েছো এই ধরা
সবুজ বনানী মাঠ প্রান্তর
সকলি তোমার গড়া।।

সাগর- ভূধর নদী জল ধারা
তোমার নূরের অংশ যে তারা
বর্ষা বাদল বন্যা বৃষ্টি
তুমিই দিতেছো খরা।।

প্রজাপতি পেলো তোমার দয়ায়
প্রেমময় অন্তর
ঝিণুকের মাঝে রেখেছো লুকিয়ে
মুক্তা সে সুন্দর।।

মায়ের বুকে সাগর সুধার
তোমার হাতেই ভাগ্য সবার
সুখ শান্তি সুঃখ কষ্ট
তুমিই দিতেছো জ্বরা।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

সাগর যদি কালি হয় আর

সাগর যদি কালি হয় আর
কলম হয় সব গাছপালা
তবু লেখা শেষ হবেনা
তোমার ছেফাত আল্লাতালা।।

নবী রাসুল আউলিয়ারা
ইসমে আজল পেলো যাঁরা
তোমার নূরের এশকে তাঁরা
সাজিয়ে গেলো প্রেমের ডালা।।

হৃদয় মনে হর হামেশা
আকিঁ নূরের ছবি
মহব্বতের নামের নেশায়
মন হতে চায় কবি।।

তোমার নূরে জ্বলে পাহাড়
দিব্য- দৃষ্টি খোলে মুছার
জাত ইলাহীর শহদ পিয়ে
করেন নবী- দীল উজালা।।

-সাবির আহমেদ চৌধুরী-

কোন নামেতে ডাকবো আল্লা

কোন নামেতে ডাকবো আল্লা
সব নামইতো মিষ্টি মধুর
আউয়াল- আখের- জাহের- বাতেন
মঈদ- মতিন- গনি- গফুর।।

খালেক- মালেক- জলিল - জব্বার
করিম- রহিম- সাদেক- সাত্তার
আজিজি- আলীম- হামিদ- হালিম
কাবেজ - কাদির- শহিদ- সবুর।।

ইয়া রাশিদু- ইয়া রাকিবু
জুল-জালালে ওয়াল আকরাম,
ইয়া সামিও- ইয়া বাছিরু
ইয়া আদিলি- ইয়া হাকাম।।

ওহাব- ওদুদ- রউফ- রহমান
আহাদ- ওয়ালি- সালাম- সুলতান
খবির- মুমেন- হক- রাজ্জাক
মবিন- মজিদ- সামাদ- শুকুর।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

সব প্রশংসা তোমার আল্লা

সব প্রশংসা তোমার আল্লা
প্রভু তুমি নিখিলের
তুমি রহমান, তুমি যে রহিম
কাজী রোজ হাশরের।।

তোমার দয়ায় এই জিন্দেগী
তব এবাদত করি বন্দেগী
চাইনা কখনো তব কৃপা ছাড়া
কৃপা আর অন্যের।।

সহজ সরল দিয়েছো তোমার
যে পথের সন্ধান
সে পথ দেখাও আমাদের শুধু
ওগো মহা মহীয়ান।।

অবাধ্য যারা, পাপী বুজদীল
তাদের মিছিলে করোনা সামিল
এই মোনাজাত করিয়ো কবুল
হে পালক সকলের।।

- সাবির আহমেদ চৌধুরী-

একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়

একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়
যেথায় কোকিল ডাকে কুহু
দোয়েল ডাকে মুহু মুহু
নদী যেথায় ছুটে চলে আপন ঠিকানায়।।

পিদিম জ্বালা সাঁঝের বেলা
শান বাঁধানো ঘাটে
গল্পকথার পানসি ভিড়ে
রূপ কাহিনীর বাটে
মধুর মধুর মায়ের কথায়
প্রান জুড়িয়ে যায়।।

ফসল ভরা স্বপ্নেঘেরা
পথ হারানো ক্ষেতে
মৌ মৌ মৌ গন্ধে যেথায়
বাতাস থাকে মেতে
মমতারই শিশিরগুলো
জড়িয়ে থাকে পায়।।

- গাজী মাজহারুল আনোয়ার-

জেগে ওঠ মর্দে মুমিন

জেগে ওঠ মর্দে মুমিন
আল্লাহ তা'লার বীর সিপাহী
ছুটে চল সব গোলামীর
শিকল ভাঙ্গার গজল গাহী।।

শোন ঐ চারিদিকেতে মানবতার আহাজারী
বুকে তার আঘাত হেনে
নামারে ধূলায় টেনে
মুছে ফেল চিহ্ন তাদের
রে তৌহিদের ঝান্ডাবাহী।।

দুনিয়া দে ভরে আজ মানবতার জয়গানে ফের
খেলুক হাসির লহর অধরে সব মজলুমানের
জ্বেলে দে করানী নূর
হয়ে যাক গোমরাহী দূর
মিটে যাক রৌশনীতে তার
সব বাতিলের কুল সিয়াহী

- মুহাম্মদ রূহুল আমীন খান-

সত্য ন্যায়ের সেনানী আমরা

সত্য ন্যায়ের সেনানী আমরা, বাংলার বির মুসলমান
আমরা অজেয়, আমরা অমর তৌহীদ সুরা করেছি পান।


বিরাট মুলুক করেছি বিজয় মাত্র সতের ঘোড়- সওয়ার
জায়নামাজকে কিশতি বানিয়ে উত্তাল সুরমা হয়েছি পার।।
করেছে আনত দুশমন শির
তরবারি নয় শুধু তাকবির
সেই নাদে আজও জালালাবাদের
নারিঙ্গিনবনকম্পমান।।

বাগেরহাটের বাঘের রাজ্যে গড়িয়াছি নয়া সালতানাত
ষাটগম্বুজ ঘোষে অবিরাম সেই গৌরব, সেই তাকত
সেবা দয়া প্রেম স্নেহ মমতায়
সবার হৃদয় করিয়াছি জয়
ঠাকুর দিঘির ঘাটে আজও গাহে
কুমীরের দল খাঞ্জাহান।।

বালাকোটী গাজী শুয়ে আছে হেথা ইসলামাবাদে নিজামপুর
শরীয়তপুরে আজও বনে সেই জালিমের সাথে জিহাদী সুর
নিযুত অরির উদ্ধত শির
ধূলায় মিটাল যে মহান বির
হেথায় ঘুমায় সে কামিল পীর
'মুস্তান গড়ে' শা' সুলতান।।

বাঁশের কেল্লা গড়েছি আমরা ভয় করিনিক তোপ- কামান
শির দিয়েছি তবু দিইনি আমামা, প্রান দিছি তবু দিইনি মান
শত্রু মুক্ত করিতে ওয়াতন
অকাতরে খুন করিয়াছি দান
এই শির নত করিনি কোথাও
উচ্চ রেখেছি জয়- নিশান।।

- মুহাম্মদ রূহুল আমীন খান-

আমাদের সংগ্রাম চলবে

আমাদের সংগ্রাম চলবে,
সত্যের সংগ্রাম চলবে,
শান্তির সংগ্রাম চলবে,
সংগ্রাম সংগ্রাম চলবে
আমাদের সংগ্রাম চলবে।।

দুনিয়ার দিকে দিকে তৌহিদ শান্ত্রী
জাগছে আজ পুনঃ জাগছে
কান পেতে শোন রে বিপ্লবী নবী ঐ
মদীনার পানে তোরে ডাকছে
আয় সত্যের তরে আজ লড়তে
আয় জুলুমের অবসান করতে
আয় আল্লার ফৌ জরা আয়রে
দীন আজ কুরবানী চায়রে।।

নাই নাই শঙ্কা, বাজে রণ ডংকা
দুনিয়ার দিকে দিকে দিনের মশাল পুনঃ জ্বলবে।।

মুমিনের বক্ষে আল্লার শক্তি
ফেরেশতা সহকারী সৈন্য
নির্দেশ মানে তার অবনত মস্তকে
জানোয়ার হিংস্র ও বন্য
ইঙ্গিত থেমে যায় লেলিহান অগ্নি
উত্তাল বারিধির নৃত্য
সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর ফৌজের
আদেশ পালঙ্কারী ভৃত্য
বিজয়- মুঠায় তার যদি না চরণ ঐ
আল্লার দীন থেকে টলবে।

ইউরোপে, এশিয়ায়, আমেরিকা রাশিয়ায়
শান্তির তরে আজ হাহাকার
যান্ত্রিক সভ্যতা, পশুবাদী মতবাদ
কেড়ে নিছে শান্তি দুনিয়ার
সভ্যতা নামী ঐ স্টীম রোলারের
তলে পড়ে মানবতা কাতরায়
বারুদের স্তুপ আজকের বিশ্ব
চারদিকে দানবেরা গর্জায়
আর নয় হিরোশিমা- চলো আল্লার রাহে
শান্তির ফলে তবে ফলবে।।
আমাদের সংগ্রাম চলবে।।

-মুহাম্মদ রূহুল আমীন খান-

মোদের নবী বিশ্বনবী

মোদের নবী বিশ্বনবী শ্রেষ্ঠ দুনিয়ার
স্বয়ং খোদা বিশ্বপতি আশিক হল তাঁর।

তাঁর পরশে মূর্তি- পূজার আঁধার হল দূর
জ্বলল দিকে দিকে উজ্জ্বল তৌহিদেরি নূর
মিটে গেল সব নাদানী
মিটল সকল পেরেশানী
দূর হল সব বে- ইনসাফী জুলুম অবিচার।।

এল রাসুল মানবতার মুক্তি সনদ নিয়ে
গড়ল ধরায় ভ্রাতৃ সমাজ মহান তালীম দিয়ে
ছিল যারা নিপীড়িত
ছিল চরম ভাগ্যহত
পেল তারা সবার সমান বাঁচার অধিকার।।

নাইক গতি এই দুনিয়ায় তার তরীকা বিনে
নাইক নাজাত তিনি ছাড়া কঠিন হাশর দিনে
আরজু দিলের এই অভাগার
শোন হে পরোয়ারদিগার
মরন কালে পেয়ারা নবীর পাই যেন দিদার।।

-মুহাম্মদ রূহুল আমীন খান-

হে নবী মুস্তাফা

হে নবী মুস্তাফা আরব রবি
তুমি নিখিল বিশ্বের ধ্যানের ছবি।।

তুমি ঈসার মো'জেজা ত্যাগ খলীলের
তুমি আইয়ুবের ধৈর্য ও সাহস মূসার
তুমি অসীম অনন্ত গুনের আধার
তব মহিমা গাহিতে অক্ষম কবি।।

তুমি শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আল্লাহ তায়ালার
তুমি প্রতীক দান, ক্ষমা প্রেম করুণার
তুমি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ও মহান বীর
চির নির্ভীক, দুর্জয় উন্নত শির
তুমি রাহবের পন্থের সত্য সঠিক
তুমি শান্তি ও মুক্তির মূর্ত প্রতীক
তুমি সত্যের, ন্যায়ের বার্তাবাহক
তুমি সাম্যের, মৈত্রির মহাচালক
তুমি কল্যান- মঙ্গল পথ- দিশারী
তুমি ইনসাফ, হকের ঝান্ডাধারী
তুমি কান্ডারী মজলুম, আর্তগণের
চির লাঞ্চিত, বঞ্চিত, দুস্থ জনের
তুমি সভ্যতা- জ্ঞানের দীপ্ত রবি।।

তুমি ওয়াসয়ায়ে হাসানা মানব কুলের
তুমি সরদার বিশ্বের রাসুলগণের
তুমি পিয়ারা হাবীব আল্লাহ'তালার
তুমি মহান অতিথি আরশে আলার
তুমি ভান্ডারী বিশ্বের কুল জ্ঞানের
তুমি কান্ডারী কঠিন রোজ হাশরের
তুমি দানিবে মাহশারে কাওসার জাম
জপে হুরী মালায়িক তোমার নাম
রূহুল তোমার কিছু চায় নাক আর
চায় শুধু ঠাঁই পাক কদমে তোমার
কর মঞ্জুর এ মিনতি, বিশ্ব- নবী।।

- মুহাম্মদ রূহুল আমীন খান-

শামসুদ্দোহা আসসালাম

শামসুদ্দোহা আসসালাম, বদরুদ্দোজা আসসালাম
নুরুল হুদা আসসালাম, আসসালাম।।

তোমার দরুদ পড়ে আল্লা'তালা
ফেরেশতাকুল গাহে সাল্লে আলা
নিখিল সৃষ্টি তব পাক কদমে
ভেজে দরূদ সালাম।।

সৃষ্টির মাঝে তুমি চির সুন্দর
বদন চন্দ্র হতে উজ্জ্বলতর
মিশক আম্বর হতে সুবাস অধিক
তব তনুর ঘাম।।

আরশে আলায় গেলে মিরাজ রাতে
মধুর মিলন হল খোদার সাথে
লভিয়া তোমার পূত চরণ ধূলি
ধন্য আরশ মকাম।।

খন্ডিত হল চাঁদ ইঙ্গিতে কর
হুকুমে কালেমা পড়ে মুর্দা পাথর
নবীরা নাজাত পেল ঘোর বিপদে
লয়ে তোমার নাম।।

সব নবী রাসূলের তুমি সরদার
সৃষ্টির মাঝে নাই মিছাল তোমার
খোদার পরেই ওগো হাবীব খোদার
তোমার উচ্চ মকাম।।

নাশি ঘোর কুফরির তিমির আঁধার
পৌঁছিলে দিকে দিকে নাম আল্লার
মত্ত করিলে সবে ইশকে খোদায়
দানি তৌহিদ জাম।।

পয়গাম শুনাইলে চির শান্তির
দিলে গোমরাহে দিশা মহামুক্তির
পেল আজাদীর স্বাদ নতুন করে
বিশ্ব- বন্দী তামাম।।

ভীষন বিপদকালে রোজে মাহশার
অগো নবী তুমি ছাড়া নাই শাফী আর
তুমিই পিলাবে সাকী সেই তিয়াসায়
পূত কাওসার জাম।।

লওগো ডাকিয়া লও পাক মদীনায়
দাও ওগো ঠাঁই তব মুবারক পায়
পারে না বিচ্ছেদ ব্যথা সহিতে আর
প্রিয়- তব গোলাম।।

- মুহাম্মদ রুহুল আমীন খান-

ভুবন ভেদিয়া গগন ছেদিয়া

ভুবন ভেদিয়া গগন ছেদিয়া
হৃদয়ের হাহাকার
আজি বার বার চাহে পৌঁছিবার
দরবারে বিধাতার।।

ওগো মেঘমালা সরিয়া দাঁড়াও
আরশে আলার পথ ছেড়ে দাও
পৌছিতে দাও হুজুরে খোদার
ফরিয়াদ বেদনার ।।

শোন শোন ওগো প্রাতঃ সমীরণ
পৌঁছাও গিয়া এই নিবেদন
আয় খোদ আজি পালটিয়ে দাও
গতি যুগ জমানার।।

জরজর তনু আঘাতে আঘাতে
শক্তি নাহিক হায়
ভাঙ্গা দিল আজি দরবারে তব
ব্যথার এলাজ চায়
সারা দুনিয়ায় খেয়ে খেয়ে মার
সব দ্বার হতে পেয়ে ধিক্কার
অবশেষে তব পাক দরবারে
আসিয়াছি পরোয়ার
যদিও ভুলেছি মোদেরে তবুও
ভুলিও না গাফফার।।

যদিও গুনাহে জিল্লত মাঝে
ডুবে আছি দিন রাত
তবু যে আমরা তব প্রিয়তম
নবীজীর উম্মত
যদি নাহি রাখ মান আমাদের
গাহিবে বুতেরা, বলিবে কাফের
নাই- নাই খোদা মুসলিমদের
ফরিয়াদ শুনিবার।।

- মুহাম্মদ রুহুল আমীন খান-

কুল - জাহানের পালনেওয়ালা

কুল- জাহানের পালনেওয়ালা রাব্বুল আলামীন
খালেক তুমি, মালেক তুমি রহমান ও রাহীম।

অসীম তুমি হে নিরাকার
নাইক কোন শরীক তোমার
বিচারপতি তুমি মাওলা
রোজ হাশরের দিন।।

পয়দা তোমার তামাম জাহান
তোমার সৃষ্টি জ্বীন ও ইনসান
তোমারই গড়া সাগর পাহাড়
আসমান ও জমিন।।

অজড়, অমর চির অব্যয়
চির অটল, অচল চিন্ময়
মহান দাতা, বিধান- দাতা
আদি অন্তহীন।।

কর তুমি যখন যা চাও
যাকে যা খুশী তাকে তা' দাও
সকল তোমার হাতের মুঠায়
শক্তি সীমাহীন।।

-মুহাম্মদ রুহুল আমীন খান-

শক্তি দাও খোদা শক্তি দাও

শক্তি দাও খোদা শক্তি দাও
দাও ঈমানী শক্তি দাও।।

দাও ফারুকের আলা হিম্মত
দাও খালিদের বাজুর তাকত
শেরে খোদার
জ্ঞান ভান্ডার
সিদ্দিকী প্রেম ভক্তি দাও।।

দূর করে দাও সব ভীতি ভয়
করো নির্ভীক চির- দুর্জয়
এ হৃদয় মন
করো
রৌশন
ফারানের নূর জ্বালাও জ্বালাও।।

মিটাও ধরার সব হাহাকার
খোদায়ী মিটাও বাতিল খোদার
সব গোলামীর
ভেঙ্গে জিঞ্জির
কেবল তোমার গোলাম বানাও।।

বিজয় নিশান তোমার দীনের
সারা দুনিয়ার দিকে দিকে ফের
দাও উড়াবার
দাও গো আবার
কুল জাহানে খিলাফত দাও।।

- মুহাম্মদ রুহুল আমীন খান-

রোজা রাখা নয় রে সোজা

রোজা রাখা নয় রে সোজা
শোন রে ও ভাই শোন,
যেন তোর সাথে রয় উপোস করে
তোর দেহ ও মন।।

রয় মনে যার ভোগ- বাসনা
সংযত না হয় রসনা
আল্লাহ তাহার রোজা কবুল
করবেন না কখন।।

সংযমের সাধনা করা
রোজার আর এক নাম
আল্লাহ তালার কাছে রোজা
এই তো এত দাম।।

আপনাকে কর তেমনি খাঁটি
যেমন নরম কাদা মাটি
লোভ- লালসা হিংসা বিদ্বেষ
দিয়ে বিসর্জন।।

- আব্দুল লতিফ-

নবী মোর শ্রেষ্ঠ নবী ধ্যানের ছবি কামলীওয়ালা

নবী মোর শ্রেষ্ঠ নবী ধ্যানের ছবি কামলীওয়ালা
নবী মোর শ্রেষ্ঠ নবী প্রেমের ছবি সবার আ'লা।।

যা নবী পারতেন হতে রাজার রাজা
রাজা না হয়ে হলেন প্রজা
নবী মোর মেষের রাখাল সকাল বিকাল
বকরী চরাণেওয়ালা।।

নবী মোর পথে চলেন ঘেমে নেয়ে,
শিরে মেঘ ধরে ছায়া সাথে সাথে চলে ধেয়ে
নবী মোর শ্রেষ্ঠ নবী- নূরের রবি
মরুর বুকে গুলে লালা।।

নবী মোর মিসকীন ও ইয়াতীমের পিতা,
নবী মোর অসহায়ের বন্ধু ও মিতা,
নবী মোর শ্রেষ্ঠো নবী, দয়ার ছবি
সবার প্রানে জুড়ায় জ্বালা।।

হিরা গুহায় শুনতে পেলেন হে মোহাম্মদ
পড়ো তুমি খোদার নামে হে মোহাম্মদ
এই নবী সেই সে নবী প্রেমের শশী
মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ।।

কি বলিব খুবী তাঁহার, দুনিয়া জাহানে,
মি'রাজে হয় খোদার দীদার- সপ্ত আসমানে,
এই মোদের সেই সে নবী- নূরের খুবী
যাঁর নামে জাহান উজালা।।

- আব্দুল লতিফ-

দুনিয়ার সমস্ত সুধা

দুনিয়ার সমস্ত সুধা
একটি নামে ঢালা
ও নামেতে জুড়ায় ভাই রে
সকল দুঃখ জ্বালা।।

আকটি নামে আত্নহারা
'শরাবান তাহুরা' ধরা
ভক্ত যাঁকে আদর করে
ডাকে কামলীওয়ালা।।

ফুলের শ্রেষ্ঠ গোলাপ যেমন
নবীর শ্রেষ্ঠ নবী তেমন
পীর পয়গম্বর গলায় পরে
ওই নামেরই মালা।।

একটি নামে ক্লান্তি হরে
আকটি নামে হৃদয় ভরে
তামাম জাহান দরুদ পড়ে
ইয়া মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ।।

-আব্দুল লতিফ-

তিনি এলেন আঁধার ধরায়

তিনি এলেন আঁধার ধরায়
উঠলো আলো ফুটি রে।
তাঁরই ছোঁয়ায় ঘুমন্তদের
ঘুম গিয়েছে টুটি রে।।

তিনি এলেন ধরার বুকে
ফুটলো হাসি চাঁদের মুখে
বিশ্বজগৎ তাঁর কদমে
পড়লো এসে লুটিরে।।

বিশ্বলাগি বক্ষে বয়ে
তৌহিদেরই কালাম লয়ে,
এলেন তিনি বন্দী যতো
পেলো সবাই ছুটি রে।।

আমার নবীর মুখের কালাম,
শুনে জগৎ জানায় সালাম,
তারি শানে আমরা যে ভাই
দরুদ গেয়ে উঠি রে।।

- আবদুল লতিফ-

আমার নবীর সমতুল্য নাই রে দুনিয়ায়

আমার নবীর সমতুল্য নাই রে দুনিয়ায়
উম্মী হয়েও দুনিয়াকে
ইলেম সে শেখায়।।

মোর নবীজী খোদার বাণী
দুনিয়াকে শোনালেন আনি
সে বাণী থেকে অজ্ঞানেরা
জ্ঞানের আলো পায়।।

নবীজী মোর দেখায়েছেন
সহজ সরল পথ,
মোর নবীজী শিখায়েছেন
হাজার হিকমত।

আল্লাহ তা'আলার পুণ্য কুরআন
শিখালো সব জ্ঞান ও বিজ্ঞান
ধরার মানুষ যা পেয়েছে
নবীর ওসিলায়।।

-আব্দুল লতিফ-

যে জন সদা ডুবে থাকে

যে জন সদা ডুবে থাকে
আল্লাহ নামের গানে
শান্তি সুখের জোয়ার তাহার
যায় যে বয়ে প্রানে।।

থাক না তাহার দুঃখ শত
সেই ভারে সে হয় না নত
আল্লাহ যে তার দুখের বোঝা
হালকা করে আনে।।

সে তো আরিফ আল্লাহকে যে
সদাই করে ধ্যান,
সেই তো আবিদ আপনাকে যে
করে তুচ্চ জ্ঞান।।

আল্লাহ নামে যেই দিওয়ানা
আল্লাহ নামে হয় যে ফানা
আল্লাহ তাহার সয় যে সহায়
বিষম ঝড় তুফানে।।

- আব্দুল লতিফ-

বান্দা ভরসা কর কার

বান্দা, ভরসা কর কার
আল্লাহ বিনে নাই রে মাবুদ
নাই রে মদদগার।।

এমন দাতা আল্লাহ আমার
দয়ার সীমা নাই রে তাঁহার
ইচ্ছামতো বান্দারে দেন
যখন যা দরকার।।

দুঃখ ব্যথা কইতে হ'লে
তাঁরই কাছে কবি,
সুখ দিলে সুখ, দুখ দিলে দুখ
হাসি মুখেই সবি।।

ভবে যা তোর চাওয়ার আছে
চাইবি খোদ মালিকের কাছে
যাঁহার হাতে দীন দুনিয়ার
সব মালের ভান্ডার।।

- আব্দুল লতিফ-

তুমি সব ক্ষমতার অধিকারী সর্ব শক্তিমান

তুমি সব ক্ষমতার অধিকারী সর্ব শক্তিমান
যমীন আসমান সৃষ্টিকারী হে আল্লাহ মহান।।

তুমি যাকে খুশী রাজ্য দিয়ে
নিতে পারো ফের ফিরিয়ে
যাকে খুশী করতে পারো
আবার রাজ্য দান।।

তুমি কাউকে কর মর্যাদা দান
নাও কেড়ে ফের সে মহাদান
যাকে খুশী দাও ফিরিয়ে
আবার সে সন্মান।।

তুমি দিনকে প্রভু রাত্রি কর
রাতকে দিনের আলোয় ভর
পাইনা ভাষা করি তোমার
মাহাত্নবয়ান।।

তুমি জীবন থেকে মৃতে আনো
মৃতকে ফের জীবন দানো
যাকে খুশী দাও যে খোদা
রিযিক অফুরান।।

-আবদুল লতিফ-

তামাম জাহান সৃষ্টিকারী

তামাম জাহান সৃষ্টিকারী
আয় খোদা পাক জাত
শুমার করা যায় না তোমার
রহমতের সিফাত।।

তুমি তো রহীম রহমান
তুমি যে বড় মেহেরবান
তোমার দয়া সবার পরে
বিলাও যে দিন রাত।।

সৃষ্ট জীবে দাও যে সদা
রুযী ও রোজগার,
ক্ষুদ্র কীট যে শুকনো গাছে
সেও খায় আহার।।

হে দয়াল তব গুনগান
সাধ্য নাহি করি বয়ান।
তোমার দয়ায় পাবো আমি
জানি গো নাজাত।।

-আব্দুল লতিফ-

চাও যদি কেউ খোদার রহম

চাও যদি কেউ খোদার রহম
বান্দাকে তাঁর বাসো ভালো,
মন হতে ভাই ফেল মুছে
হিংসা ও বিদ্বেষের কালো।।

হেথায় হোথায় আঁধার ঘরে
নিত্য যারা কেঁদে মরে,
পারো যদি তাদের ঘরে
একটি সুখের প্রদীপ জ্বালো।।

নিজকে নিয়ে ব্যস্ত যে জন
প্রতিবেশীর খোঁজ রাখেনা,
জেনো রে ভাই সত্য বাণী
তার কাছে খোদা থাকেনা।।

ব্যথিত জন নিত্য যেথায়
ব্যথার ভারে কেঁদে বেড়ায়।।
পাবে খোদার দীদার যদি
তাদের প্রানে সুধা ঢালো।।

-আব্দুল লতিফ-

খোদা তোমার মত নাই দরদী

খোদা তোমার মত নাই দরদী
নাইরে দয়াবান
আল্লাহ তুমি মেহেরবান।
বান্দার যখন যা প্রয়োজন
তাহাই করো দান
তুমি বড় মেহেরবান।।

ক্ষুৎ - পিপাসায় অন্ন পানি
সবায় তুমি দাও যে আনি
মাঠে মাঠে সোনার ফসল
বৃক্ষ ফলবান।
তুমি বড় মেহেরবান।।

দিনের বেলা সুর্য দিয়ে
ঘুচাও রাতের কালো
রাতের আঁধার দূর করো যে
জ্বেলে চাঁদের আলো।।

বুক ভরিয়া নেই যে নিশ্বাস
বইয়ে দাও সে মধুর বাতাস
তোমার দয়া সকল খানে
রয় যে অফুরান।
তুমি বড় মেহেরবান।।

- আব্দুল লতিফ-

কীট পতঙ্গ- পশুপাখী

কীট পতঙ্গ- পশুপাখী
সবই খোদার সৃষ্টি।
সবার পরে সমান ঝরে
তাহার কৃপা বৃষ্টি।।

যারা খোদার সৃষ্টি মানি
ভালবাসে সকল প্রানী
তাদের পরে সদাই থাকে
খোদার কৃপা দৃষ্টি।।

একটি প্রানে শান্তি দিতে
যে বাড়াবে হাত
সে জন পাবে খোদার মদদ
নবীর শাফা'আত।।

জীব দয়া যাহার আছে
সে যে প্রিয় খোদার কাছে
যে বিষের বাটি হাতে নিলে
হবে সুধা মিষ্টি।।

- আব্দুল লতিফ-

এই যে আকাশ এই যে বাতাস

এই যে আকাশ এই যে বাতাস
যমীন ভরা ধান
এই যে সাগর এই যে পাহাড়
ঝর্ণা বহমান
সবই তোমার শান হে আল্লাহ মহান।।

এই যে চন্দ্র এই যে তারা
জাগছে নভে তন্দ্রাহারা
এই যে রবি এই যে শশী
সদাই জ্বলমান
সবই তোমার শান হে আল্লাহ মহান।।

এই যে কুসুম চারিধারে
নুইয়ে পড়ে মধুর ভারে
এই যে কানন শ্যামল শোভন
বৃক্ষ ফলবান
সবই তোমার শান হে আল্লাহ মহান।।

এই যে আমার কাজল মাটি
সে যে সুখের শীতল পাটি
এই যে হাওর এই যে বাওর
ঢেউ- এর কলতান
সবই তোমার শান হে আল্লাহ মহান।।

-আবদুল লতিফ-

অনুরোধ

পুবাল হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া।
যাও রে বইয়া এই গরীবের সালামখানি লইয়া।।

কাবার জিয়ারতের আমার নাই সম্বল ভাই,
সারা জনম সাধ ছিল যে, মদিনাতে যাই ( রে ভাই)।
মিটল না সাধ, দিন গেল মোর দুনিয়ার বোঝা বইয়া।।

তোমার পানির সাথে লইয়া যাও রে আমার চোখের পানি,
লইয়া যাওরে এই নিরাশের দীর্ঘ নিশ্বাসখানি।
নবীজীর রওজায় কাঁদিও ভাই রে আমার হইয়া।।

মা ফাতেমা হযরত আলীর মাজার যেথায় আছে,
আমার সালাম দিয়া আইস তাঁদের পায়ের কাছে।
কাবায় মোজানাজাত করিও আমার কথা কইয়া।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

উম্মত আমি গুনাহগার

(সুন্ধু ভৈরবী- কার্ফা)

উম্মত আমি গুনাহগার
তবু ভয় নাহি রে আমার
আহমদ আমার নবী
যিনি খোদ হাবিব খোদার।।

যাঁহার উম্মত হতে চাহে সকল নবী,
তাহারি দামন ধরি' পুলসিরাত হব পার।।

কাঁদিবে রোজ হাশরে সবে
যবে নাফসি ইয়া নাফসি রবে,
ইয়া উম্মতী বলে একা কাঁদিবেন আমার মোখতার।।

কাঁদিবেন সাথে মা ফাতিমা ধরিয়া আরশ আল্লার
হোসায়েনের খুনের বদলায় মাফী চাই পাপী সবাকার।।

দোযখ হয়েছে হারাম যে দিন পড়েছি কালেমা,
যেদিন হয়েছি আমি কোরানের নিশান- বর্দার।।

(গুল বাগিচা)- কাজী নজরুল ইসলাম-

তোমায় যেমন করে ডেকেছিল

তোমায় যেমন করে ডেকেছিল আরব মরুভূমি;
ওগো আমার নবী প্রিয় আল আরাবী,
তেমনি করে ডাকি যদি আসবে নাকি তুমি।।

যেমন কেঁদে দজলা ফোরাত নদী
ডেকেছিল নিরবধি,
হে মোর মরুচারী নবুয়তধারী,
তেমনি করে কাঁদি যদি আসবে নাকি তুমি।।

যেমন মদিনা আর হেরা পাহাড়
জেগেছিল আশায় তোমার
হে হযরত মম, হে মোর প্রিয়তম,
তেমনি করে জাগি যদি আসবে নাকি তুমি।।

মজলুমেরা কাবা ঘরে
কেঁদেছিল যেমন করে,
হে আমিনা- লালা, হে মোর কামলীওয়ালা,
তেমনি করে চাহি যদি আসবে নাকি তুমি।।

- কাজী নজরুল ইসলাম-

চল রে কাবার জেয়ারতে

চল রে কাবার জেয়ারতে, চল নবীজীর দেশ।
দুনিয়াদারী লেবাস খুলে পর রে হাজীর বেশ।।

আওকাত তোর থাকে যদি আরাফাতের ময়দান
চল আরাফাতের ময়দান,
এক জমাত হয় যেখানে ভাই নিখিল মুসলমান-
মুসলিম গৌরব দেকঘার যদি থাকে তার খাহেশ।।

যেথায় হযরত হলেন নাজেল মা আমিনার ঘরে,
খেলেছেন যার পথে ঘাটে মক্কার শহরে-
চল মক্কার শহরে;
সেই মাঠের ধূরা মাখবি যথা নবী চরাতেন মেষ।।

করে হিযরত কায়েম হলেন মদিনায় হযরত-
-যে মদিনায় হযরত,
সেই মদিনা দেখবি রে চল
মিটবে প্রানের হসরত;
সেথা নবীজীর ঐ রওজাতে তোর
আরজী করবি পেশ।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

যে আল্লার কথা শোনে

যে আল্লার কথা শোনে
তারি কথা শোনে লোকে।
আল্লার নূর যে দেখেছে
পথ পায় লোক তার আলোকে।।

যে আপনার হাত দেয় আল্লায়
জুলফিকারের তেজ সে পায়,
যার চোখে আছে খোদার জ্যোতি
রাত্রি পোহায় তারি চোখে।।

ভোগের তৃষ্ণা মিটেছে যার
খোদার প্রেমের শিরনী পেয়ে,
যায় বাদশা নবাব গোলাম হয়ে
সেই ফকিরের কাছে যেয়ে।।

আসে সেই কওমের ইমাম সেজে
কওমকে পেয়েছে যে,
তারি কাছে খোদার দেওয়া
শান্তি আছে দুঃখে- শোকে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

কালেমা শাহাদাতে আছে

কালেমা শাহাদাতে আছে
কালেমা শাহাদাতে আছে খোদার জ্যোতি।
ঝিনুকের বুকে লুকিয়ে থাকে যেমন মোতি।।

ঐ কালেমা জপে যে ঘুমের আগে,
ঐ কালেমা জপিয়া যে প্রভাতে জাগে,
দুখের সংসার সুখময় হয় তার-
মুসিবত আসে না কো, হয় না ক্ষতি।।

হরদম জপে মনে কালেমা যে জন
খোদায়ী তত্ত্ব তার রহে না গোপন,
দীলের আয়না তার হয়ে যায় পাক সাফ
সদা আল্লাহর রাহে তার রহে মতি।।

এসমে আজম হতে কদর ইহার,
পায় ঘরে বসে খোদা আর রাসুলের দিদার,
তাহার হৃদয়াকাশে সাত বেহেশত ভাসে
তার খোদার আরশে হয় আখেরে গতি।।

- কাজী নজরুল ইসলাম-

এল শোকের মোহররম

(মর্সিয়া)
এল শোকের সেই মোহররম কারবালার স্মৃতি লয়ে।
আজি বে-তাব বিশ্বমুসলিম সেই শোকে রোয়ে রোয়ে।।

মনে পড়ে আসগরে আজ পিয়াসা দুশের বাচ্চায়
পানি চাহিয়া পেল শাহাদাত হোসেনের বক্ষে রয়ে।।

এক হাতে বিবাহের কাঙ্গন এক হাতে কাসেমের লাশ,
বেহুঁশ খিমাতে সকিনা অসহ বেদনা সয়ে।।

ঝরিছে আঁখিতে খুন হায় জয়নাল বেহুঁশ কেঁদে
মানুষ ব'লে সহে এত পাথরও যেত ক্ষয়ে।।

শূন্য পিঠে কাঁদে দুলদুল হযরত হোসেন শহীদ,
আসমানে শোকের বারেষ, মরে আজি খুন হয়ে।।

(গুল বাগিচা) - কাজী নজরুল ইসলাম-

মুসলিম আমার নাম

চীন আরব হিন্দুস্থান, নিখিল ধরাধাম
জানে আমায়, চেনে আমার, মুসলিম আমার নাম।।

অন্ধকারে আজান দিয়ে ভাংলো ঘুমঘোর,
আলোর অধিক চাঁদ এনেছি, রাত করেছি ভোর,
এক সমান করেছি ভেঙ্গে উচ্চ- নীচ তামাম।।

চেনে মোরে সাহারা গোবি দুর্গম পর্বত,
মন্থন করেছি সাগর নহর সিন্ধু হ্রদ,
বয়েছি আফ্রিকা ইউরোপে আমারই তাঞ্জাম।।

পাক মুলুকে বসিয়েছি সোনার মসজিদ,
জগৎ শত্রু পাপীদেরকে পিইয়েছি তৌহিদ;
বিরান - বনে রচেছি যে হাজার নগর গ্রাম।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

Tuesday 1 March 2011

আমরা সেই সে জাতি

ধর্মের পথে শহীদ যাহারা আমরা সেই সে জাতি।
সাম্য মৈত্রী এনেছি আমরা বিশ্বে করেছি জ্ঞাতি।
আমরা সেই সে জাতি।।

পাপবিদগ্ধ তৃষিত ধরার লাগিয়া আনিল যারা
মরুর তপ্ত বক্ষ নিঙ্গাড়ি শীতল শান্তিধারা,
উচ্চ- নীচের ভেদ ভাঙ্গি দিল সবারে বক্ষ পাতি।
আমরা সেই সে জাতি।।

কেবল মুসলমানের লাগিয়া আসেনি ক ইসলাম
সত্যে যে চায়, আল্লায় মানে, মুসলিম তারি নাম।
আমির- ফকিরে ভেদ নাই সবে সব ভাই এক সাথী
আমরা সেই সে জাতি।।

নারীরে প্রথম দিয়াছি মুক্তি নর- সম অধিকার
মানুষে গড়া প্রাচীর ভাঙ্গিয়া করিয়াছি একাকার,
আঁধার রাতের বোরখা উতারি এনেছি আশায় ভাতি।
আমরা সেই সে জাতি।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

আল্লাহ রাসুল তরু আর ফুল

আল্লা রাসুল তরু আর ফুল প্রেমিক হৃদয় জানে
কেহ বা তরু রে ভালবাসে ভাই, কেহ ফুল ধরে টানে।।

কেহ বা ফুলের মধু চায়, কেহ চায় সে গাছের ছায়া
গাছের ছায়ায় জুড়াইয়া পায় গুল সুবাসের মায়া।
তরু ছুঁইয়ে বোঝে আল্লা রাসুলে রসলীলা কোনখানে।।

কোন জন চাহে গুলের খুশবু কোন জন চাহে গুল,
খুশবুর সাথে ফুলেরেও চাহে প্রেমিক যে বুলবুল।
জালালের সাথে জামালেও চাহে, প্রেমিক যে বুলবুল।।

আল্লারে ভালবেসে যার গেছে সকল দ্বিধা ও ভয়
রাসুল তাহারে প্রেম দিয়ে কন, আল্লা যে প্রেমময়।
তিনি যে কেবল বিচারক নন, আল্লা যে প্রেমময়,
মজনুর মত দিওয়ানা সে যে লাইলার মধুপানে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

আল্লা রাসুল জপের গুণে

আল্লা রাসুল জপের গুণে কি হল দেখ চেয়ে
সদাই ঈদের দিনের খুশীতে তোর পরাণ আছে ছেয়ে।।

আল্লার রহমত ঝরে
ঘরে বাইরে তোর উপরে,
আল্লা রাসুল হয়েছেন তোর জীবন- তরীর নেয়ে।।

দুখে সুখে সমান খুশী, নাই ভাবনা ভয়,
(তুই) দুনিয়াদারী করিস, তবু আল্লাতে মন রয়।

মরণকে আর ভয় নাই তোর,
খোদার প্রেমে পরাণ বিভোর,
(এখন) তিনিই দেখেন তোর সংসার তোর ছেলেমেয়ে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

চাষীর গীত (১)

চাষ কর দেহ- জমিতে।
হবে নানা ফসল এতে।।

নামাযে জমি 'উগালে',
রোজাতে জমি 'সামালে',
কলেমায় জমিতে মই দিরে
চিন্তা কি হে এই ভবেতে।।

লা- ইলাহা ইল্লাল্লাতে
বীজ ফেল তুই বিধি মতে,
পাবি 'ঈমান' ফসল তাতে
আর রইবি সুখেতে।।

নয়টা নালা আছে তাহার
অজুর পানি নিয়াত যাহার,
ফল পানি নানা প্রকার
ফসল জন্মিবে তাহাতে।।

যদি ভাল হয় হে জমি
হজ্জ জাকাত লাগাও তুমি,
আরো সুখে থাকবে তুমি-
কয় নজরুল ইসলামেতে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

ফাতেমা দুলাল কাঁদে

ফোরাতের পানিতে নেমে ফাতেমা দুলাল কাঁদে
অঝোর নয়নে রে।
দু'হাতে তুলিয়া পানি ফেলিয়া দিলেন অমনি
পড়িল কি মনে রে।।

দুধের ছাওয়াল আসগর এই পানি ছাহিয়ে রে
দুষ্মনের তীর খেয়ে বুকে ঘুমাল খুন পিয়ে রে,
শাদীর নওশা কাসেম শহীদ এই পানি বহনে রে।।

এই পানিতে মুছিল রে হাতের মেহেদী সকীনার,
এই পানিরই ঢেউয়ে ওঠে তারি মাতম হাহাকার,
শহীদানের খুন মিশে আছে এই পানিরই সনে রে।।

বীর আব্বাসের বাজু শহীদ হলো এরি তরে রে,
এই পানি বিহনে জয়নাল খিমায় তৃষ্ণায় মরে রে,
শোকে শহীদ হলেন হোসেন জয়ী হয়েও রণে রে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

শহীদী ইদগাহ

শহীদী ঈদগাহ দেখ আজ জমায়েত ভারি।।
হবে দুনিয়াতে আবার ইসলামী ফরমান জারি।।
তুরান ইরান হেজাজ মেসের হিন্দ মরক্কো ইরাক,
হাতে হাত মিলিয়ে আজ দাঁড়ায়েছে সারি সারি।।

ছিল বেহুঁশ যারা আঁসু ও আফসোস লঁইয়ে,
চাহে ফেরদৌস তারা জেগেছে নও জোশ ল'ইয়ে।
তুইও আয় এই জমাতে ভুলে যা দুনিয়াদারী।।

ছিল জিন্দানে যারা আজকে তারা জিন্দা হয়ে
ছোটে ময়দানে দারাজ- দিন আজি শমশের লয়ে।
তকদীর বদলেছে আজ উঠিছে তকবির তারি।।

(জুলফিকার) -কাজী নজরুল ইসলাম-

তুইও ওঠ জেগে

দিকে দিকে পুনঃ জ্বলিয়া উঠেছে দীন ই ইসলামী লাল মশাল।
ওরে বে- খবর, তুইও ওঠ জেগে তুইও তোর প্রান প্রদ্বীপ জ্বাল।।

গাজী মুস্তাফা কামালের সাথে জেগেছে তুর্কী সুর্খ- তাজ,
রেজা পহলবী সাথে জাগিয়াছে বিরান মূলুক ইরানও আজ,
গোলামী বিসরি' জেগেছে মিসরী, জগলুল সাথে প্রান- মাতাল।।

ভুলি গ্লানি' লাজ জেগেছে হেজাজ নেজদ আরবে ইবনে সউদ,
আমানুল্লার পরশে জেগেছে কাবুলে নবীন আল- মাহ্মুদ,
মরা মরক্কো বাঁচাইয়া আজ বন্দী করিম রীফ- কামাল।

জাগে ফয়স্ম ইরাক আজম, জাগে নব হারুন -অল- রশীদ,
জাগে বায়তুল মোকাদ্দস রে, জাগে শাম দেখ টুটিয়া নিঁদ,
জাগো নাকো শুধু হিন্দের দশ কোটি মুসলিম বে- খেয়াল।।

মোরা আসহাব- কাহাফের মত হাজারো বছর শুধু ঘুমাই,
আমাদের কেহ ছিল বাদশাহ কোন কালে, তারি করি বড়াই,
জাগি যদি মোরা, দুনিয়া আবার কাঁপিবে চরণে টাল- মাটাল।।

(জুলফিকার) -কাজী নজরুল ইসলাম-

কোথা সে মুসলমান

আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান, কোথা সে মুসলমান।
কোথা সে আরিফ, অভেদ যাহার জীবন- মৃত্য- জ্ঞান।।

যার মুখে শুনি তওহিদের কালাম
ভয়ে মৃত্যুও করিত সালাম;
যার দ্বীন দ্বীন রবে কাঁপিত দুনিয়া জ্বীন পরী ইনসান।।

স্ত্রী- পুত্ররে আল্লারে সঁপি জেহাদে যে নির্ভীক
সেহে কোরবানী দিত প্রান, হায়! আজ তারা মাগে বিখ।

কোথা সে শিক্ষা আল্লাহ ছাড়া
ত্রিভুবনে ভয় করিত না যারা,
আজাদ করিতে এসেছিল যারা সাথে ল'য়ে কোরান।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

বক্ষে আমার কাবার ছবি

বক্ষে আমার কাবার ছবি,
চক্ষে মোহাম্মদ রাসুল।
শিরোপরি মোর খদার আরশ
গাই তারি গান পথ বেভুল।।

পাইলির প্রেমে মজনু পাগল,
আমি পাগল 'লা- ইলা'র,
প্রেমিক দরবেশ আমায় চিনে
অ-রসিকে কয় বাতুল।।

হৃদয়ে মোর খুশীর বাগান,
বুলবুলি তায় গায় সদাই-
ওরা খোদার রহম মাগে
আমি খোদার 'ইশক' চাই।।


আমার মনের মসজিদে দেয়
আজান হাজার 'মুয়াজ্জিন',
প্রানের 'লওহে' কোরান লেখা
'রুহ' পড়ে তা রাত্রিদিন।

খাতুনি জিন্নত আমার মা,
হাসান হোসেন চোখের জল,
ভয় করিনা রোজ- কিয়ামত
পুল- সিরাতের কঠিন পুল।।

(জুলফিকার) -কাজী নজরুল ইসলাম-

জাগো মুসাফির

ভোর হল, ওঠ জাগো মুসাফির, আল্লা - রাসুল বোল
গাফলিয়াতি ভোল রে অলস, আয়েশ আরাম ভোল।।

এই দুনিয়ার সরাইখানায়
(তোর) জনম গেল ঘুমিয়ে হায়!
ওঠ রে সুখশয্যা ছেড়ে, মায়ার বাঁধন খোল।।

দিন ফুরিয়ে এল যে রে দিনে দিনে তর
দিনের কাজে অবহেলা করলি জীবনভোর।।

যে দিন আজো আছে বাকী
খোদারে তুই দিসনে ফাঁকি
আখেরে পার হবি যদি পুলসিরাতের পোল।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

আল্লাহ আমার প্রভু

ভৈরবী- কার্ফা)

আল্লাহ আমার প্রভু, আমার নাহি নাহি ভয়।
আমার নবী মোহাম্মদ, যাঁহার তারিফ জগৎময়।।

আমার কিসের শঙ্কা,
কোরান আমার ডঙ্কা
ইসলাম আমার ধর্ম, মুসলিম আমার পরিচয়।।

কালেমা আমার তাবিজ, তৌহিদ আমার মুর্শিদ,
ঈমান আমার ধর্ম, হেলাল আমার খুর্শিদ।
'আল্লাহু আকবর' ধ্বনি
আমার জেহাদ- বাণী?
আখের মোকাম ফেরদৌস খোদার আরশ যেথায় রয়।।

আরব মেসের চীন হিন্দ মুসলিম- জাহান মোর ভাই,
কেহ নয় উচ্চ কেহ নীচ, এখানে সমান সবাই।
এক দেহ এক দিল এক প্রান,
আমীর ফকির এক সমান,
এক তকবীরে উঠি জেগে, আমার হবেই হবে জয়।।

(জুলফিকার)
-কাজী নজরুল ইসলাম-

ইয়া মোহাম্মদ বেহেশতে হতে

ইয়া মোহাম্মদ বেহেশতে হতে
খোদায় পাওয়ার পথ দেখাও।
এই দুনিয়ার দুঃখ থেকে
এবার আমার নাজাত দাও।।

পীর মুর্শিদ পাইনি আমি,
তাই তোমায় ডাকি দিবস- যামী,
তোমারই নাম হউক হযরত
আমার পর-পারের নাও।।

অর্থ বিভব যশ- সম্নান
চেয়ে চেয়ে নিশিদিন
দুঃখ- শোকে জ্বলে মরি
প্রান কাঁদে শান্তিহীন।।

আল্লাহ ছাড়া ত্রিভূবনে
শান্তি পাওয়া যায় না মনে,
কোথায় পাবো সে আবে হায়াত
ইয়া নবীজী, রাহ বাতাও।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই

মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই।
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।।

আমার গোরের পাশ দিয়ে ভাই নামাজীরা যাবে,
পবিত্র সেই পায়ের ধ্বনি এ বান্দা শুনতে পাবে।
গোর - আজাব থেকে এ গুনাহগার পাইবে রেহাই।।

কত পরহেজগার খোদার ভক্ত নবীজীর উম্মত
ঐ মসজিদে করে রে ভাই, কোরান তেলাওয়াত।
সেই কোরান শুনে যেন আমি পরান জুড়াই।।

কত দরবেশ ফকির রে ভাই, মসজিদের আঙ্গিনাতে
আল্লার নাম জিকির করে লুকিয়ে গভীর রাতে,
আমি তাদের সাথে কেঁদে কেঁদে
(আল্লার নাম জপতে চাই) ।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

রাসুল নামের ফুল

রাসুল নামের ফুল এনেছি রে
আয় গা৬থবি মালা কে?
এই মালা নিয়ে রাখবি বেঁধে।।

অতি অল্প ইহার দাম
শুধু আল্লা রাসুল নাম,
এই মালা পরে দুঃখ - শোকের
ভুলবি জ্বালাকে।।

এই ফুল ফোটে ভাই দিনে রাতে
হাতের কাছে তোর, (ভাই রে ভাই)
অ তুই কাঁটা নিয়ে দিন কাটালি রে
তাই রাত হ'ল না ভোর।।

এর সুগন্ধ আর রূপ বয়ে যায়
নিত্য এসে তোর দরজায় রে
পেয়ে ভাতের থালা ভুললি রে তুই
চাঁদের থালাকে।।


-কাজী নজরুল ইসলাম-

তুমি অনেক দিলে খোদা

তুমি অনেক দিলে খোদা,
দিলে অশেষ নেয়ামত।
আমি লোভী, তাইতো আমার
মিটেনা হসরতে।।

কেবলই পাপ করি আমি,
মাফ করিতে তাই, হে স্বামী!
দয়া করে শ্রেষ্ঠ নবীর করিলে উম্মত।
তুমি নানান ছলে করছ পূরণ ক্ষতির খেসারত।।

মায়ের বুকে স্তন্য দিলে, পিতার বুকে স্নেহ,
মাঠে শস্য- ফসল দিলে, আরাম লাগি গেহ।

কোরান দিলে পথ দেখাতে,
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শেখাতে,
নামায দিয়ে দেখাইলে মসজিদেরই পথ।
তুমি কেয়ামতের শেষে দিবে বেহেশতী দৌলত।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

এল যে মোহাম্মদ

কুল মখলুকাতের জুলমত ভেদি
এল যে মোহাম্মদ
বেহেশতি রওশন ছড়ায়ে
মোস্তফা আহমদ।।

তাঁর পূন্যের জ্যোতি পড়ে যে ছড়ায়ে
গিরি দরি বন ভূবন ভরায়ে
হেসে ওঠে যত পাপী তাপী আর
সন্তাপী উম্মত।।

দরুদ সবার কন্ঠে কন্ঠে
সুধাসম পড়ে ঝরে
সাল্লাল্লাহু মোস্তফা বলে
হৃদয় যে ওঠে ভরে।।

তাঁর মধুনাম যার কানে গেল
তকবির বলে দিওয়ানা সে হল
সওয়ারের শত পাঁপড়ি যেন গো
মেলে দিল কোকনদ।।

-মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান-

মা আমেনার কোলে এলেন

মা আমেনার কোলে এলেন
মুহাম্মদ রাসুল
আরবের মরুর বুকে
ফুটলো আলোর ফুল।।

আকাশের গ্রহতারা
পুলকে আত্নহারা
বন্দিছে তাঁয় নিখিল ধরা
গাহিছে বুলবুল।।

কুল মখলুক খুশীতে আজ
পায় না রে দিশা
এসেছেন দীনের নবী
ঘুচিবে প্রানের তৃষা।।

এনেছেন সুধার ধারা
জাহানে পড়লো সাড়া
কুফর- বেদীন করবে রে তাঁর
উম্মতি কবুল।।

-বন্দে আলি মিয়া-

আমার নবীর তরীক

আমার নবীর তরীক সহজ সরল সবার চেয়ে;
তাই সে নবীর পাক পয়গাম ফেলছে জগৎ ছেয়ে।

সে পাক পথে চলবি কে ভাই,
আয় না নতুন জীবন জাগাই,
মরুর বুকে অমৃতের ঐ ঝর্ণা ধারায় নেয়ে।।

হর কদমে জীবন সেথায়
চরন তথায় সৎপথে ধায়
কন্ঠ আমার প্রান পেতে চায় ঐ পথে গান গেয়ে।।

দীনের নামে সেই যেথা ভাই,
অন্ধ- সংস্কারের বালাই
বুদ্ধি চলে সামনে সেথা প্রেমের তরী বেয়ে।।

এক সেথা ভাই দিমাগ ও দিল
কাজে কথায় নেইক অমিল
এক মাবুদের বিশ্বাসে নেয় জীবনটাকে ছেয়ে।।

-মুহাম্মদ আবুবকর-

আমরা- সকল দেশের শিশু যাব

আমরা- সকল দেশের শিশু যাব
নবীর মদিনায়!
তোরা- সঙ্গে যাবি আয়।।

আমার- নবীর মদীনাতে
খোদার রহম দিনে রাতে,
সবাই সেথা ভালবেসে
ভালবাসা পায়।।

সেথা নবীর পথে চলে সবাই
পায় যে দ্বিনের আলো,
নবীর মুহব্বতে ডুবে
সবাই বাসে ভালো।।

সেথা- রহমতে আলম
সেথা সৃষ্টি নিরুপম
সেথা ইনসানিয়াৎ পূর্ণ হলো
নবীর অছিলায়।।

-ফররুখ আহমেদ-

ফুটলো মরুর গুলে লালা

ফুটলো মরুর গুলে লালা
সাহারার গুলবাগে
সবখানে সেই মধুর আভাস
সবার প্রানে লাগে।।

দূর মদীনার খেঁজুর শাখায়
সেই হেজাজের পথের ধূলায়
হাজার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে
আজো অনুরাগে।।


সে দেশ থেকে উতল হাওয়া
আসে এ দেশ পানে
তারই নামের খোশবু এসে
সেথায় আমায় টানে।।

পাখীর মতো মন যে আমার
চায় উড়ে যায়,- সব ফেলে তার
রওজা শরীফ জেয়ারতের
সাধ হৃদয়ে জাগে।।

-আজীজুর রহমান-

আমার প্রিয় নবীজীর নাম

আমার প্রিয় নবীজীর নাম
আমার মনের শান্তি ধারা,
দুঃখ শোকের আঁধার রাতের
পথ দেখানো ভোরের তারা।।

নবির কালাম- শহদ পিয়ে
নবীর স্বপন চোখে নিয়ে
নবীর নামের মধুর নেশায়
নয়ন আমার তন্দ্রাহারা।।


ঘুমিয়ে সেথা মরুর বুকে
শাহ-ই মদিনা
সে দেশ দেখার সাধ জানিনা
পূর্ণ হবে কিনা!
দিন গুলি তাই নিরব আশায়
কাটাই আমি গভীর তৃষায়
হায় দুনিয়া হায় এলাহী
কবে আমি পাবো ছাড়া

-আজীজুর রহমান-

নূরের দরিয়ায় সিনান করিয়া

নূরের দরিয়ায় সিনান করিয়া
কে এলো মক্কায় আমিনার কোলে।
ফাগুন পূর্ণিমা- নিশীথে যেমন
আসমানের কোলে রাঙ্গা চাঁদ দোলে।।

কে এলো কে এলো গাহে কোয়েলিয়া,
পাপিয়া বুলবুল উঠিল মাতিয়া,
গ্রহ তারা ঝুঁকে করিছে কুর্নিশ,
হুরপরী হেসে পড়িছে ঢলে।।

জান্নাতের আজ খোলা দরওয়াজা পেয়ে
ফেরেশতা আম্বিয়া এসেছে ধেয়ে
তহরীমা বেঁধে ঘোরে দরুদ গেয়ে
দুনিয়া টলমল, খোদার আরশ টলে।।

এল রে চির- চাওয়া, এল আখেরী- নবী
সৈয়দে মক্কী মাদানী আল আরাবী,
নাজেল হয়ে সে যে ইয়াকুত- রাঙ্গা ঠোঁটে
শাহাদাতের বাণী আধো আধো বোলে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

দূর আরবের স্বপন দেখি

দূর আরবের স্বপন দেখি বাংলাদেশের কুটির হতে।
বেহুঁশ হ'য়ে চলেছি যেন কেঁদে কেঁদে কাবার পথে।
হায় গো খোদা, কেন মোরে
পাঠাইলে কাঙ্গাল ক'রে,
যেতে নারি প্রিয় নবীর মাজার শরিফ জিয়ারতে।।

স্বপ্নে শুনি নিতুই রাতে যেন কা'বার মিনার থেকে
কাঁদছে বেলাল ঘুমন্ত সব মুসলিমেরে ডেকে' ডেকে'।
ইয়া এলাহি! বল সে কবে
আমার স্বপন সফল হ'বে,
আমি গরীব ব'লে হব কি নিরাশ মদিনা দেখার নিয়ামতে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

পাঠাও বেহেশত হতে

পাঠাও বেহেশত হতে, পুনঃ সাম্যের বাণী,
(আর) দেখিতে পারি না মানুষে মানুষে এই হীন হানাহানি।।

বলিয়া পাঠাও, হে হযরত,
যাহারা তোমার প্রিয় উম্মত,
সকল মানুষে বাসে তারা ভালো খোদার সৃষ্টি জানি।
সবারে খোদারই সৃষ্টি জানি।।

অর্ধেক পৃথিবী আনিল ঈমান যে উদারতা- গুনে
(তোমার) যে উদারতা- গুনে,
শিখিনি আমরা সে উদারতা, কেবলি গেলাম শুনে
কোরানে হাদিসে কেবলি গেলাম শুনে।
তোমার আদেশ অমান্য ক'রে
লাঞ্চিত মোরা ত্রিভুবন ভ'রে,
আতুর মানুষে হেলা ক'রে বলি, "আমরা খোদারে মানি"।।

- কাজী নজরুল ইসলাম-

সালাম

কাবার জিয়ারতে তুমি কে যাও মদিনায়?
আমার সালাম পৌঁছে দিও নবীজীর রওজায়।।

হাজীদের ওই যাত্রা পথে
দাঁড়িয়ে আছি সকাল হ'তে,
কেঁদে বলি, কেউ যদি মোর
সালাম নিয়ে যায়।।

পঙ্গু আমি, আরব সাগর লঙ্ঘি কেমন করে,
তাই নিশিদিন কা'বা যাওয়ার পথে থাকি পড়ে।

বলি, ওরে দরিয়ার ঢেউ,
(মোর) সালাম নিয়ে গেল না কেউ,
তুই দিস মোর সালামখানি
মরুর 'লু' হাওয়ায়।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-