ইসলামী সঙ্গীত লিরিক্স

Monday 28 February 2011

সুদূর মক্কা মদিনার পথে

সুদূর মক্কা মদিনার পথে আমি রাহি মুসাফির,
বিরাজে রওজা মোবারক যথা মোর প্রিয় নবীজীর।।
বাতাসে যেখানে বাজে অবিরাম
তৌহিদ বাণী খোদার কালাম,
জিয়ারতে যথা আসে ফেরেশতা শত আউলিয়া পীর।।

মা ফাতেমা আর হাসান হোসেন খেলেছে পথে যার
কদমের ধূলি পড়েছে যেথায় হাজার আম্বিয়ার,
সুরমা করিয়া কবে সে ধূলি
মাখিব নয়নে দুই হাতে তুলি,
কবে এ দুনিয়া হ'তে যাবার আগে রে কাবাতে লুটাব শির।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

খোদার বন্ধু

সৈয়দে মক্কী মাদানী আমার নবী মোহাম্মদ।
করুনাসিন্ধু খোদার বন্ধু নিখিল মানব প্রেমাস্পদ।।

আদম নূহ ইবরাহীম দাউদ সলেমান মুসা আর ঈসা,
সাক্ষ্য দিল আমার নবীর, তা'দের কালাম হ'ল রদ।।

যাঁহার মাঝে দেখল জগৎ ইশারা খোদার নূরের,
পাপ দুনিয়ায় আনল যে রে পুণ্য বেহেশতী সনদ।।

হায় সেকান্দর খুঁজল বৃথাই আব হায়াত এই দুনিয়ায়
বিলিয়ে দিল আমার নবী সে সুধা মানব সবায়।।

হায় জুলেখা মজল বৃথাই ইউসুফের ওই রূপ দেখে,
দেখলে আমার নবীর সুরত যোগীন হত ভসম মেখে।
শুনলে নবীর শিরীন জবান, দাউদ মাগিত মদদ।।

ছিল নবীর নূর পেশানিতে তাই ডুবল না কিশতী নূহের,
পুড়ল না আগুনে হযরত ইবরাহিম সে নমরুদের,
বাঁচল ইউনুস মাছের পেটে স্মরণ ক'রে নবীর পদ;
দোযখ আমার হারাম হ'ল
পিয়ে কোরানের শিরীন শহদ।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

আমার প্রিয় হযরত

আমার প্রিয় হযরত নবী কামলিওয়ালা।।
যাঁহার রওশনীতে দ্বীন- দুনিয়া উজালা।।

যাঁরে খুঁজে ফেরে কটি গ্রহ তারা,
ঈদের চাঁদে যাঁহার নামের ইশারা,
বাগিচায় গোলাব গুল গাঁথে যাঁর মালা।।

আউলিয়া আম্বিয়া দরবেশ যাঁর নাম
খোদার নামের পরে জপে অবিরাম,
কেয়ামতে যাঁর হাতে কাওসার পিয়ালা।।

পাপে মগ্ন ধরা যাঁর ফজিলতে
ভাসিল সুমধুর তৌহিদ- স্রোতে,
মহিমা যাঁহার জানেন এক আল্লাহতায়ালা।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

বাদশার ও বাদশাহ

মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লেআলা
তুমি বাদশারও বাদশাহ কামলিওয়ালা।।

পাপে-তাপে পূর্ণ আঁধার দুনিয়া
হ'ল পূন্য বেহেশতী নূরে উজালা।।

গুনাহগার উম্মত লাগি' তব
আজো চয়ন নাহি, কাঁদিছ নিরালা।।

কিয়ামতে পিয়াসী উম্মত লাগি,
দাড়ায়ে র'বে লয়ে তহুরার পিয়ালা।।

জ্বলিবে হাশর দিনে দ্বাদশ রবি,
নফসি নফসি কবে সকল নবী
ইয়া উম্মতি ইয়া উম্মতি একেলা তুমি,
কাঁদিবে খোদার পার আর্শ চুমি'-
পাপী উম্মত ত্রান তব জপমালা।।

করে আউলিয়া আম্বিয়া তোমারি ধ্যান,
তব গুণ গাহিল খোদ আল্লাহতায়ালা।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

রাহে কাবা

ইয়া রাসুলুল্লাহ! মোরে রাহা দেখাও সেই কাবার-
যে কাবা মসজিদে গেলে পাব আল্লার দীদার।।

দ্বীন- দুনিয়া এক হয়ে যায় যে কাবার ফজিলতে,
যে কাবাতে হাজী হলে রাজী হন পরওয়ারদিগার।।

যে কাবার দুয়ারে জামে- তৌহিদ দেন হযরত আলী,
যে কাবায় কুল- মাগফেরাতে কর তুমি ইন্তেজার।।

যে কাবাতে গেলে দেখি কুর্শী লওহ কালাম,
মরণে আর ভয় থাকেনা, হাসিয়া হয় বেড়া পার।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

নিখিল প্রেমাস্পদ

আসিছেন হাবীবে খোদা, আরশ পাকে তাই উঠেছে শোর,
চাঁদ পিয়াসে ছুটে' আসে আকাশ- পানে যেমন চকোর,
কোকিল যেমন গেয়ে উঠে ফাগুম আসার আভাস পেয়ে,
তেমনি করে হরষিত ফেরেশতা সব উঠলো গেয়ে,-
দেখ আজ আরশে আসেন মোদের নবী কামলীওয়ালা
হের সেই খুশীতে চাঁদ- সুরুজ আজ হল দ্বিগুন আলা।।

ফকির দরবেশ আউলিয়া যাঁরে
ধ্যানে জ্ঞানে ধরতে নারে,
যাঁর মহিমা বুঝতে পারে
এক সে আল্লাহতালা।।

বারেক মুখে নিলে যাঁহার নাম
চিরতরে হয় দোযখ হারাম,
পাপীর তরে দস্তে যাঁহার
কাওসারের পেয়ালা।।

মিম হরফ না থাকলে যে আহাদ
নামে মাখা যার শিরীন শহদ,
নিখিল প্রেমাস্পদ আমার মোহাম্মদ
ত্রিভুবন উজালা।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

নামে মোবারক মোহাম্মদ

ইসলামের ঐ সওদা লইয়ে এল নবীন সওদাগর।
বদনসীব আয়, আয় গুনাহগার নতুন ক'রে সওদা কর।।

জীবন ভরে করলি লোকসান আজ হিসাব তার খিতিয়ে নে,
বিনি মুলে দেয় বিলিয়ে সে যে বেহেশতি নজর।।

কোরানের ঐ জাহাজ বোঝাই হীরা মুক্তা পান্নাতে,
লুটে নে রে লুটে নে সব ভরে তোল তোর শূন্য ঘর।।

কালেমার ঐ কানাকড়ির বদলে দেয় এই বনিক
শাফায়াতের সাত রাজার ধন, কে নিবি আয় ত্বরা কর।।

কিয়ামতের বাজারে ভাই মুনাফা যে চাও বহুৎ,
এই ব্যাপারীর হও খরিদ্দার লও রে ইহার সীলমোহর।।

আরশ হ'তে পথ ভুলে এ এল মদীনা শহর,
নামে মোবারক মোহাম্মদ, পূঁজি আল্লাহু আকবর।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

দীন- দরিদ্র কাঙ্গালের তরে

দীন- দরিদ্র কাঙ্গালের তরে এই দুনিয়ায় আসি'
হে হযরত, বাদশাহ হ'য়ে ছিলে তুমি উপবাসী।।

তুমি চাহ নাই কেহ হইবে আমীর, পথের ফকীর কেহ,
কেহ মাথা গুঁজিবার পাইবে না ঠাঁই, কাহারো সোনার গেহ,
ক্ষুধার অন্ন পাইবে না কেহ, কারো শত দাস দাসী।।

আজ মানুষের ব্যথা অভাবের কথা ভাবিবার কেহ নাই,
ধনী মুসলিম ভোগ ও বিলাসে ডুবিয়া আছে সদাই,
তাই তোমারেই ডাকে যত মুসলিম গরীব শ্রমিক চাষী।
বঞ্চিত মোরা হইয়াছি আজ তব রহমত হ'তে,
সাহেবী গিয়াছে, মোসাহেবী করি' ফিরি দুনিয়ার পথে,
আবার মানুষ হব কবে মোরা মানুষেরে ভালোবাসি।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

ইয়া নবী সালাম আলাইকা

ইয়া নবী সালাম আলাইকা
ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা
ইয়া হাবীব সালাম আলাইকা
সালাওয়া তুল্লা আলাইকা।।

তুমি যে নূরের নবী
নিখিলের ধ্যানের ছবি
তুমি না এলে দুনিয়ায়
আঁধারে ডুবিত সবি।।

চাঁদ সুরুজ আকাশে আসে
সে আলোয় হৃদয় না হাসে
এলে তাই হে নব রবি
মানবের মনের আকাশে।।

তোমারি নূরের আলোকে
জাগরণ এল ভুলোকে
গাহিয়া উঠিল বুলবুল
হাসিল কুসুম পুলকে।।

নবী না হয়ে দুনিয়ার
না হ'ইয়ে ফেরেশ্তা খোদার
হয়েছি উম্মত তোমার
তার তরে শোকর হাজারবার।।

-গোলাম মোস্তফা-

লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মদ রাসুল

লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মদ রাসুল।
এই কালেমা পড়রে আমার পরান বুলবুল।

বল আল্লাহ ছাড়া দোসরা আর
মাবুদ কেহই নাই আমার
মোহাম্মদ মোস্তফা তারি পিয়ারা রাসুল
নূরের রবি প্রেমের ছবি নাইক' তাঁহার তুল।।

এই কালেমার প্রেম পরশ
করবে রে তোর দিন সরস
রঙ্গীন হয়ে ফুটবেরে তোর গুল বাগিচার ফুল।
বেহেশতী সেই খোশবুতে তোর দিল হবে মশগুল।।

তুলবি যদি খোদার ঘর
এই কালেমার কুঞ্জি ধর
কোরান হাদীস নামাজ- রোজা সবারি এই মুল।
ভুলিস যদি এই কালেমা সব হবে তোর ভুল।।

উঠুক নাক' তুফান জোর
এই কালেমা কিশতি তর
এই কিশতিতেই পাবিরে তুই অকুলেতে কুল।
আখেরাতে পার হবি তুই পুলসেরাতের পুল।

-গোলাম মোস্তফা-

Sunday 27 February 2011

গাওরে মোসলেমগণ

গাওরে মোসলেমগণ, নবী- গুণ গাওরে
পরাণ ভরিয়া সবে ছাল্লেয়ালা গাওরে।

আপনা কালামে, নবীর সালামে, তাকিদ করে বারী।
কালেবেতে জান, কহিতে জবান, যে তক থাকে গো জারি।

যে বেশে যে ভেসে, যে দেশেতে যাওরে,
গাও গাও গাও সবে ছাল্লেয়ালা গাওরে।

হযরত আদম, গোনাতে যে দম, বেদম কাঁদিয়াছিল,
পাইল রেহাই, মোস্তফা দোহাই যেই দমে দিয়াছিল।

তাই বলি পাপি, যদি পাপ ক্ষমা চাওরে,
তরা করি' প্রান ভরি ছাল্লেয়ালা গাওরে।

নূহ পয়গম্বর, হুকুমে আল্লার, জাহাজ বানান যবে,
উপরে তাহার, নাম মোস্তফার লিখিলে ভাসিল তবে।

ভব পার যেতে যার বাসনা সে আওরে,
হৃদয় জাহাজে লিখে নবী- নাম গাওরে।

খলীলের পেসজানিতে, নবীনূর নেশানীতে আলোকিতি ছিল হায়!
আহা সেই নূর বলে, নমরুদের মহানলে, খলিলুল্লা মুক্তি পায়!

ওহে ভাই, জাহান্নামে যেতে যে না চাওরে
আজীবন মনপ্রানে নবী গান গাওরে।

ফেরেশ্তা সইস হয়ে যাঁহার বরাক লয়ে, আসিল এ দুনিয়ায়,
তিনি যে কেমন জন, ভাভে ভাবুকগণ তাঁহার মেছাল দিব কায়!

বোরাকে ছেরাত পার যাইতে যে চাওরে
বদন ভরিয়া সে ছাল্লেয়ালা গাওরে।

নিমিষে আরশে যায়, বারীতা'লা দরগায় অম্মত নিস্তার তরে
বান্দার নাজাত পথ, নিত্যনিধি শরীয়ত, খতম তাঁহার পরে!

নিমিষে চুলের পুল যদি পার হওরে,
নবীজির শরীয়ত শিরে তুলে রওরে।

যে সময় ভবগোর, হইল গোনায় পোর, এমন সময় বারী
মোস্তফা সুরুজে তবে, উদয় করেন ভবে, করিতে আলোকে জারী।

উদিলে ইসলাম - রবি কাফেরী বিলয় রে,
বল সবে উচ্চরবে ছাল্লেয়ালা জয়রে।

যতপীর ওলিগণ, সেবি সে চরণ ধন, সাধনে পেয়েছে ফল,
সে পাক চরণ যারা, ছাড়িল নাদান তারা, তাহারাই নিঃসম্বল।

না চেয়ে পেয়েছে তাঁরে আর কারে চাওরে?
সে পাক চরণে সবে হৃদে জাগা দাওরে!

ইহুদী নাছারা দল, হিন্দু শিখ এ সকল, ত্যাজিয়া আসল রব
দেব- দেবী গাছ- পালা, ঘাট মাঠ কাষ্ঠশিলা, তাহারা পুঁজিছে সব।

সত্য রবে মোরা পেয়েছি যে অছিলায় রে
এস কোটি কন্ঠে ভেজি ছালাম তাঁহায় রে।

নবীজির ছানা যত, লক্ষ মুখে অবিরত, কহিলেও হইবেনা
যাহার জবানে ভাই, নবীর দরুদ নাই, সে নাজাত পাইবে না,

অতএব সবে আখেরের গম খাওরে,
নবী নামে ছাল্লেয়ালা গাওরে।

নবীজি সহায় যার, ভয় কি মরতে তার? সে জন পেয়ারা খোদা!
নবীর খেলাফ যারা, খোদার দুশমন তারা, নরকে থাকিবে সদা!

নবীজির প্রেম ডোরে সবে শির দাওরে,
হৃদয় ভরিতে সবে ছাল্লেয়ালা গাওরে।

এ অধীন জোড় করে, চরণে বিনয় করে, হে মম দয়াল নবী,
গোনা মোর বড় দেখে, ফে'লনা চরণ থেকে আপনি লুকাও ছবি!

রে পাপী, ও মৃঢ় মন, মোক্ষ যদি চাওরে,
নবী পদ লক্ষ করি ছাল্লেয়ালা গাওরে।

-মুন্সী মেহেরুল্লাহ-

তুমি হে ইসলাম রবি

তুমি হে ইসলাম রবি,
হাবিবুল্লাহ শেষ নবী,
নত শিরে তোমায় সেবি;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

তুমি সত্য উদ্ধারিলে,
মহা তত্ত্ব প্রকাশিলে,
প্রভু বাণী শুনাইলে;
মোহাম্মহ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

চন্দ্র সুর্য তারাগণ
ভবে রবে যতক্ষণ
হইবে না বিস্মরণ
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

নাহি কোন কালাকাল,
ইহকাল পরকাল
সর্বশ্রেষ্ঠ চিরকাল
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

তুমি আদি নূর অংশ,
উজ্জলি কোরেশ বংশ,
করিলে পুত্তলি ধ্বংস,
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

প্রান- মায়া বিসর্জিলে,
সত্য তত্ত্ব প্রচারিলে,
কত দুঃখ যে সহিলে;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

ধর্মরক্ষা সত্য রক্ষা,
করিতে উম্মতে রক্ষা,
পাশরিলে আত্নরক্ষা;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

সেই এক একেশ্বর,
নাহি কেহ তদুপর,
শুনাইলে এ খবর,
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

বিধর্মী কাফের গণ,
শুনে তারা এ বচন,
করে কত জ্বালাতন;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

এলাহি বিপক্ষে যারা
খড়গ হ'ল খাড়া
মানিল না তোমা তারা;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

কথায় কথায় বাদ
প্রতি বাক্যে প্রতিবাদ,
করে কত অপবাদ;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

কেহ ঢিল মারে গায়,
কেহ বা পাগল কয়,
সকলি সহিলে হায়;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

একাত্ন এক দেহ প্রান;
রক্তে রক্তে যোগ টান,
তারাই করে অপমান,
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

'কবার বধিতে এল,
একবারো না পারিল,
হাতের অস্ত্র হাতে রল,
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

যদিরে থাকিতে ভবে,
দেখিত রে তারা এবে,
লুটাইত পদে সবে,
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

সশরীরে সবাহনে,
বারি তালা সন্নিধানে;
গিয়াছিলে সসন্মানে;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

অঙ্গুলীর এশারায়
চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়,
পাখীরা সুস্বরে গায়
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

পাপিগনে তরাইতে,
ভ্রমাঁধার ঘুচাইতে,
তোমা ছাড়া নাই জগতে
মোহাম্মদ রাসুলুল্লাহ।

সবাই আপন দোষে,
কাঁদিবেন হা হুতাশে;
কাঁদিবেন মহা ত্রাসে,
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

মুখেতে 'ইয়া নাফসি' বোল,
হায় হায় কি হইল,
তব মুখে শিষ্য দল;
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

জয় ডঙ্কা বাজাইলে
জয় ধ্বজা উড়াইলে
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।


আরবে বাজিছে ভেরী
হিন্দুস্থানে বাজে তুরী
রুমে শামে সুবাঁশরী
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

ইসাই প্রধান স্থানে
বাজে শিঙ্গা অবিরামে
মত্ত তব গুণ গানে
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

সমগ্র জগত মাঝে
তব ডংকা জোরে বাজে
বিধর্মীরা মরে লাজে
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

গাইব তোমার গান
হৃদে বল কর দান
দাও পদে বিন্দু স্থান
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ।

দিও অন্তে প্রদাশ্রয়
ওহে নবী দয়াময়
কর জোড়ে কবি কয়
মোহাম্মদ ইয়া রাসুলুল্লাহ

-মীর মোশাররফ হোসেন-

রহমান নাম প্রভু তোমার

'রহমান' নাম প্রভু তোমার, কেন আমি নিরাশ হবো?
তোমার দয়া অশেষ অপার;- কেন আমি নিরাশ হবো?

তোমার রহম দুই জাহানে
সংখ্যা শুমার কেউ না জানে,
বান্দা যত হই গুনাহগার;- কেন আমি নিরাশ হবো?

সব তুমি দাও মহান দাতা
তুমি সকল বিপদ ত্রাতা;
দাও নামিয়ে সব গুরুভার;- কেন আমি নিরাশ হবো?

অন্তবিহীন তোমার দয়ায়
কিশতি নূহের কূল খুঁজে পায়,
শেষ হ'ইয়ে যায় সব হতাশার;- কেন আমি নিরাশ হবো?

দুঃস্থ জনে তুমিই দিলে,
'লা তাকনাতু' শেখালে আর;- কেন আমি নিরাশ হবো?

তোমার মত দরদী

তোমার মত দরদী আর দয়াল, দাতা নাই মাবুদ
সবাই সখন দেয় সরিয়ে দাও যে তুমি ঠাঁই মাবুদ।।

কালের ধারায় সবই হারায়, একলা তুমি অচঞ্চল,
দাও করুণা, বিলাও দয়া;- তোমায় ডাকি তাই মাবুদ।।

রঙ ধনু রঙ ঝিলিমিলি,- এই দুনিয়া বঞ্চনার;
সব ছেড়ে তাই তোমার পথে, তোমার দিকে যাই মাবুদ।।

ভুল করেছি অনেক আমি, রঙ্গিন মোহে জিন্দেগীর
বিক্ষত আজ,- তোমার ক্ষমা, তোমার দয়া চাই মাবুদ।।

এই দুনিয়ায় দিন ফুরালে আখেরাতে অন্তহীন
তোমার রেজামন্দী,- খোদা! যেন আমি পাই মাবুদ।।

যখন আমায় ডাকবেনা কেউ

যখন আমায় ডাকবেনা কেউ, ডাকবে তুমি।
যখন কাছে থাকবেনা কেউ, থাকবে তুমি।।

মালিক তুমি দ্বীন দুনিয়ার
লক্ষ্য ত্রুটি দেখো আমার,
যখন ত্রুটি ঢাকবে না কেউ, ঢাকবে তুমি।।

যখন আমার দিন ফুরাবে,
আঁধার রাতে রোশনী যাবে,
যখন কথা রাখবে না কেউ, রাখবে তুমি।।

মরণ ঘুমে ক্লান্ত পথিক,
পড়ব ঢুলে শ্রান্ত পথিক,
যখন পাশে জাগবে না কেউ;- জাগবে তুমি।।

তুমি আমার শেষ ভরসা

তুমি আমার শেষ ভরসা,
তোমার চাওয়ায় মনের হাওয়ায়
নামে অঝোর ধার বরষা্‌।।

রঙ্গিন প্রাতে তোমার সাথে হয়না কথা,
দুঃখ রাতে ফোটে তোমার বিহবলতা;
নিবিড় ছোঁওয়ায় শুষ্ক হৃদয়
করো আমার মন -সরসা।।

তোমার কথা কেউ মানে আর কেউ মানেনা,
কেমন করে জানাও অভয় কেউ জানেনা।

প্রভু আমার প্রিয় আমায়
প্রীতির মত নিয়ো আমার
রক্ত- ক্ষরা অশ্রু ঝরা
ব্যথার কথা ম্লান- পরশা।।

সবার দোয়া কবুল করো

তুমি- সবার দোয়া কবুল কর, সবার মুনাজাত
এবার- আমার দোয়া কবুল করো হে খোদা, পাক জাত।।

আমি- ভুল ক'রেছি সারা জীবন অন্ধ পথের বাঁকে,
আমি- সত্য বলে নিয়েছি ওই মিথ্যা আলেয়াকে,
এখন- দুই চোখে মোর ঘনায় খোদা, শেষের কাল রাত।।

আমি- ভুল ক'রেছি পাহাড় সমান ওগো দয়াল প্রভু,
ভুলের শেষে তোমার দয়ায় বুক বেঁধেছি তবু,
তুমি- দাও মুছে মোর ভুলের কালি, কোরোনা আঘাত।।

কত- পাপী- তাপী তোমার দয়ায় পেল খুঁজে পথ
তোমার রাহে চলতে খোদা পেল যে হিম্মৎ,
সফল তারা দুই জাহানে; সফল আখেরাতে।।

ঐ- দিন রজনীর আলো ছায়া ঘোরে কালের হাতে,
শেষ হয়ে যায় দীর্ঘ জীবন,--- খোদা পলক পাতে,
আমি-- তোমার দয়া হ'লে পাব নবীর শাফায়াত।।

ওগো মাবুদ তুমি ছাড়া

ওগো মাবুদ তুমি ছাড়া
দরদী কেউ নাই।
তাইতো মনের আরজু তোমার
দরবারে জানাই।।

যে কথা মোর কেউ জানে না,
যে ব্যথা মোর কেউ জানে না,
জানি জানি পাবে তা'রা
তোমার কাছে ঠাঁই।।

দিনের শেষে ফেরে সবাই
ফেরে তোমার দিকে,
ঠাঁই দাও রব,- আলল্পনাহ
সকল প্রানীকে।

সাঁঝের পাখী দলে দলে
যেমন বাসায় ফিরে চলে,
কূল মাখলুক তোমার দিকে
চ'লছে ফিরে তাই।।

এ মন আমার ভিক্ষা চাহে

এ মন আমার ভিক্ষা চাহে
নিবিড় দুখ রাতে
ওগো দাতা......
তিক্ত দাহে অশ্রু আমার
ঝরে নয়ন পাতে
(ওগো দাতা).........

দয়া করো ওগো দয়াল
কাটুক আমার রাত্রি ভয়াল
ঝরাও ধরায় অঝোর ধারা
দুঃখ সাহারাতে।।

তোমার কৃপা- পিয়াসী এ
তৃষিত হৃদয়
চায় বুঝি ফের দুঃখ শেষের
অনন্ত সঞ্চয়।

খিজির পেলো যে আবে হায়াত
তারি আশায় জেগেছি রাত,
এবার তুমি পুরাও আশা
কন্টক সজ্জাতে।।

ভিক্ষা চেয়ে দুয়ারে তোমার

ভিক্ষা চেয়ে দুয়ারে তোমার
কেউ ফেরেনি আর
খোদা কেউ ফেরেনি আর।।

দুঃখ দাহে দগ্ধ ধরা
ভিক্ষা পেল তৃষ্ণা হারা
তোমার দয়ায় ওগো দয়াল
অঝোর বারি ধার।।

এমন কাঁদে তোমারি দরবারে
ফেরাতে আর পারবে কি তারে।

যে চাওয়া মোর এই পিপাসায়
ফুটলো না যা আমার ভাষায়,
তোমার ভালবাসায় কাটুক
নিবিড় দুখ তার।।

দয়া করো খোদা

দয়া করো খোদা
দয়া করো খোদা
মোর পানে চাও;
ক্ষমা সুন্দর তব করুণা বিলাও।।

পথ বিভ্রান্ত যারা
পথ খুঁজে পাবে তারা,
তোমার আলোক যদি সন্মুখে জ্বালাও।।

হায়- অন্ধ আমি, দৃষ্টি হারা
নয়নে আমার
চির সত্যের শিখা
জ্বালো অনিবার।

কাটে যেন দুখ নিশা,
মেটেগো আলোর তৃষা,
যে আলোক পিপাসায়
এ মন উধাও।।

আমি যত নালিশ জানাই

আমি- যত নালিশ জানাই খোদা,
দরবারে তোমার,
আমার- আসল কথা হয় না বলা
পরোয়ার দিগার।।

কেমন করে বলব আমি
বন্দী যে হায় দিবস যামী,
নিজের ফাঁধে আমি নিজে
হয়েছি শিকার।।

নিত্য আমি করি যে পাপ
জানো তুমি জানো,
লক্ষ পাপে জীবন আমার
আছে জড়ানো।।

দিনে দিনে বাড়ে দেনা
পাপ সায়রে কূল মেলেনা
বাঁচাও খোদা! ডাকে তোমার
বান্দা গুনাহগার।।

ফররুখ আহমদের মুনাজাত

আরজু আমার শোন খোদা
আরজু আমার শোন খোদা
শোন অবিরত,
এই জীবনের মালা থেকে
আর একটি দিন পড়ল খ'সে
ঝরা ফুলের মত।।

সত্য পথে জিন্দেগী যার
মরণ পরায় সাত নারী হার
সফলতার দ্বারে,
জাহার ভুলের কালি নিয়ে
দিন গুলি মোর যায় হারিয়ে
রাতের অন্ধকারে,
পাইনা আমি পথের দিশা
কালো ছায়ায় বেড়াই ঘুরে যত।।

নাইতো হিসাব, নিকাশ যে পাই
তাইতো শুধু তোমায় জানাই
ওগো দয়াল প্রভু।
সকল পাপের গ্লানি থেকে
আলোর পথে নাওগো দেকে
তোমার দয়ায় রাখো ঘিরে তবু
সত্য পথের দাও ইশারা
পাপের ছায়ায় হই না যেন নত।।

আল্লাহ আমার করো না বিচার

রোজ হাশরে আল্লাহ আমার করো না বিচার।
বিচার চাহি না, তোমার দয়া চাহে এ গুনাহগার।।

আমি জেনে শুনে জীবন ভরে
দোষ করেছি ঘরে পরে,

আশা নাই যে ত'রে যাব বিচারে তোমার।।

বিচার যদি করবে কেন রহমান নাম নিলে।
ঐ নামের গুনেই তরে যাব, কেন এ জ্ঞান দিলে।।

দীন- ভিখারী ব'লে আমি
ভিক্ষা যখন চাইব, স্বামী,
শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিতে, পারবে না কো আর।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

যেদিন তুমি হবে কাজী

যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার
তুমি হবে কাজী,
সেদিন তোমার দীদার আমি
পাব কি আল্লাজী

সেদিন নাকি তোমার ভীষোন কাহহার রূপ দেখে
পীর পয়গম্বর কাঁদবে ভয়ে 'ইয়া নাফসি' ডেকে।
সেই সুদিনের আশায় আমি নাচি এখন থেকে।
আমি তোমায় দেখে হাজার বার দোজখ যেতে রাজী।।

যে রূপে হোক বারেক যদি দেখে তোমায় কেহ,
দোজখ কি আর ছুঁতে পারে পবিত্র তার দেহ।
সে হোক না কেন হাজার পাপী হোক না বে- নামাজী।।

ইয়া আল্লাহ, তোমার দয়া কত, তাই দেখাবে ব'লে
রোজ হাশরে দেখা দেবে বিচার করার ছলে।
প্রেমিক বিনে কে বুঝিবে তোমার এ কারসাজী।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

শোনো শোনো মোনাজাত

খোদা এই গরীবের শোনো শোনো মোনাজাত
দিও তৃষ্ণা পেলে ঠান্ডা পানি, ক্ষুধা পেলে লবন- ভাত।।

মাঠে সোনার ফসল দিও
গৃহ ভরা বন্ধু প্রিয়,
আমার হৃদয় ভরা শান্তি দিও
সেই ত আমার আবেহায়াত।।

আমায় দিয়ে কারো ক্ষতি হয় না যেন দুনিয়ায়
আমি কারুর ভয় না করি, মোরে কেহ ভয় না পায়।

(যাবে) মসজিদে যাই তোমার টানে
(যেন) মন নাহি যায় দুনিয়া - পানে,
(আমি) ঈদের চাঁদ দেখি যেন
আসলে দুখের আঁধার রাত।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

শোনো শোনো ইয়া এলাহী

শোনো শোনো ইয়া এলাহী
আমার মুনাজাত।
তোমারি নাম জপে যেন
হৃদয় দিবস- রাত।।

যেন শুনি কানে সদা
তোমারি কালাম, হে খোদা,
চোখে শুধু দেখি যেন
কোরানের আয়াত।।

মুখে যেন জপি আমি
কলমা তোমার দিবস- যামী,
(তোমার) মসজিদেরই ঝাড়ু- বর্দার
হোক আমার এ হাত।।

সুখে তুমি, দুখে তুমি,
চোখে তুমি, বুকে তুমি,
এই পিয়াসী প্রানের খোদা
তুমিই আবে- হায়াত।।

- কাজী নজরুল ইসলাম-

আমার যখন পথ ফুরাবে

আমার যখন পথ ফুরাবে,
আসবে গহীন রাতি-
তখন তুমি হাত ধরে মর
হয়ো পথের সাথী।।

অনেক কথা হয়নি বলা,
বলার সময় দিও ( খোদা),
আমার তিমির অন্ধ চোখে
দৃষ্টি দিও প্রিয় ( খোদা);
বিরাজ করো বুকে আমার
আরশখানি পাতি।।

সারা জীবন কাটলো আমার
বিরহে, বধুঁ
পিপাসিত কন্ঠে এসে
দিও মিলন মধু।

তুমি যেথায় থাকো প্রিয়,
সেথায় যেন যাই (খোদা)।
সখা বলে দেকো আমায়,
দীদার যেন পাই (খোদা);
সারা জনম দুঃখ পেলাম,
(যেনো) এবার সুখে মাতি।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

ভুবন ভরা যে তোমার নামেতে

ভুবন ভরা যে তোমার নামেতে
রহমানুর রহীম
যত করুণার অপার সিন্ধু
তুমি যে মহামহিম।।

তুমি যে দিয়েছ এ মর- জীবন
তোমার কাছেয় যত নিবেদন
রোজ হাশরের সেই ময়দানে
তুমি যে আল- হাকিম।।

তোমার নামেতে আলোর ঝর্ণা
আধাঁর সরিয়ে বয়
মঙ্গল করো ঘুবনে তোমার
পুণ্যের হোক জয়।

গোনাহগার তব বান্দা যে কাঁদে
কত বেদনায় কত অপরাধে
রহম করগো দেখাও এবার
সেরাতুল মোস্তাকিম।।

-মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান-

আল্লাহ তোমার রহমতের

আল্লাহ তোমার রহমতের
নাই সীমা নাই পার
জীবন মরণ সৃজন পালন
সব কিছু তোমার।

যখন বিপদ দুঃখে পড়ি
তখন তোমার স্মরণ করি
তোমার দয়ায় কূল খুঁজে পাই
অকুল দরিয়ায়।

মালিক তুমি, মাবুদ তোমায়
হয়তো ভুলে থাকি,-
সব গোনাহ যায় মাফ হয়ে মোর
যদি বারেক ডাকি।

তোমার দয়ার নাই সীমা নাই-
তোমার প্রেমের পথ না হারাই,
সহজ সরল পন্থা দেখাও
পরওয়ারদীগার।

-দেওয়ান আব্দুল হামিদ-

অসীম অপার মহিমা তোমার

অসীম অপার মহীমা তোমার
নিখিনের অধিপতি।
যাচি বারবার করুনা তোমার
তোমারেই করি নতি।।

আমার সকল কাজে ও মননে
সকল সাধনা সব আয়োজনে
তোমারি আদেশ পালিতে যতনে-
রহে যেন সদা মতি।।

তুমি যাহা দিবে মোরে ভালবেসে
মন যেন মর তাই ভালবাসে-
ঘৃনা করি যেন পাপ অভিলাষে-
চাহিয়া তোমার প্রতি-

শেষের সেদিন বিচার বেলায়
করো' প্রভু পার ক্ষমার ভেলায়-
পড়ি না যেন গো আধাঁর মেলায়
সে যে নিদারুণ অতি।

-আবুল হোসেন ভট্টাচার্য-

আল্লাহ আমার গুনের আঁধার

আল্লাহ আমার গুনের আধার
সুন্দর দয়াময়
তাঁহার নামে দূর হয়ে যায়
শংকা সংশয়।

আল্লাহ বলে পথ চলি তাই
দূরের ডাকে হারিয়ে যাই
বিপদ বাধায় মানিনা বারণ
তুচ্ছ করি ভয়।।

আল্লাহ আমার সহায় যাহার
সে মৃত্যু দলে যায়;
চির গহন আধাঁর রাতে
সে পথের দিশা পায়।

আল্লাহ নামে সকল দিশা
ঘুচায় মনের আধাঁর নিশা
জীবন আমার সকল কাজে
হবে মধুময়।

-ফজলে এ খোদা-

কুল আলমের পালনেওয়ালা

(সুরা ফাতিহার ভাবানুবাদ)
কিল আলমেন্র পালনেওয়ালা সব প্রশংসা হক তোমার
রহমান উর রহীম তুমি যে, - দয়ার তোমার নাই শুমার ।।

বাদশা তুমি বিচার- বেলার
তুমিই মোদের মা'বুদ সবার
চাই করুনা কেবল তোমার- তুমিই সবার মদদগার।।

হও দিশারী হাদী মোদের
সরল সঠিক দৃঢ় পথের
দাও দেখিয়ে পথটি তাদের- যাদের দেছ পুরস্কার।।

নয় অভিশাপগ্রস্ত যারা
নয় গুমরাহ- লক্ষ্যহারা
দীপ্ত ক'রে দাও ইশারা- তাদের শুভ পন্থাটার।।

আজ নিখিলে শুনছি খোদা

আজ নিখিলে শুনছি খোদা, তোমার নামের জয়;
মিথ্যা পলিদ অকল্যানের আজকে পরাজয়।।

পাক আয়াতের হলফ- মুখে
ঐ দেখ কে দাঁড়ায় রুখে,
করবে সে দূর আজ না- পাকির চিহ্ন সমুদয়।।

কন্ঠে তাহার রুদ্র ধ্বনি আল্লাহু আকবর,
তার তাড়নায় ক্ষুদ্রতা সব দূর হবে সত্ত্বর;

ক্ষুদে ক্ষুদে মাবুদ যত
ঐ দেখ শির করছে নত
আজ জাহানে 'আল মুমিনে'র আবার অভ্যুদয়।।

দিকে দিকে তোমার নামের ঐ ওঠে তকবীর
ক্ষুদ্ধ ধরায় তোমার ভাষায় ডাক আসে শান্তির
ঐ দেখ সব দুঃস্থ দিলে জেগেছে প্রত্যয়।।

উঠল আজান ঐ শোনো ফের
সাম্য- সুলেহ ভ্রাতৃবোধের
তোমার বিধান তোমার বিচার জাগছে জগৎময়।।

- মুহাম্মদ আবুবকর-

মাবুদ আমার

মাবুদ আমার ইয়া এলাহি বিশ্ব- করতার।
রইলো মনে এই কামনা এক্চাই তব দিদার।।

কেন যে গো পাঠাইলে হায়
জিন্দেগী মর এই দুনিয়ায়
আমি ধান্দাবাজির অন্ধকারে বেহুঁশ বেকারার।।

তোমার আলো তোমার হাওয়া
তোমার আকাশ ভূমি
অসীম নীলের তুমি মালিক
হাজের নাজের তুমি।

তাই তুমি হে নিখিল স্বামী
দাও মোরে দিল মুক্তিকামী
সবার দুক্ষের দহন জ্বালা দাও ঘুচাতে ভার।।

-এম এ সোবহান-

নামলো খোদার

নামলো খোদার রহমত-ই-গাস ধূলির ধরার কলে,
নতুন ঊষায়, ভোরের হাওয়ায় ইনসানিয়াৎ দোলে।।

নামলো খোদার পূন্য বিধান,
জাগলো অযুত লুন্ঠিত প্রান,
উঠলো জেগে নতুন আশা
প্রভাতী কল্লোলে।।

তৌহিদী সুর জ্বালিয়ে দিল মিথ্যা কলুষ যত,
সত্য- ন্যায়ের আশীষ ধরায় ঝরে অবিরত।।

মজলুমানের চোখে আবার
জাগলো আলো মুক্ত ঊষার,
জাগলো মিছিল মানবতার
মুক্তি কলরোলে।।

-ফররুখ আহমেদ-

তুমি সুন্দর

তুমি সুন্দর,- সুন্দরতম
আদর্শ নিখিলের,
হে রাসুলে খোদা! জুলমাতে পথ
দেখালে জান্নাতের।।

মিথ্যার কাছে মানুষ যখন
সপেঁছিল তার সারা তনু মন,
ভাঙ্গিলে তখন নিজ হাতে তুমি
মূর্তি অসত্যের।।

তোমার আলোকে মিলাল হে নবী,
অন্যায়, অবিচার।
তুমি দিলে চির বঞ্চিত জনে
মানুষের অধিকার।।

এ ধরণী তল চির ভুলে ভরা
পেল অপরূপ শান্তি পশরা
দিলে এনে যবে খোদার কালাম
সওগাত সত্যের।।

-ফররুখ আহমদ-

সকল তারিফ

সকল তারিফ তোমার খোদা, তুমি যে পাকজাত।
মুহাম্মদের স্রষ্টা তুমি, এ তব সিফাত।।

চাঁদ, সিতারা হয়না শুমার,
তামাম আলম সৃষ্টি তোমার,
সৃষ্টি তুমি করেছ রব
তামাম মখলুকাত।।

বান্দা তোমার এই গুনাহগান আজকে পানাহ চায়,
কবুল কর মোদের দোয়া নবীর উসিলায়।।

তোমার কাছে আজ পানাহ চাই
দ্বীন- দুনিয়ায় কারো ভালাই,
আখেরাতে দিয়ো খোদা
অনন্ত জান্নাত।।

ফররুখ আহমদ-

কুল মখলুকাতের মালিক

মখলুকাতের মালিক আল্লা
আলেমুল গায়েব,
স্রষ্টা মহান, খালিক আল্লা
আলেমুল গায়েব।।

দুঃখ সুখের আলো ছায়ায়
মানুষ গড়ি ধূলির ধরায়
নিজে হলেন আশি, আল্লা
আলেমুল গায়েব।।

মাটির মানুশ হ'ল যে তাঁর
খলিফা মহান,
ফেরেস্তাদের উর্ধে আসন
পেল যে ইনসান।।

পূর্ণ জ্ঞানের পশরা দিয়ে
নিজের রঙ্গে দেন রাঙ্গিয়ে
রাব্বানা লা শরীক আল্লা
আলেমুল গায়েব।।

-আজীজুর রহমান-

তোর আশার প্রদীপ নিভবে যখন

তোর আশার প্রদীপ নিরাশ হয়ে
নিভবে রে যখন
তোর মনের দুয়ার অমনি খুলে
যাবেরে তখন।।

তোর বিপদের দুঃখের নিশায়
পড়বে যখন ঘোর অমানিশায়
আল্লা অকুল সেই দরিয়ায়
আসবে হয়ে আপন।।

যার কাছে তুই পাতবিরে হাত
অনেক আশা করে,
তুই যারে খুব ভাব্বি আপন
সে জন যাবে সরে।

তোর- ব্যথার ব্যথী কেউ হবেনা
তর- দুঃখের সাথী কেউ রবেনা
আল্লা তখন আপন হয়ে
মুছাবে তর নয়ন।।

- আজীজুর রহমান-

দেশে দেশে গেয়ে বেড়াই

দেশে দেশে গেয়ে বেড়াই তোমার নামের গান
হে খোদা, এ যে তোমার হুকুম, তোমারই ফরমান।।

এমনি তোমার নামের আছর
নামাজ রোজার নাই অবসর।
তোমার নামের নেশায় সদা মশগুল মোর প্রান।

তকদিরে মোর এই লিখেছ-
হাজার গানের সুরে
নিত্য দিব তমার আজান
আঁধার মিনার চূড়ে।

কাজের মাঝে হাটে পথে
রণ- ভূমে এবাদতে
আমি তোমার নাম শোনাব, করবো শক্তি দান।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

আল্লাহু আল্লাহু

ফুলে পুছিনু, " বল, বল ওরে ফুল!
কোথা পেলি এ সুরভি, রূপ এ অতুল?"
"যার রূপে উজালা দুনিয়া", কহে গুল,
"দিল সেই মোরে এ রূপ এ খোশবু।"
আল্লাহু আল্লাহু

"ওরে কোকিল কে তোরে দিল এ সুর,
কোথা পেলি পাপিয়া এ কন্ঠ মধুর?"
কহে কোকিল ও পাপিয়া, "আল্লাহ গফুর,
তাঁরি নাম গাহি 'পিউ পিউ, কুহু কুহু।'
আল্লাহু আল্লাহু।।

"ওরে ও রবি শশী, ওরে ও গ্রহ - তারা,
কোথা পেলি ও রওশনী জ্যোতিঃধারা?"
কহে, "আমরা তাহারি রূপের ইশারা-
মুসা বেহুঁশ হল হেরি যে খুবরু।"
আল্লাহু আল্লহু।।

যাঁরে আউলিয়া - আম্বিয়া ধ্যানে না পায়,
কুল- মাখলুক যাঁহারি মাহিমা গায়,
যে নাম নিয়ে এসেছি এই দুনিয়ায়,
সেই নাম নিতে নিতে মরি- এই আরজু।
আল্লাহু আল্লহু।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি

অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি
বিচার দিনের স্বামী।
যত গুনগান হে চির মহান,
তোমারি অন্তর্যামী।।

দ্যুলোকে ভুলোকে সবারে ছাড়িয়া
তোমারি কাছে পড়ি লুটাইয়া
তমারি কাছে যাচি হে শকতি,
তোমারি করুনা কামি।।

সরল সঠিক পুন্য পন্থা
মোদেরে দাওগো বলি'
চালাও সে পথে
যে পথে তোমার
প্রিয়জন গেছে চলি।

যে পথে তোমার চির অভিশাপ
যে পথে ভ্রান্তি চির পরিতাপ
গে মহাচালক, মোদেরে কখনো
করো না সে পথগামী।।

-গোলাম মোস্তফা-

Saturday 26 February 2011

ইসলামী সেই সমাজ

ইসলামী সেই সমাজ কোথায় পাইরে
ইসলামী সেই সমাজ কোথায় পাইরে
যে সমাজে শান্তি ছাড়া জুলুম শোষন
হাহাকার আর নাইরে।।

যে সমাজে গরীব দুঃখী ভুখা নাঙ্গা থাকেনা
যে সমাজে মানবতা ধুকে ধুকে মরেনা
শান্তি সুখের এমন সমাজ
কোথায় গেলে পাইরে।।

ঘুম আসেনা বুক ভেঙ্গে যায়
দেখেন ঘুরে ঘুরে
ভুখা নাংগা আছে কি কেউ সমাজের ভিতরে।।

প্রজার দুঃখে রাজা কান্দে ব্যথা সহেনা
রাজায় প্রজায় ভালবাসা জানায় সমবেদনা
এমন দয়া এমন মায়া
কোথায় গেলে পাইরে।।

সর্বহারা আদম সন্তান
নাহি থাকে মরে
রোগে শোকে অনাহারে
রাস্তার ধারে পড়ে………

যে সমাজে আমীর ফকির কোনই বিভেদ থাকেনা
ধনী গরীব সবাই মিলে গড়ে সুখের আস্তানা
নিবিড় প্রেমের এমন সমাজ
কোথায় গেলে পাইরে।।

-আবুল কাশেম-

নাম তোমার আব্দুর রহমান

নাম তোমার আব্দুর রহমান
কাজে কর্মে রবার্টসন 
নামাজ রোজার ধার ধারেনা 
ঈসলামী জীবন মানেনা 
মানেনা হাদীস কোরান 
হায়রে আব্দুর রহমান 
নাম দিয়ে কি হয়রে কাম।। 

কোন বৈজ্ঞানিকের নাম রাখিলেই 
যায়না হওয়া বৈজ্ঞানিক 
ইবনে সিনা নাম হইলেই 
হয়না তো চিকিৎসাবিদ 
উকিল মোক্তার জজ ব্যারিষ্টার 
ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ার 
পাশ করেই হয় সফলকাম 
শোনরে আব্দুর রহমান।। 

মুসলমান তো বর্ণ গোত্র বংশেরই নাম নয় 
ইসলাম জেনে মনে প্রানে গ্রহন করেই হয় 
ইন্দ্রমোহন শ্রী নারায়ন 
সেও হয় ভাই মুসলমান 
জেনে বুঝে ঈমান এজে 
গ্রহন কুরলে আল ইসলাম (আবার) 
পীর মাওলানার সুযোগ্য সন্তান 
সেও হয় ভাই কাফের বেঈমান- 
না মানলে খোদার বিধান।। 

 -আবুল কাশেম-

এই জাগরণ

এই জাগরণ ইসলামী জাগরণ
মানবেনা শুনবেনা কোন যে বারণ, জুলুম নিপীড়ণ
দুর্বার এই আন্দোলন তৌহিদী জাগরণ
মানবতার শত্রু যত করবে সব দমন।।

আন্দোলন কখনো থেমে যাবেনা
উত্তাল তরঙ্গ বাধা মানেনা
শহীদের রক্ত বৃথা যাবেনা।।

তাইতো খোদার পথে
এগিয়ে যাব এক সাথে
করবো কায়েম খোদার বিধান
যায় যাক জীবন।।

গায়রুল্লার উচ্ছেদে হিজবুল্লার আগমন
বাতিলের উৎখাতে প্রচন্ড আক্রমন
হুঁশিয়ার সাবধান
খোদাদ্রোহীর বেঈমান
হুঁশিয়ার
সত্যের দুশমন।।

-আবুল কাশেম-

এখনো তুই কেনরে মিছে

এখনো তুই কেনরে মিছে বইসা রইলি
রাসুল প্রেমের তরী লইয়া সমুদ্রে ধর পাড়ি।।

তোরই ঘরের কেঁচোর ফুটোয়
সাপ যে বাসা বাঁধে
জনম ভইরা সে সাপ গেলো তোরেই ছোবল মারি।।

সময় যে তোর যায় ফুরায়ে
মূর্খ রয়ে গেলি
ইসলাম থেকে মুখ ফিরায়ে
লাঞ্ছনাতো পেলি

প্রেমের নবীর আহবানে ওঠরে এবার জেগে
দ্বঈনের লাগি ওরে মুমিন যাই চলো জেহাদে
ধন্য জীবন পাবো যদি
শহীদ হতে পারি।।

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

প্রতিদিন সুর্য ফিরে

প্রতিদিন সূর্য ফিরে
ফিরে সোনালী জছনা
শুধু ওরা ফিরে না
কোরাসঃ চলে গেছে ওপারে সুন্দর জীবনে (২)

শোষনের নাগপাশ ছিঁড়তে গিয়ে
রাসুলের পথ ধরে চলতে গিয়ে
হায়েনার ছোবলে যে সোনামনি মানিকেরা
হারিয়ে গেছে
কোরাসঃ চলে গেছে ওপারে সুন্দর জীবনে (২)

কৃষানের মাঠে আসে সোনালী সম্ভার
গাছে গাছে ফোটে ফুল আহা কী যে বাহার
নদীতে উজান আসে জীবনেও জোয়াত
শুধু ওরা আসেনা
কোরাসঃ চলে গেছে ওপারে সুন্দর জীবনে (২)

থাক খালি পড়ে থাক মায়ের ঐ বুক
রক্তে ধুয়ে আসুক মুক্তি আসুক
গেছে যারা তাদেরই পথ ধরে মুক্তি
নেমে আসে
কোরাসঃ চলে গেছে ওপারে সুন্দর জীবনে (২)

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

দোলা লাগে

দলা লাগে দোলা লাগে দোলা লাগে
মতুন দীনের দোলা লাগে প্রানেতে।।

একদল তরুনের সন্ধানি চোখ
সত্যের সন্ধানে থাকে উৎসুক
দিন্রাত খেটে মরে দ্বার হতে দ্বারে ফেরে
প্রাণান্ত উৎসাহে ছুটে চলেছে
নতুন দিনের দোলা লাগে প্রানেতে।।

সংযম ত্যাগ আর প্রেমেরই বাণী
যুগ হতে যুগে ওরা নিতেছে তানি
জীবনের মরণের ভয়টুকু টুতে ফুটে
শত্রুর ব্যুহ ভেঙ্গে চলেছে
নতুন দিনের সাড়া জাগে প্রানেতে।।

সদর্পে ছুটে আসে হায়েনার দল ঐ
চিরতরে শেষ যেন করে দেবে নিশ্চই
স্বার্থের হানি হলে ওরা কি তা সইবে
চিরদিনই স্বার্থের জয়গান গাইবে।।

পিশাচেরা চিরকালই আগ্রাসী হয়
পিশাচের থাবা দেখে পেলোনাতো ভয়
সত্যের অপমানে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে
মিথ্যার বেসাতীরে নাশ করে যে
নতুন দিনের দোলা লাগে প্রানেতে।।

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

ভাটির দেশে জন্ম আমার

ভাটির দেশে জন্ম আমার
জন্ম নদীর দেশে
দুখের মাঝেও দিন কেটেছে
তাকেই ভালবেসে।।

পাহাড় নদী ধানের ক্ষেতের এমন মোহন ছবী
পুবের আকাশ সাজিয়ে তোলে শিশির ধোয়া রবি

পাখির গানে ফুলের ঘ্রানে
শ্যাম বনানী আমায় টানে
সবুজ গাঁইয়ের সরল কৃষান দুহাত বাড়ায় এসে।।

প্রতিদিনের ভোরের আজান
জ্বালায় প্রানে দীপ্ত শিখা
লক্ষ তিতুমীরের কথা রক্তে আমার হয় যে লিখা।।

আহার জোটার সংগ্রামে ঐ চলছে যারা ছুটে
সত্য ন্যায়ের জোর লড়াইয়ে ক্ষুধার জ্বালা টুটে
শাহজালালের সৈনিক ওরা
নবী প্রেমে পাগল পারা
জীবন বিলায় খোদার রাহে মরণ যাঁচে হেসে।।

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

তোমরা যারা আজ

তোমরা যারা আজ
খোদার পথে দিয়ে গেলে প্রান
জনতার মুখে মুখে প্রানে প্রানে রবে
রবে অম্লান।।
দ্বীনের বাগানখানি সিক্ত করে
যারা দিয়ে গেলে প্রান
জনতার মুখে মুখে প্রানে প্রানে রবে
রবে অম্লান।।

তোমাদের ইতিকথা শহরে নগরে
রবে গাঁইয়ে দুখীর কুঁড়ে ঘরে
জিহাদের ময়দানে
জিহাদীর প্রানে প্রানে
জাগাবে সাড়া হে চিরতাজা প্রান।।

শহীদের তাজা খুন বৃথা যেতে পারেনা
ভাংবো ভাংবোই তাগুতী ঠিকানা
উরাবো আবার তওহীদি পতাকা
গাইবে সবাই
তোমাদের গান।।

-আব্দুল হালিম চৌধুরী-

এ পথের পথিকের

এ পথের পথিকের নেই কোন ভয় শংকা
বুকে ঈমানের ডঙ্কা
ওরা সবাই শহীদের ভাই
মাড়িয়ে যায় ঝড় ঝনঝা।।

ওরাতো কোরানের সৈনিক
ওরাতো দুর্জয় নির্ভীক
ওরাতো রাসুলের সৈনিক
ওরা আলী মুরা তারিক
ওরা করেছে জাহান জয়
আবারও আনবে সে বিজয়
ওরা সবাই অকুতোভয়
ওরা সৈনিক
ওরা নির্ভীক
বাজিয়ে যায় জয় ডংকা।।

দিকে দিকে ওরা ছুটছে
বিজয়ী ঝান্ডা ঐ উড়ছে
ভুবনে ভুবনে ঘুরছে
আল্লাহ ধ্বনি তুলছে
ওরা করেছে জাহান জয়।।

আবারও আনবে যে বিজয়
ওরা সবাই অকুতোভয়
ওরা সৈনিক ওরা নির্ভীক
বাজিয়ে যায় জয় ডংকা।।

-আব্দুল হালিম চৌধুরী-

জাগো জাগো বীর জনতা

জাগো জাগো বীর জনতা গড়ে তোল জোর একতা
খোদাদ্রোহী শক্তিগুলো খড়গ হস্ত আজ
যারা ঈমানের বলে বলীয়ান- হও হও তারা আজ আগুয়ান
দাওরে এবার দাওরে সাড়া তল দুর্বার জোর আওয়াজ।

ঐ যে কোরান ডাক দিয়ে যায় ওরে মুজাহীদ
বিশ্ব মানবতা কাঁদে তবু কেন নীঁদ
যারা আল্লাহর পথের সৈনিক
যারা তাওহীদবাদী নির্ভীক
জীবন তাদের সংগ্রামী যে
পরে জিহাদের রাঙ্গা সাজ।

ঐ যে দেখ বিশ্বজুড়ে জাগে মুসলমান
বক্ষ ভাসে তপ্ত খুনে হাতে আল –কোরান
মুছে ফেল সব জড়তা
আলো কোরানের বারতা
আজি ধরার মাঝে আসুক আবার
বেহেশতেরই সওগাত।।

-আব্দুল হালিম চৌধুরী-

আমরা ছিলাম আমরা আছি

আমরা ছিলাম, আমরা আছি,
আমরাতো থাকবো, মুছে যাবোনা।
যতদিন রবে ঐ নদী বহমান
রবে ততদিন বেঁচে মোদের এই কাফেলা।।

অস্ত্র আঘাতে রোখা যাবে না না-না-না।
ভয় ভীতি সন্ত্রাস মানিনা না না না না
রক্তে লালিমা হয় রাজপথ,
এই রাজপথ
তাগুতের উৎখাতে তাই আমরা বজ্র কঠোর-
ভাংবো ভাংবোই তাগুতী ঠিকানা।।

শাহাদাতের অভিলাষ বুকেতে বুকেতে
অবিরাম অনিবার জিহাদে জিহাদে
সত্যের পথে মোরা দুর্জয়, মোরা নির্ভীক-
তবুও সামনে চলা
ভেঙ্গে কুফুরী বাধা
গড়বো গড়বোই আল্লাহরই রাজ।

-আব্দুল হালিম চৌধুরী-

শতাব্দী আজ ডাকছে তোমায়

শতাব্দী আজ ডাকছে তোমায়
আগামী দিনের সে সূর্য সেনা
শান্তি খোঁজে ঐ মানবতা,
শান্তি কোথাও পায়না।।

শান্তির শ্বেত পাখী হারিয়ে গেছে
হাহাকার চারিদিকে ছেয়েছে
ক্ষুধিত মানুষ ঐ পথের পাশে
মুখ গুঁজে চুপে পড়ে রয়েছে
দুখীর তরে সুখের প্রভাত
আনতে কি পথ চলবে না?

অত্যাচারির ঐ প্রাসাদ ভেঙ্গে
কোরানের আলো দাও ছড়িয়ে
মজলুমানের মুখে হাসি ফোঁটাতে
সুখের দীপ দাও জ্বালিয়ে
বাধার প্রাচির আসুক যত সে তমার পদতলে থাকনা।।

-আব্দুল হালিম চৌধুরী-

এইতো সে দেশ সাঁঝের বেলায় যেথা

এইতো সে দেশ সাঁঝের বেলায় যেথা
ভেসে আসে দূর হতে ভাটিয়ালী সুর
পাখিরা যায় ফিরে
ডানা মেলে নীড়ে
আজান আসে ধীরে আহা মধুর।

এখানে পাখীগুলো যায় বয়ে যায়
নিঝুম চরাচরে
সাগর তীরে তীরে
হৃদয় যায় উড়ে- দূর বহুদুর।।

সবুজ সমারোহে যায় ভরে প্রান
হৃদয় জুড়ে ওঠে আমার প্রভূর গান
প্রভুর সৃষ্টিতে
রহম বৃষ্টিতে
ধরণী নিয়ামতে হলো ভরপুর।।

-আব্দুল হালিম চৌধুরী-

ইয়া আল্লাহু আকবর

ইয়া আল্লাহু আকবর
মুজাহিদ তুই হ’ আগোয়ান
সৈনিক তুই হ’ আগোয়ান
ওরে আল্লাহর দল জোরে ধ্বনি তুলে বল
ইয়া আল্লাহু আকবর।।

তাগুতের ও প্রাসাদ ভেঙ্গে চুরে ফেল
জিহাদের দৃঢ় আঘাতে
সব বাধা পায়ে দলে চল এগিয়ে
ঈমানের দৃঢ় শপথে
ওরে রাসুলের দল জোরে ধ্বনি তুলে বল
ইয়া আল্লাহু আকবর।।

আল্লাহর ভয়ে তোরা ভীত নত প্রান
ইবাদতে মশগুল প্রান
হাতে তর ধরা আছে ঈমানি নিশান
মুখে তর জিহাদের গান
বাতিলের এ আঁধার ছিন্ন করে
কোরানের আলো কর দান
বারুদের মত জ্বল বিপ্লবী সুরে বল
ইয়া আল্লাহু আকবর।।

-খন্দকার রাশিদুল হাসান-

মালেক ভাইয়ের শাহাদাতের

মালেক ভাইয়ের শাহাদাতের
রক্ত রাঙ্গা পথে
হামিদ শাব্বির আইয়ুব ওরা
চলেছে এক সাথে
ওরা চলেছে এক সাথে।।

সেই পথেরই শেষ ঠিকানা জান কি কোনখানে
সেই পথেরই শেষ ঠিকানা জান্নাতের বাগানে
আবে কাওসার আবে হায়াতের পিয়ালা হাতে।

ফেরদাউসের দরজা থেকে আসমানী আহবানে
শাহাদাতের খোশবু মেখে চলেছে সেই খানে।

বুক ফেটে যায় কান্না ফুরায়
মালেক মালেক বলে
আমার শাব্বির হামিদ আইয়ুব
কোথায় গেলো চলে
না না তোমরা কেউ কেঁদো না
ওরা বেঁচে আছে
ওরা চলেছে এক সাথে।।

-খন্দকার রাশিদুল হাসান-

মুমীন মুমীন চল না এক সাথে

মুমীন মুমীন চল না এক সাথে
খোদার বিধান কায়েম করতে
হোকনা মরণ তবু ভয় কি তাতে
জান্নাত ঠিকানা জেনো মোদের এ পথে।।

হোকনা এ পথ তবু রক্তে রাঙ্গানো
হকনা এ পথ তবু দুখে ভরানো
আহা হা হা
আশার আলো যে জ্বেলে রেখেছি
জান্নাত পাবো বলে এ পথে নেমেছি।।

আসছে সুখের দিন আসছে আবার
দুখের অমানিশা যে কাটবে এবার
সূর্য্য সোনালী দিন আসছে আবার
কালেমার ঝান্দা ফের উড়াবার।।

মুক্তির পথে তাই হও আগোয়ান
বজ্রের মত হও আরো বেগবান
বিজয় এলো দিন নেই তো বাকী
আল্লহর রহমত চিরসংগী।।

-খন্দকার রাশিদুল হাসান-

হাতে হাত রেখে

হাতে হাত রেখে শপথ করে
এসো ইসলামেরই পথ ধরে যাই এগিয়ে
সংগীন উঁচু করে তৌহিদী সুরে
এসো পাল তুলে দেই ঝড়ো হাওয়ায়
তীরের খোঁজে।

সংগ্রামের পথ বড় বন্ধুর হবে
বড় দুর্গম হবে
তিমির আঁধার সে পথ ঢেকে নেবে
বাধার প্রাচির তমায় রুখতে চাবে
তরঙ্গের ত্রাস গ্রাস করতে চাবে
তোমায় ভড়কে দেবে
নিরাশার জাল হতাশ করতে চাবে
ইবলিস শয়তান তোমায় মন্ত্রনা দেবে
তবু সেদিনও ভাই দৃঢ় শপথ ভরে
নির্ভিক সৈনিক মোদের হতে হবে।

অনেক দুরের পথ যেতে হবে
ঈমানের রসদ সাথে নিতে হবে
কোরান বুকে নিয়ে হাদিস হাতে
আঁধারের পথ চিনে নিতে হবে।।

ঝড়ের আঘাত যদি আসে পথে
শিলা বৃষ্টির সাথে
দৃঢ় করে হাল ধরতে হবে
পথের নিশান ঠিক রাখতে হবে
দুঃখ জ্বালা আর আঁধার রাতি
সেতো পথের সাথী
ধৈর্যের প্রাচির তোমায় হতে হবে
ত্যাগের মহান আলো জ্বালতে হবে
এসো শপথ করি- আল্লাহর পথে জীবন দিতে হবে।।

-খন্দকার রাশিদুল হাসান-

কবদরের প্রান্তরে ভাই প্রান্তরে

বদরের প্রান্তরে ভাই প্রান্তরে
আমরা করেছি সংগ্রাম
অহুদের প্রান্তরে ভাই প্রান্তরে
আমরা করেছি সংগ্রাম।।

তাগুতের ময়দানে
বাতিল আর সত্যের সংঘাতে ভাই আমরা
চিরদিন করেছি সংগ্রাম।
মুমীনের জীবন খোদারই তরে
কুফুরির প্রতাপে নাহি সে ডরে
তাই জীবনের লগ্ন থেকে যুগে যুগে আমরা
চিরদিন করেছি সংগ্রাম।

খোদাকে ভয় করি
খোদাকেই ভালবাসি
খোদারই তরে তাই
জীবন বিলাই হাসি।।

শুধু যে আমরা খোদারই বান্দা
খোদারই বিধান ছাড়া আর কিছু মানিনা
তাই এ বিধান করতে কায়েম
যুগে যুগে আমরা
চিরদিন করেছি সংগ্রাম।।

-খন্দকার রাশিদুল হাসান-

দেখ মানবতা করে হাহাকার

দেখ মানবতা করে হাহাকার
অনেক রাত্রি শেষে একটু প্রভাত চাই
রুদ্ধ শ্বাসের পর শান্তির স্বাদ চাই
ডানা ভেঙ্গে পড়ে আছে শান্তির শ্বেত কবুতর
দেখ মানবতা করে হাহাকার।।

লাখো মানুষের ঐ তীব্র আর্তনাদে
একটু শান্তি চাই মানবতা শুধু কাঁদে
কোথাও শান্তি নাই কোথাও মুক্তি নাই
দানা ভেঙ্গে পড়ে আছে শ্বেত কবুতর।

সত্যের সন্ধানে মানুষের শত মত
এ পথ সে পথ ঘুরে পায়না সঠিক পথ
খোদাহীনতার পথে শান্তির পথ নাই
কোরানের এ পথটি তাদের সবার কাছে
বলো কে আছে পৌঁছে দেবার।।

শত নারী পুরুষের বেদনার হাহাকারে
খোদার আরশ আজ কাঁপে থর থর করে
তোমরা মুমীন ভাই খোদার কৈফিয়তে
তোমরা কি দেবে জবাব তার।।

-খন্দকার রাশিদুল হাসান-

রক্তে রাঙ্গানো সংগঠন

রক্তে রাংগানো সংগঠন
শত শত শহীদের সংগঠন
বাধার পাহাড় গুলো দলে দলে
চল্বেই চলবে আন্দলন।।

খোদামুখী হৃদয়ের নাই ভয় নাই
মৃত্যুর মুখোমুখি গান গেয়ে যাই
এই শপথ এই পণ
করছি অনুক্ষন
দ্বীনের পথে বিলিয়ে জীবন
আনবোই আনবো জাগরন।।

বঞ্চিত জনতার এই কাফেলা
চির হেফাযতে রেখ আল্লাহতালা
এই মোনাজাত আজ
দরবারে তোমার
অপবাদের ঝড় পাড়ি দিয়ে
মঞ্জিলে যেতে হবে বন্ধুগন।।
-তোফাজ্জল হোসেইন খান-
১১৫) বাংলার ঘরে ঘরে
বাংলার ঘরে ঘরে
নগরে বন্দ্রে
সীমাহীন সীমানায়
দুখির কুঁড়ে ঘরে
জনতার অন্তরে
আমাদের ঠিকানা।।

আমরা মুছে যাবো- না, না
আমাদের ড়খা যাবে- না, না,
জুলুম্বাজী চলবে- না, না, না,
সত্য ঢাকা যাবে না, না, না, না।।

আমরা সিংহ- শাবক অগ্নিধারা
জেহাদের নেশায় জীবন পাগল্পারা
শাহাদাত মনে প্রানে চাই যে মোরা
সংগ্রাম বারণ শোনে না- না, না, না।।

হাজার প্রানে ভরা এই কাফেলা
নইগো বন্ধু মোরা নই একেলা
নেভাতে চাইলে আগুন জ্বলবে দ্বিগুন
সংগ্রাম বারন শোনে না, না, না, না।।

-তোফাজ্জল হোসেইন খান-

শাহ জালালের পুন্যভূমি

শাহ জালালের পুন্যভূমি
শাহ মাখদুমের বাংলাদেশ
আমাদের অহংকারে
গরবের বাংলাদেশ।।

এখানে শহীদ তিতু বাঁশের কেল্লা গড়ে
ঈমানের অস্ত্র দিয়ে খোদার পথে লড়ে
স্মৃতির পাতায়
আজো জাগায়
সেই কাহিনী হয় না শেষ।।

আজানের সুরে সুরে
এখানে প্রভাত আসে
শপথের লক্ষ তারায়
এখানে সন্ধ্যা নামে।

ঈসা খাঁর বিপ্লবী খুন মোদের ধমনিতে
প্রতিরোধ তাইতো চলে প্রতি ক্ষনে ক্ষনে
জান দেবতো
মান দেব না
মুক্ত স্বাধীন রাখবো দেশ।।

-তোফাজ্জল হোসেন খান-

ঈদের খুশী অপূর্ণ রয়ে যাবে ততদিন

ঈদের খুশী অপূর্ণ রয়ে যাবে ততদিন
খোদার হুকুমাত হবে না কায়েম
কায়েম হবে না যতদিন।।

যেখানে মানুষ অধিকার হারা
যেখানে জীবন দুখে শকে ভরা
সেখানে আকাশে ঈদের ঐ চাঁদ
মেঘেই ঢাকা যা চিরদিন।।

যেখানে জুলুম সীমা ছেড়ে যায়
কুফুরী বাতিল শুধু বেড়ে যায়
সেখানে মানুষের হৃদ্যাবেগ
থাকেনা থাকেনা অমলিন।।

যেখানে যখন কোরানের বিধি
হয়েছে ন্যায়ের চির প্রতিনিধি
সেখানে অনিশেষ খুশীর আমেজ
পেয়েছে জনতা চিরদিন।।

-মতিউর রহমান মল্লিক-

আমাদের সামনে বাধার পাহাড়

আমাদের সামনে বাধার পাহাড়
সাথে বহে টল মল রক্ত নদী
মঞ্জিল দূরে নয় দুঃসাহসে
কদম কদম পথ চলো যদি।।

সংগ্রাম মুখর এই জীবনে
শপথ তপ্ত করে আগুনে
ঈমানের জ্বালা মুখে ঝনঝা এনে
জেহাদের মাঠে চলো সূর্য সাথী।।

তাকবীর দিকে দিকে ছড়িয়ে
বজ্রবর্ম বুকে জড়িয়ে
জীবনের ঘাটে ঘাটে বহ্নি ঢেলে
জেহাদের মাঠে চলো জঙ্গী সাথী
-মতিউর রহমান মল্লিক-
১১১) রহমত বরকত মাগফিরাতে
রহমত বরকত মাগফিরাতের
এই মাহে রমজান
সৃষ্টির তরে স্রষ্টার এযে
শ্রেষ্ঠ অবদান।।

শারদুল হতে দ্বীনের পথে
আল্লাহর ইশকের মজনু হতে
সুযগ সুমহান।।

রমজান হলো ঢালের মতো
রুখবে বিপদ আপদ যত
শক্তি অফুরান।।

রমজান সে্তো খোদার তরে
পুরস্কার অকাতরে
দেবেন রহমান।।

যাকাত যেমন সব জিনিসের
রোজা তেমন যাকাত দেহের
রাসুলের ফরমান।।

-মতিউর রহমান মল্লিক-

সিদ্দিকে আকবর ইবনে কোহফা

সিদ্দিকে আকবন ইবনে কোহাফা
রাসুলের অবিকল ছায়াছবি
দ্বীনের তরে কে আর এমন
উজাড় করে দিল যা কিছু সবই।।

রাসুলের অনুগত কে আর এমন
রাসুলের প্রিয়তম কে আর এমন
রাসুলের নীতিমালা অটুট রাখে
হিজরতে দ্বিধাহীন দীপ্ত সাহসী
আমাদের চির চেনা কোন সাহাবী।।

রাসুলের জীবনের ব্যাখ্যা তিনি
আমরণ সংগ্রামে সঙ্গী তিনি
রাসুলের রাষ্ট্রের স্থপতি
সন্ধ্যা তারার মত ধ্রুব জ্যোতি
তাঁ হাতে হলো শেষ মিথ্যা বাতেলী
ধোকাবাজ যত সব ভন্ড নবী।।

-মতিউর রহমান মল্লিক-

তৌহিদী ঐ কোটি মোমেনের সওগাতে

তওহিদী ঐ কোটি মুমেনের হৃদয়ে সওগাতে
এই সুবিপুল খোদার জমিন চিরদিন হল পাক,
তাইতো আবার আমরা চলেছি আলোর মশান হাতে
আমরা শুনেছি আল্লাহর রাহে সেই জীবনের ডাক।

যত শয়তান স্বীয় নফসের আস্তাকুঁড়েই থাক
আমরা শুনেছি আল্লাহর রাহে সেই জীবনের ডাক।।

শুচি শুভ্র আলোকের পথে আমাদের পথা চলা,
ফেৎনা পাহাড় বাতিল সাগর দ’লে যাই পদতলে,
আমরা পৌঁছাব শান্তির দেশে সোনালী স্বর্ণ- গলা,
তারি আহবানে আমাদের এই কাফেলা এগিয়ে চলে।
নফসের দাস, দুনিয়ার দাস পিছনেই পড়ে থাক
আমরা শুনেছি আল্লাহর রাহে সেই জীবনের ডাক।।

আমরা শুনেছি মুক্তি- সনদ কুরআনের পয়গাম,
হেরার আলোয় আমাদের লাখো চক্ষু জ্যোতিষ্মান,
পথে প্রান্তরে ফুটাব কুসুম সুবাসিত অভিরাম,
আমরা জাগাব দুনিয়ায় যত নিদ্রা আতুর প্রান।
ভীরু কাপুরুষ লালসার দাস ঘরকুনো হয়ে থাক,
আমরা শুনেছি আল্লাহর রাহে নব জীবনের ডাক।।

-জামেদ আলী-

কেয়ামতের কথা ভেবে

কেয়ামতের কথা ভেবে ভয়ে কাঁপে প্রান
সেই হিসাবের কঠিন দিনে দিও প্রভু ত্রান।

ভুলে মোহের দুনিয়াতে
পাপ করেছি দিনে রাতে
লাভের কড়ি নেই কো হাতে
সব দিকেই লোকসান।।

শেষ বিচারের বিশাল মাঠে
তোমার আদালতে
বসবে তুমি কাহহার হয়ে
ন্যায়ের মীযান হাতে।

সেই বিচারের কাঠ গড়াতে
সাহস আমার নাই দাঁড়াতে,
তার ভয়ে আজ নয়ন পাতে
ডাকছে আঁশুর বান।।

-জামেদ আলী-

লড়ে যা জীবন দিয়ে

লড়ে যা জীবন দিয়ে খোদার রাহে
করতে খোদার বিধান জারি
চালু কর ফের দুনিয়ায় খোদার শাসন,
কররে খোদার তাবেদারী।

সেখানে নেইক জুলুম নেইক শোষণ
দেখবি শুধু সিগবাতুল্লাহ,
সেখানে মখলুকাতের কন্ঠ হতে
উঠবে ধ্বনি আল্লাহ আল্লাহ।
সেখানে থাকবে নাক নির্যাতিত
দুঃখী জনে আহাজারি।।


ভর দুনিয়ায় কাঁদছেরে দেখ
লক্ষ লক্ষ মুজতাদাফিন
অশ্রু নীরে বুক ভাসায়ে
সর্বহারার কাটছে যে দিন।


তোর আয় এক জামাতে শামিল হয়ে
খুন ঢেলে আজ কররে জেহাদ,
ভেঙ্গে দে লাথি মেরে বাতিল শক্তি
দুরাচারীর শয়তানী হাত।
তোদের আজ করতে হবে এই দুনিয়ায়
মজলুমানের খবরদারী।।

-জামেদ আলী-

নও হেলাল আজ আল বেলালী

নও হেলাল আজ আল বেলালী
আযান দিয়ে ফের কাবাতে,
নিদ্রা মগ্ন মুসলমানে
শামিল করো এক জামাতে।

হাবলুল্লাহকে ছেড়ে তারা,
ঘুমিয়ে আছে আত্নহারা
খোদার বান্দা হয়েও তারা
রইল পড়ে শূন্য হাতে।

ঘরে ঘরে উঠুক জ্বলে
আল কুরআনী নুরের বাতি,
ভায়ে ভায়ে হোক একতা
ঘুঁচুক তাদের আঁধার রাতি।

এক জামাতে শামিল করে
আল কুরআনের ঝান্ডা ধরে
ডাক দিয়ে যাও উচ্চ স্বরে
কুল আলমের ঘুম ভাঙ্গাতে।।

-জামেদ আলী-

জেগে ওঠো বীর

জেগে ওঠো বীর মুজাহীদ- খোদ খোদারই সৈন্যদল,
শক্তি মাগো খোদার কাছে, চায়না তোমার অন্যবল।

হাজার বছর রইলে ঘুমে
পথ ছেড়ে আল- কোরানের
তাইতো তোমার আপন ঘরে
নৃত্য চলে শয়তানের।
সেই কোরানের রৌশনীতে ফের
দুনিয়া করো সমুজ্জল।

আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন আর
ইথিওপিয়া ইরিত্রিয়ায়
ভাসছে দেখ খোদার জমিন
মুসলমানের খুন-ধারায়।

নির্যাতিত বনি আদমের
অশ্রুতে আজ বয় নহর
ডাকছে তোমায় তাইতো নতুন
তাবুক ওহুদ, সেই বদর।
খোদার রাহে লড়াই করে
ঘোঁচাও দুখীর অশ্রুজল।।

-জামেদ আলী-

দুঃখে পড়ে না ভেঙ্গে যে বীর পুরুষ

দুঃখে পড়ে না ভেঙ্গে যে বীর পুরুষ
বাধার প্রাচির দেখে হয়না বেহুঁশ
তেমন মানুষ কই, বীর মুজাহিদ
দুর্জয় দুখে শোকে তাকে খুঁজি আজ।।

খোদার জমিনে তার আজ প্রয়োজন
সুখকে হারাম করে, করবে যে পণ
লড়তে হেরার পথে তুলবে আওয়াজ
তাকে খুঁজি আজ।।

নবীর দেখানো পথে কদম কদম
চলতে জীবন দিয়ে চায় হরদম
কোথায় সে মুমীন- বীর- ইগল- শাহবাজ
তাকে খুঁজি আজ।।

কোন ক্ষতি লোভ ভয় পারে না যারে
জিহাদের পথ হতে রুখতে তারে
সে বির রাহী কই, কোথা বেনেয়াজ
তাকে খুঁজি আজ।।

-আহমদ নাসির উদ্দিন-

খেলাফতে রাশেদার প্রদীপ্ত পথ ধরে

খেলাফতে রাশেদার প্রদীপ্ত পথ ধরে
যুগে যুগে আমরাই জেগেছি
বুকে নিয়ে কোরানের বিপ্লবী পয়গাম
বারে বারে দেশে দেশে লড়েছি-
সত্যের সংগ্রাম করেছি।।

বদর ওহুদ আর তাবুকের ময়দান
পাড়ি মোরা দিয়েছি অতীতে,
সেরিঙ্গাপট্টম বালাকোট ঋনী হলো
আমাদের তেগ সঙ্গীতে
ধমনীতে লয়ে সেই শাহাদাত সঙ্গীত
মদীনার নব গীত গড়েছি।।

মোরা চির বিদ্রহী বিপ্লবী সৈনিক
মানিনা বিধান কোন মানুষের
আমরাই ভাংবো বাতিলের প্রাসাদ আর
ধিকৃত পথ যত বাতিলের
এরই পথে আমাদের সংগ্রাম সাধনা
প্রানবাজী এই পথে রেখেছি।।

-আহমেদ নাসির উদ্দিন-

আগামী দিনের নতুন সূর্য

আগামী দিনের নতুন সূর্য
আমরা উঠাবো ভাই
আমরা উড়াবো দ্বিনের পতাকা
শংকা মানিনা তাই।।

রক্ত যেখানে নিথর হয়েছে
আঁধার গেরেছে ভীত
আমরা সেখানে জ্বালাবো মশাল
আমরা ভাঙ্গাবো নঁঈদ।।

মানুষ যেখানে লাঞ্ছিত হয়
মানবতার অপমান
কোরানের ধারায় আমরা সেখানে
শান্তি ছড়াবো হেরার।।

-রফিকুল ইসলাম-

আমাদের প্রত্যয় একটাই

আমাদের প্রত্যয় একটাই
আল্লাহর পথে মোরা চলবো;
নিকষ কালিমা ভরা আকাশে
ধ্রুব জ্যোতি তারা হয়ে জ্বলবো।।

বিলিয়ে পাঁজরের রক্ত- উর্বর করবো এ দুনিয়া;
মুক্তির বান ডেকে যাবে ফের আমরা শত্রুর খুনিয়া-
আমাদের ঝরে গেছে রক্ত
ঝরুক না যত লাগে ঢাল্বো
তবু এই আঁধারে আ৬ধারের গহীনে
শান্তির দীপ জোরে জ্বালবো।।

লড়াকুর যত খুন ঝরবে, সব খুন মিশবে এ মাটিতে;
পরিণত করে দেবে দেশটা, আমাদের মজবুত ঘাঁটিতে।

আমাদের রুখবে কে কন্ঠ, প্রান দিয়ে সত্যকে বলবো;
বেঁধে জোট প্রানপন শক্তিতে- মুক্তির শত্রুকে দলবো।
ঈমানের শপথে যে দীপ্ত
আমরা না কোন দিন টলবো
বাতিলের কারাগারে, কারাগারে মজলুম
আমরাই তার দ্বার খুলবো
শ্বাশ্বত বিপ্লব ঘটবেই চেতনার সংগ্রামী রেশটায়
পৃথিবীর প্রান্তরে শেষটায় তৌহিদী পতাকাই উড়বে।।

-মীযানুল করীম-

কোনদিকে পথ নেই

কোন দিকে পথ নেই সব্দিকে বন্ধ যে দ্বার
কোন দিকে আলো নেই চারিদিক ঘিরেছে আঁধার
তবুও চলতে হবে
সামনে যেতেই হবে
পথ নেই মুক্তি পাবার।।

তাগুতের পথ ধরে শতবার মানুষের সুখ আমি চেয়েছি
বিবেকের কষাঘাতে বারে বারে পথভুলে ভুল পথে ঘুরেছি
পথ বল কোথা পাবো খুঁজে
দুখ ভরা বুকে ব্যথা কী যে
আর কত মরবো বারে বার।।

নিশুথ রাতে এক স্বপনে সেদিন
হাতছানি দিয়ে কে বলল আমায়
এস হেথা ভয় নেই নেই দুর্দিন
ভালবাসা ভরে আছে এই আঙ্গিনায়-

কুরানের দীপ হাতে এবার মানুষের কাছে যেই গিয়েছি
মনে হল বহুদিন পরে আবার পথহারা পথ খুঁজে পেয়েছি
উদ্যত কোন বাধা মানিনা
ঝনঝা ঝড় কিছু বুঝি না
চলবোই পথ ধরে আল্লার।।

-মুহাম্মাদ শামসুজ্জামান-

রক্ত দিয়ে লিখেছি এবার

রক্ত দিয়ে লিখেছি এবার
রক্তে রাঙ্গা নাম
প্রতিবাদ নয়, সামনে শুধু
প্রতিরোধ সংগ্রাম।।

আমারে মায়ের বুক ভাংলো যারা
আমার ভায়ের খুন কাড়লো যারা
সময় হয়েছে তার বুঝে নিতে
প্রতিশোঢ- প্রতিদান।।

রক্তের দামে চাই ফুলেল জীবন
রক্তের দামে চাই খোদায়ী শাসন
মানুষের অধিকার এনে দেবে
আমাদের রক্ত ও ঘাম।।

খুনের দরিয়া যত বাড়ছে বাড়ুক
বাধার পাহাড় যত আসছে আসুক
এ দুনিয়া জাহান।।

খুনের দরিয়া দেখে নাই কোন ভয়
সংগ্রাম এনে দেবে আমাদের জয়
মুক্তির পথে তাই সুঃসাহস
দৃপ্ত এ পা বাড়ালাম।।

-আসাদ বিন হাফিজ-

রক্ত সেচে লাগিয়ে ছিলাম

রক্ত সেচে লাগিয়ে দিলাম
একটি গোলাপ ঝাড়
সে ঝাড় হতে অনেক গোলাপ
দিলাম উপহার।।

ওদের ত্যাগের সুরভিতে
শান্তি দিও ধরনীতে
তবু ধুকে ধুকে বনি আদম
না মরে গো আর।।

আল্লাহ তুমি নিতে পারো
গোলাপ মোদের আছে আরো
তবু ঝান্ডা উড়ুক এই মাটিতে-
তোমার কালেমার।।

শাব্বির হামিদ আইউব জব্বার ভায়ের
রক্ত সুনীল সাহস প্রানের
জানি যুগে যুগে বলবে কথা
সিক্ত মতিহার।।

-ডাঃ মোর্শেদ আলী-

রমজানের এই রোজা পালন

রমজানের এই রোজা পালন
আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালন।

দেখতে হবে কে যে মোমীন
দেখতে হবে কে সে কমিন
তাইতো সবার খানা বারণ
তাইতো সবার পিনা বারণ।

ব্যস্ত মশগুল ফেরেশতাগন
খুলে দিয়ে জান্নাত তোরণ
দাঁড়িয়ে আছে যে সর্বক্ষন
বলছে শোন আহলান সাহলান।।
-এ কে এম নাজির আহ্মেদ
৯৬)লাঞ্ছিত মানবতা শঙ্কিত পৃথি আজ
লাঞ্ছিত মানবতা শঙ্কিত পৃথি আজ
দিকে দিকে দাবানল জ্বলছে
এ আকাশ এ বাতাস সত্যের মশালের
বাহকের সন্ধান করছে।।

মুছে তাই আরামের জড়তা
আনো আনো কোরানের বারতা
তৃষিত এ ধরা আজ করানের শিতলতা
নাহি পেয়ে ধুকে ধুকে মরছে।।

ওরে ও নিশানের বরদার
আজি এ রাত্রি ঝনঝার
তোমাদের আগমনে উজ্জ্বল প্রভাতের
সূর্য্য আলোক আশা করছে।।

-মাসুদ আলী-

জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ

জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ
বীর মুজাহিদ জিন্দাবাদ
হযরত আলীর বিপ্লবী খুন
তোর দিলে আজ হোক আবাদ।।

দুর্দম তোরা যোদ্ধা বির
মহাভীতি ভয় ধরিত্রীর
ঝনঝার বেগে নির্মূল কর
জালিম জনের স্বপ্ন সাধ
বৃষ্টির ভারে ভেঙ্গে পরে যেন
অত্যাচারির রাজপ্রাসাদ।।

আন ঝড় আন প্রান মাতাল
নাচুক ধরণী টাল মাটাল
ঘুমাইয়া যারা জাগিয়া দেখুক
উড়িছে আকাশে রক্ত চাঁদ
স্বাধীন তুমি যে মুসলিম তুমি
সেই বীর সেই দিন আজাদ।।

-আব্দুল করিম-

হে রমযান

হে রমযান, হে রমযান।
দাও স্বস্তি দাও শান্তি
ধরণীরে করো মনোরম;
তোমারে হেরিয়া বিশ্ব-বিবেক
সংযমে হোক দুর্দম।।

খোদায়ি নুরের বর্তিকা ধরো
নিখিল জাহান পবিত্র করো
জ্বিন ইনসানে দাও এনে দাও
রহমতেরই আবে জমজম।।

রসুলে খোদার আনন্দ বানী
দাও সবারি বক্ষে আনি
হক লা এলালা ইল্লাল্লাহ
একিন করাও হর দমে দম।।

নিজেকে চেনার এইতো পেয়েছি সময়
অবুঝ হয়ে ভুলে থাকা আর নয়
বুঝতে হবে আমায় জানতে হবে
মন কেন করে সদা আনচান।।

আমাকে আমার নফসকে জাগাতে হবে
প্রেমের মত সুখে দুখে অনুভবে
দেখতে হবে আমায় ভাবতে হবে
অন্তরে কি যে চাহে এই প্রান।।

-ফজলে এ খোদা-

স্বার্থচিন্তা মন্দ ভাবনা

স্বার্থচিন্তা মন্দ ভাবনা
আজ কোরবানী দে কোরবানী
দে কোরবানী অন্ধ বিশ্বাস
লোভ লালসা নাফরমানী।।

পরনিন্দা পরচর্চা
বাজে কর্ম বাজে খরচা
দে কোরবানী মন্দ ইচ্ছা
ভোগ বিলাসী জিন্দোগানী।।

খল শঠতা প্রবঞ্চনা
মিথ্যে ফাঁকি প্রতারনা
দে কোরবানী দুষ্ট বুদ্ধি
ছল চাতুরী রাহাজানি।।

-ফজলে এ খোদা-

আল্লাহ

আল্লাহ
আল্লাহ!
এই দেশ তোমারই দান
কৃতজ্ঞ আমরা তোমার কাছে
রেখো আমাদের মান।।

পাখীদের গুঞ্জন
শিশুদের কল্লোল
সূর্যের দীপ্তি
ফুল শাখে হিল্লোল
কোকিলের কুহু কুহু তান
এই সব তোমারই দান।।

বাতাসের সৌরভ
আকাশের নীলিমা
সবুজের গৌরব
আবিরের লালিমা
নদীনীর ঐ তান
এই সব তোমারই দান।।

-ইসাক ওবায়েদী-

শহর থেকে একটু দূরে

শহর থেকে একটু দূরে
সবুজ ঘেরা মাঠের শেষে
শাল পিয়ালের বন
তারই পাশে শুনতে পাবে
সরষে ক্ষেতে মৌমাছিদের
মধুর গুঞ্জরণ।
সেই তো আমার জন্মভুমি
ইচ্ছে হলে এসো তুমি
রইলো নিমন্ত্রন।

দেখবে সেথায় মাচার পরে
দোলে ঝিঙ্গে ফুল
লাউয়ের ডগায় গংগা ফড়িং
নাচে দোদুল দোলরে
নাচে দোদুল দোল।
কামিনী আর নেবু ফুলের
সুরভিতে হৃদয় ভোলেরে
সেথায় সারাক্ষন।।

শুনবে সেথায় ফিঙ্গে শ্যামার
মধুর মধুর গান
সকাল সাঁঝে রাখবে ভরে
তোমার সারা প্রান গো
তোমার সারা প্রান।
ঝিল্লি মেয়ের নুপুর শুনে
তন্দ্রা নামে দু’নয়নে
জড়ায় তনু মন।।

-সংকলিত-

লেখা আছে কত কথা

লেখা আছে কত কথা
সোনালী ফসলের ঘ্রানে
রূপালী নদির স্রোতে
লেখা আছে কত কথা।
আমার স্বদেশ পুণ্যভূমির
মধুর মধুর বারতা।।

পাখিরা ফুলের ঘাসের কুঞ্জ আসরে
মধুর বিলাসী অপ্রূপ তার বাসরে
কী হাওয়ায় দোলে মুহু মুহু
জীবনের যত রুপকথা।।

সব কথা ঝরে বৃষ্টি মাদলে
মায়াসম মিশে মাটিতে,
কাঙ্ঘিত শান্তি- আলো জ্বলে হেথা
মানুষেরা ফেরে চারিভিতে।।

প্রতিজ্ঞা জাগে মাদকতাময় উল্লাসে
শিশিরস্নাত সূর্যের রাঙ্গা আকাশে
কী যে ভালো লাগে তারে
ফুল হয়ে ফোটে ব্যথা!!

-আলমগীর জলিল-

জীবন ভরা পরের হিসাব মিলাইলাম

জীবন ভরা পরের হিসাব মিলাইলাম;
নিজের হিসাব খতিয়ে দেখার
সময় নাহি পাইলাম।।

দিনে দিনে বাড়লো দেনা
ফুরাইলো সব বেচা-কেনা
শেষে পাওনাদারদের তাড়নাতে
বাড়ী ছাইড়া পালাইলাম।।

পথে পথে ঘুইরআ বেড়াই
হইয়া দেশান্তর;
সেইখানে ভাই রাইত হইলো
যেথায় বাঘের ডর।।

খাইলো আমায় খাইলো বাঘে
আইলো না কেউ আমার ডাকে
আমি, থাকতে সময় কেন আগে
এমনি ভুল করিলাম।।

-সিরাজুল ইসলাম-

রাত্রি আঁধার একটি তারার গানে

রাত্রি আঁধার একটি তারার গানে
জাগে উম্মিদ মেঘ ঘেরা আসমানে।।

হে দিশারী কবি, তুমি সে রাতের তারা-
জাগিয়া একাকী জাগালে আলোর সাড়া;
পথের নিশানা খুঁজে পেল পথহারা,
ফিরে এলো আবে-হায়াতের সন্ধানে!!

যেখানে জালিম রচিয়াছে জিন্দান,
যেখানে নাজাত চেয়ে কাঁদে ইনসান-
সেই সে বেতাব বেখুদী অতল তলে
ধ্বনিল তোমার খুদীর অগ্নি-গান!!

মুমিনের দিল সেই আগুনের শিখা,
পেশানিতে তার জ্বলে চির- জয়টিকা;
দ’লে যায় পথে যত দুর্যোগ- লিখা
শাহীন- পাখায় সুদূরের অভিযানে!!

-তালিম হোসেন-

আজকে ওমর পন্থী পথির

আজকে ওমর পন্থী পথির
দিকে দিকে প্রয়োজন
পিঠে বোঝা নিয়ে পাড়ি দেবে যারা
প্রান্তর প্রানপন।

উষর রাতের অনাবাদী মাঠে
ফলাবে ফসল যারা
দিগ দিগন্তে তাদেরে খুঁজিয়া
ফিরিছে সর্বহারা।।

যাদের হাতের দোররা অশনি
পড়ে জালিমের ঘাড়ে
যাদের লাথির ধমক পৌঁছে
অত্যাচারির হাড়ে
আগুনের চেয়ে নিষ্কলংক
উদ্ধত লেলিহান
যাদের বুকের পাঁজরে পাঁজরে
বহে দরদের বান।।

-ফররুখ আহমেদ

মাটির মানুষ মাঠের মানুষ

মাটির মানুষ মাঠের মানুষ
ঘাটের মানুষ আর
এই জামাতে সবার সাথে
সমান দাবীদার।।

লাঙ্গল নিয়ে মাঠে যারা
জিন্দেগানী কাটায় তারা
সুখের ফসল দিয়ে কেবল
পায় যে দুঃখ ভার।।

যারা পথের মজুর হয়ে
পরের বোঝা বেড়ায় বয়ে
হাজার ব্যথার আগুন সয়ে
পায়না খুঁজে পার।

ঘরের বাঁধন না মেনে হায়
ভাসায় তরী নীল দরিয়ায়
জোয়ার ভাটায় শেষ হয়ে যায়
যাদের সমাচার।

-ফররুখ আহমেদ-

জেহাদী মাঠ দ্যাখ মুজাহিদ

ও তুই- জ্বেহাদী মাঠ দ্যাখ মুজাহিদ
ঐ জেহাদের ডাক আসে!
মরণ নদীর তীরে অধির
জিন্দেগানীর বাঁক আসে।।
ধ্বসিয়ে দিয়ে আবরাহার
মিথ্যা জুলুম অত্যাচার
খোদার ফউজ আসে যেমন
আবাবিলের ঝাঁক আসে।।

ওরা- তাকায়না কেউ পিছন পানে
চলে কেবল সন্মুখে
সকল বিপদ বাধার পথে
ওরা যে ভাই যায় রুখে।

যত- অত্যাচারের ছিঁড়তে টুঁটি
ওরা- মানেনা কেউ ভয় ভ্রুকুটি,
লাখ মুজাহিদ হলে শহিদ
আবার যে ভাই লাখ আসে।।

-ফররুখ আহমেদ-

জেহাদের এই ঝান্ডা আমরা

জেহাদের এই ঝান্ডা আমরা
চিরদিন উঁচু রাখবো
চির মোজাহিদ, সৈনিক মোরা
অতন্দ্র নিশি জাগবো।।

সব সংকটে সকল সড়োকে,
ঘুর্নাবর্তে, বজ্র কড়োকে
প্রলয় তুফানে,- শহিদী রক্তে
মুক্তির ছবি আঁকবো।।

হোক দুশমন অগণন, তবু
দেখাবো মরণ সন্ধ্যা!
নীতিহীনতার মরু বিয়াবনে
স্বপ্ন তাদের বন্ধা।।

আমরা অযুত জেহাদী জোয়ান
আল্লাহ রাহে হব কোরবান,
আওত্য ন্যায়ের পথে চিরদিন
সব মানুষেরে ডাকবো।।

-ফররুখ আহমেদ-

শোন মুজাহিদ

শোন মুজাহিদ
শোন মুজাহিদ! শোন জেহাদের
ঝান্ডা যেন রয় উঁচা,
ও তোর- জান যায় যাক, দ্বীন ঈমানে
ঝান্ডা যেন রয় উঁচা।।

জানের বদল পাবিরে তুই
চিরকালের জান্নাত ভুঁই,
খোদার নামে কসম নে ফের
ঝান্ডা যেন রয় উঁচা।।

কি লাভ করে বে- ঈমানী
মিথ্যাকে চল আঘাত হানি,
শোন হুঁশিয়ার;-নবীর পথের
ঝান্ডা যেন রয় উঁচা।।

বে-ঈমানী করার কুফল
জিন্দেগানী হবে বিফল,
পাবি সুফল, দুই জাহানের
ঝান্ডা যেন রয় উঁচা।।
-ফররুখ আহমেদ-
৮২) বল বজ্র কঠোর স্বরে নারায়ে তাকবীর
বল- বজ্র কঠোর স্বরে আবার
নারায়ে তাকবীরঃ
পাও- সাচ্চা দ্বীনের জ্বেহাদে ফের
রৌশন তকদির।।

বল- ইবাদাতের যোগ্য যিনি
অংশীবিহীন আল্লাহ তিনি,
আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে
নোয়াইনা তো শির।।

বল- আমরা শুধু আল্লাহ পাকের
দরবারে হই নত,
গুঁড়িয়ে চলি বাতিল মতের
পন্থা অবিরত।।

মোরা- দ্বীন ঈমানে অচঞ্চল
সত্য পথের যাত্রিদল,
চলব পিষে মিথ্যা পাপের
জিন্দান, জিঞ্জির।।

-ফররুখ আহমেদ-

এই জ্বিহাদী জিন্দেগী ভাই

এই জ্বিহাদী জিন্দেগী ভাই
জ্বেহাদ করো ফের।
যারা- জ্বেহাদ দেখেযায় পিছিয়ে
যাত পথে পাপের।।

মিথ্যাবাদূ ভন্ড যে জন
জ্বেহাদ দেখে পালায় সে জন,
চিরন্তনী ভূমিকা যে
এ মুনাফিকের।।

খোদার প্রিয় বান্দা যারা
এই পথে ভাই এস তারা,
রাখো সুনাম, সন্মান
নবীর উম্মতের।।

সেই মালেকুল মুলক যিনি
পূর্ণ বিজয় দেবেন তিনি,
তাঁর অভয়ে নাই তো কারন
হতাশা ভয়ের।।

-ফররুখ আহমেদ-

আল কুরআন

পবিত্র পাক গ্রন্থ খোদার,
যার মহিমার নাইতো ক্ষয়
মুত্তাকীদের দিশারী আর
পূর্ণ জ্ঞানের এ সঞ্চয়।

নাজিল হল পুণ্য কালাম
রমজানেরি কদর রাতে,
রোশনী যে তার ছড়িয়ে গেলো
সব আলমে বিশ্বময়।।

নাজিল হলে পাহাড়ে যা
পাহাড় যেতো দীর্ণ হয়ে
রাখলো তাকে নবির হৃদয়
সত্য জ্ঞানে অসংশয়।।

স্রষ্টার এ পরিচিতি
পুণ্য কালাম তৌহিদের
জ্বলন্ত এ সাক্ষ্য প্রমান
চিরন্তনী এ দুর্জয়।।

জ্ঞান বিজ্ঞান্ময় এ কোরান
কাটে আঁধার অজ্ঞতার,
সৃষ্টি লোকের রহস্য যা
বিলায় আলো সুনিশ্চয়।।

-ফররুখ আহমেদ-

সব মানুষের হক

সব মানুষের হক আদায়ের দিলে গুরুভার,
এবার- দাওগো মদদ নিতে খোদা দায়িত্ব অপার।।

নিখিল বিশ্ব চালক তুমি,
স্রষ্টা, প্রতিপালক তুমি,
জগৎ ব্যাপি প্রভু তোমার বিচিত্র সংসার।।

রুজীর মালিক, বিপদ-ত্রাতা,
তুমি জীবন- বিধান দাতা,
সব মানুষে দিলে সমান বাঁচার অধিকার।।

সত্য, সুপথ দেখাও তুমি,
পাঠিয়ে নবী শেখাও তুমি,
কারো পরে কেউ না যেন করে অবিচার।।

যেন কন্ঠ কারো রুদ্ধ না হয়,
পায় বিচারের সমান অভয়
পায় সকলে সমান নীতি শাস্তি পুরস্কার।।

করতে পুরা ইনসানিয়াৎ
তোমার নবী দেখান যে পথ,
পূর্ণ মনুষ্যত্ব যে সেই সাম্য, সুবিচার।।

ত্যাগ ও ক্ষমা নজীর- বিহীন
তোমার রাসুল দিলেন সে দিন,
খিদ্মতেরি পন্থা মহান দিলেন সারওয়ার।।

মাতা পিতার হক আদায়ের,
করতে আদায় হক স্বজনের,
কঠিন তাকিদ দেন যে নবী করেন হুঁশিয়ার।।

অনাথ এতিম দুঃস্থ যারা
হিস্যা তাদের পায় সে তারা,
বজ্রকঠোর জাকাত আইন জানি যে তোমার।।

সাচ্চা মুমিন নয় কভু নয়
পড়শী যার ক্ষুধিত রয়,
ভুরি ভোজে ভরায় যে জন উদর আপনার।।

পূঁজিবাদীর লোভ, পিপাসা
অন্তবিহীন পূঁজীর আশা,
সব কারুনের দুয়ারে মৃত্যু সমাচার।।

দিকে দিকে ফরমান যায়
মজুর যেন মজুর পায়
ঘাম শুকানোর আগেই যে হয় পাওনা দাবী তার।।

বিস্মিত এ বিশ্ব জাহান,
দেখে তোমার পুণ্য বিধান
দুখীর বোঝা নিয়ে চলেন খলিফা আমার।।

বর্ণ বিরোধ ঘুঁচিয়ে দিয়ে,
দেশের সীমা মুছিয়ে দিয়ে,
তোমার দেওয়া দ্বীন করে সেই পক্ষ যে বিস্তর।।


শোষন, ত্রাসন, জুলুম যত
হয় অতীতের কুক্ষিগত,
হয়-অত্যাচারীর সাথে ধ্বংস সকল অত্যাচার।।

দ্বীনের মশালবাহী যারা
আজ দুনিয়ায় নামুক তারা,
আবার জাগুক ধরায় হক ইনসাফ সাম্য সুবিচার।।

-ফররুখ আহমেদ-

সৃষ্টির হক

তোমার বিপুল বিশ্বে প্রভু!-হে বিশ্ব পালক।
তুমি- সবার তরে দাও অধিকার, দাও সবারে হক।।

স্রষ্টা তোমার সৃষ্টিতে এই
অশেষ দয়ার অন্ত যে নেই,
প্রবঞ্ছনা করে শুধু
জালিম প্রতারক।।

খালেক তুমি দিয়েছ হক কুল মখলুকের,
দিয়েছ হক তুমি সকল পানীর ও প্রানের।।

তোমার বিপুল জগৎ সভায়
নামুক মুমিন তার ভূমিকায়,
যেন- ইনসাফ হক করতে কায়েম
না রয় পলাতক।।

-ফররুখ আহমেদ-

প্রতিবেশী ও এতিম মিস্কিনের হক

প্রতিবেশী ও এতিম মিস্কিনের হক
(সুরা মাউনের ভাবানুসরনে)

ঐ ধর্মকে সে মিথ্যা বলে,
মিথ্যা জানে দ্বীন,
দ্বার থেকে যার বিতাড়িত
এতিম – পিতৃহীন।

দেয়না সে জন, চায়না কভু
দ্বারে যদি আসে তবু
পায় না ক্ষুধার আহার মুখে
দুঃখী ও মিসকিন।

দিতে “মাউন” মুক্ত মনে
প্রতিবেশী পরিজনে
নিষেধ জানায় সে মন্দ জন
চির ভাগ্যহীন।।

-ফররুখ আহমেদ-

হক

তোমার হক আদায় করার দাও খোদা তৌফিক
তোমার ইবাদাতের আমরা যেন কেউ না ভুলি দিক।।

দিলে তুমি দান যে অপার
হয়না তো যার সংখ্যা শুমার
তোমার- আলো, বাতাস, জগৎ জীবন অগণ্য রিজিক।।

ভ্রুনের মুখে আহার দিয়ে
অজ্ঞাতে প্রান দাও বাঁচিয়ে
অযাচিতে দাও সেরা দান দ্রষ্টা অনিমিখ।।

তুমি দেখার শক্তি দিলে
শ্রবন হৃদয়, ভক্তি দিলে
পূর্ণ করে দিলে ধরায় সত্তা মানবিক।।

দিলে নভে চাঁদ সিতারা,
সাত সাগরে স্রোতের ধারা,
তোমার সে দান পাই জীবনে কাজে প্রাত্যহিক।।

তোমার নবীর উম্মত যে
তোমার কাছে হিম্মৎ সে,
নির্ভুল সে কালেমাতে যাত্রি সাহসীক।।

ফররুখ আহমেদ-

চল মোমিন, চল আবার জুমার জামাতে

চল মোমিন, চল আবার জুমার জামাতে,
রহমতেরি খুলবে দুয়ার জুমার জামাতে।।

ভুল করেছ বিপথগামী আঁধার সড়কে,
পাবে ঝলক নতুন আশার;- জুমার জামাতে।।

ভুল করেছ সঙ্গীহারা জুলুমাতেরি তীরে
আসবে আলো নতুন ঊষার;- জুমার জামাতে।।

যুগ জামানার জাহেলিয়াত পড়বে ধুলায় লুটে,
জাগবে হৃদয় নিখিল ধরার;-জুমার জামাতে।।

গাফেল তুমি রইবে কেন শক্তিবিহীন একা,
পাবে খুঁজে মদদ খোদার;- জুমার জামাতে।।

-ফররুখ আহমেদ-

এল জুমার দিন যে ফিরে

এল জুমার দিন যে ফিরে
এল জুমার দিন!
এ দিন আসে জাগিয়ে দিতে
সত্য পথের চিন।।

পাপে ভোগে যখন মানুষ,
পাপের নেশায় হারায় সে হুঁশ,
এ দিন ফিরে আসে তখন
শুভ অমলিন।।

সত্য, সঠিক অন্থা চিনে
মোমিন জাগে ফের এ দিনে,
খোদার প্রেমের ইবাদতে
হয় সে তখন লীন।।

পায় যে মোমিন পথ খুঁজে তার
দুই জাহানের সফলতার,
বিশ্বাসীদের জামাতে যার
চিত্ত সুরঙ্গিন।

-ফররুখ আহমেদ-

নও বেলালের কন্ঠে ভাসে জুমার আহবান

নও বেলালের কন্ঠে ভাসে জুমার আহবান,
ঐ আজানের শব্দে জাগে সকল মুসলমান।।

কূল মাখলুক পয়দা হল এ পাক দিনে ভাই,
সৃষ্টি হল তামাম আলম, দুনিয়া জাহান।।

এই দিনে রোজ কেয়ামত বিশ্ব হবে লয়,
হাশরে মাঠে এ দিনে ফের হবে যে উত্থান।।

তাইতো মোমিন নেয় বুঝে এই দিনের ফজিলৎ
জুমআ নামাজ পড়তে আবার চলে যে ইনসান।।

শক্তি, সাহস পায় সে খুঁজে জুমার জামাতে,
দুনিয়াতে করতে কায়েম খোদার সংবিধান।।

-ফররুখ আহমেদ-

এই জুমার দিনে দুনিয়া জাহানে

এই- জুমার দিনে দুনিয়া জাহানে
মোমিন, জামাতে দাঁড়াও,
যত- অজ্ঞতা, পাপ, অক্ষমতা ও
দুর্বলতারে তাড়াও।।

নব উদ্যমে, নবীন আশাতে
পূর্ণ জামাতে এস এক সাথে,
এই জামাতের মহা শক্তিতে
সকল জড়তা নাড়াও।।

আত্নার বলে হ’ইয়ে বলীয়ান
চল দিকে দিকে বিশ্বাসী প্রান,
যত বাধা আর প্রতিবন্ধক
দু’পায়ে সকলি মাড়াও।।

তৌহিদী আলো বুকে নিয়ে আজ
তোল দিকে দিকে বুলন্দ আওয়াজ,
অগ্রগতির সকল সড়কে
নকীব, কদম বাড়াও।।

-ফররুখ আহমেদ-

জিন্দেগী নয় একলা থাকার

জিন্দেগী নয় একলা থাকার
এস মুমীন এই জমাতে,
কঠিন যা নয় একলা করার
করো সবাই লক্ষ হাতে।।

হও জামাতে শামিল সবাই,
দলের মাঝে ভয় কিছু নাই,
থাকতে সময় হে বিশ্বাসী
কাজ করে যাও সবার সাথে।।

কঠিন কাজের, কঠিন শ্রমের।
এই জেহাদী জিন্দেগানী,
দল ছেড়ে রয় দূরে শুধু
স্বার্থবাদী, লোভী প্রানী।।

একলা রবে শুন্যে গোরে
ডাকবেনা কেউ সে দিন তোরে
বন্ধু তুমি নেমোনা আর
স্বার্থবাদীর ভূমিকাতে।।

-ফররুক আহমেদ-

নামাজ পড় জামাতে ভাই

নামাজ পড় জামাতে ভাই
কাটবে তোমার আঁধার রাত,
নতুন করে লেখা হবে
ভাগ্যলিপি এই বরাত।।

সঙ্গীবিহীন রাতের তারা
পাবে নিযুত আলোর ধারা,
পাবে খোদার রহমত আর
পাবে যে তাঁর মাগফিরাত।।

এই জামাতে কুঅতে ভাই
যাবে তোমার দুর্বলতা,
বিন্দু হবে সিন্ধু সমান
ভাসিয়ে দেবে সব জড়তা।।

ইনকিলাবী রূপ যে তোমার
ফুটবে চখে এই দুনিয়ার,
নতুন করে গড়বে ধরা
কুল মুমিনের এই জমাত।।

-ফররুখ আহমেদ-

ওরে গাফিল করিসনে তুই

ওরে গাফিল করিসনে তুই
নামাজে আর শিথিলতা,
নবীর অনুগামী মনে
রাখিস নবীর শেষ বারতা।।

“নামাজে ঠিক রও হুঁশিয়ার”
বলেন রাসুল।– হাবীব খোদার,
বিদায় বেলায় দেন জানিয়ে
নূর নবী তাঁর এ শেষ কথা।।

হারাম নেশায় মত্ত থেকে
কি ফল পাবি পাপের পথে,
প্রথম, হিসাব এই নামাজের
হবে রে ভাই কেয়ামতে।

জাহান্নামে লাভ কিছু নাই,
রহমতেরি পন্থা নে ভাই,
পাবি খোদার করুনা আর
অন্তবিহীন প্রেম মমতা।।

-ফররুখ আহমেদ-

ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে

ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাকিদ।।

তোর সোনাদানা বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ
দে জাকাত মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙ্গাইতে নিঁদ।।

তুই পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।।

আজ ভুলে গিয়ে দোস্ত দুশমন হাত মিলাও হাতে,
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরিদ।।

যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা নিত- উপবাসী
সেই গরীব মিস্কিন দে যা কিছু মফিদ।।

ঢাল হৃদয়ের তোর তশতরীতে শিরনী তৌহিদের,
তোর দওত করবুল করবেন হযরত, হয় মনে উমিদ।।

তোরে মারল ছুঁড়ে জুড়ে ইঁট পাথর যারা
সেই পাথর দিয়ে তোলরে গ’ড়ে প্রেমেরি মসজিদ।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

বাজল কিরে ভোরের সানাই

বাজল কিরে ভোরের সানাই
নিঁদ মহলার আঁধার পুরে!
শুনছি আজান গগন তলে
অতীত রাতের মিনার চূড়ে।।

সরাই-খানার যাত্রিরা কি
“বন্ধু জাগো” উঠলো হাঁকি?
নীড় ছেড়ে ঐ প্রভাত পাখী
গুলিস্তানে চলল উড়ে।।

আজ কি আবার কাবার পথে
ভীড় জমেছে প্রভাত হ’তে;
নামল কি ফের হাজার স্রোতে
‘হেরার জ্যোতি জগত জুড়ে।।

আবার খালিদ তারিক মুসা
আনল কি খুন- রঙ্গিন ভূষা,
আসল ছুটে হাসী ঊষা
নও বিলালের শিরীন সুরে।।

তীর্থ পথিক দেশ বিদেশের
আরফাতে আজ জুতল কি ফের
“লা শরীক আল্লাহু”- মন্ত্রের
নাম্ল কি বান পাহাড় তুরে।।

আঁজলা ভ’রে আনল কি প্রান
কারবালাতে বির শহীদান,
আজকে রওশন জমীন আসমান
নও জাওয়ানির সুরখ নূরে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

তওফিক দাও খোদা

তওফিক দাও খোদা
মুসলিম- জাহাঁ পুনঃ হক আবাদ।
দাও সেই হারানো সুলতানত,
দাও সেই বাহু, সেই দিল আযাদ।।

দাও সেই হামজা সেই বীর অলীদ
দাও সেই ওমর হারুন আল রশিদ
দাও সেই সালাহউদ্দিন আবার
পাপ দুনিয়াতে চলুক জেহাদ।।

দাও বে-দেরেগ তেগ জুলফিকার
খয়রব জয়ীশেরে- খেদার,
দাও সে খলিফা সে হাশমাত
দাও সে মদিনা সে বাগদাদ।।

দাও সেই হামজা সেই বীর অলীদ
দাও সেই ওমর হারুন আল রশিদ
দাও সেই সালাহউদ্দিন আবার
পাপ দুনিয়াতে চলুক জেহাদ।।

দাও সে রুমী সাদী হাফিজ
সেই জামী খৈয়াম সে তবরিজ;
দাও সে বাবর সেই শাহজাহান
সেই তাজমহলের স্বপ্ন সাধ।।

দাও ভায়ে ভায়ে সেই মিলন
সেই স্বার্থত্যাগ সেই দৃপ্ত মন,
হোক বিশ্ব- মুসলিম এক জামাত
উড়ুক নিশান ফের যুক্ত চাঁদ।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা

বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা
শির উঁচু করি মুসলমান।
দাওয়াত এসেছে নয়া যমানার
ভাঙ্গা কেল্লায় ওড়ে নিশান।।

মুখেতে কালেমা হাতে তলোয়ার,
বুকে ইসলামী জোশ দুর্বার,
হৃদয়ে লইয়া এশক আল্লাহর
চল আগে চল বাজে বিষান।
ভয় নাই তর গলায় তাবিজ
বাঁধা যে রে তোর পাক কোরান।।

নহি মোরা জীব ভোগ- বিলাসের,
শাহাদাত ছিল কাম্য মোদের,
ভিখারির সাজে খলীফা যাদের
শাসন করিল আধা জাহান-
তারা আজ পড়ে ঘুমায়ে বেহুঁশ
বাহিরে বহিছে ঝড় তুফান।।

ঘুমাইয়া কাজা করেছি ফজর,
তখনো জাগিনি যখন যোহর,
হেলা ও খেলায় কেটেছে আসর
মাগরিবের আজ শুনি আজান।
জামাত শামিল হওরে এশাতে
এখনো জমাতে আছে স্থান।।

শুকনো রুটিকে সম্বল ক’রে
যে ঈমান আর যে প্রানের জোরে
ফিরেছে জগত মন্থন ক’রে
সে শক্তি আজ ফিরিয়ে আন।
আল্লাহ আকবর রবে পুনঃ
কাঁপুক বিশ্ব দূর বিমান।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

Friday 25 February 2011

যে দুর্দিনের নেমেছে বাদল

যে দুর্দিনের নেমেছে বাদল তাহারি বজ্র শিরে ধরি
ঝড়ের বন্ধু, আঁধার নিশীথে ভাসায়েছি মোরা ভাঙ্গা তরী।।

মোদের পথের উঙ্গিত ঝলে বাঁকা বিদ্যুতে কালো মেঘে,
মরু পথে জাগে নব অঙ্কুর মোদের চলার ছোঁওয়া লেগে,
মোদের মন্ত্রে গোরস্থানে আঁধারে ওঠে গো প্রান জেগে,
দীপ-শলাকার মত মোরা ফিরি ঘরে ঘরে আলো সঞ্চরি।।

নব জীবনের ‘ফোরাত’-কুলে গো কাঁদে ‘কারবালা’ তৃষ্ণাতুর,
উর্ধ্বে শোষন- সূর্য, নিম্নে তপ্ত বালুকা ব্যথা-মরুর।
ঘিরিয়া ইউরোপ- এজিদের সেনা এপার ওপার নিকট, দূর,
এরি মাঝে মোরা ‘আব্বাস’ সম পানি আনি প্রানপন করি।।

যখন জালিম ‘ফেরাউন’ চাহে ‘মুসা’ ও সত্যে মারিতে ভাই,
নীল দরিয়ার মোরা তরঙ্গ বন্যা আনিয়া তারে ডুবাই।
আজো নমরুদ ইসবরাহীমেরে মারিতে চাহিছে সর্বদাই,
আনন্দ- দূত মোরা সে আগুনে ফোটাই পুশপ- মঞ্জরী।।

ভরসার গান শুনাই আমরা ভয়ের ভুতের এই দেশে,
জরা- জীর্ণের যৌবনে দিয়া সাজাই নবীন বর- বেশে।
মোদের আশার ঊষার রঙ্গে গো রাতের অশ্রু যায় ভেসে,
মশাল জ্বালিয়া আলোকিত করি ঝড়ের নিশীথ- শর্বরী।।

নতুন দিনের নব জাত্রিরা চলিবে বলিয়া এই পথে
বিছাইয়া যাই আমাদের প্রান, সুখ, দুখ, সব আজি হতে।
ভবিশ্যতের স্বাধীন- পতাকা উড়ীবে যেদিন জয় রথে
আমরা হাসিব দূর তারা- লোকে অগো তোমাদের সুখ স্মরি।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

ধর্মের পথে শহীদ যাহারা

ধর্মের পথে শহীদ যাহারা আমরা সেই সে জাতি।
সাম্য মৈত্রী এনেছি আমরা বিশ্বে করেছি জ্ঞাতি।
আমরা সেই সে জাতি।

পাপবিদুগ্ধ তৃষিত ধরার লাগিয়া আনিল যারা
মরুর তপ্ত বক্ষ নিঙ্গাড়ি শীতল শান্তিধারা;
উচ্চ-নীচের ভেদ ভাঙ্গি দিল সবারে বক্ষ পাতি।
আমরা সেই সে জাতি।।

কেবল মুসলমানের লাগিয়া আসেনি ক ইসলাম
সত্যে যে চায়, আল্লায় মানে, মুসলিম তারি নাম।
আমীর –ফকিরে ভেদ নাই সবে সব ভাই এক সাথী
আমরা সেই সে জাতি।।

নারীরে প্রথম দিয়াছি মুক্তি নর- সম অধিকার
মানুষের গড়া প্রাচির ভাঙ্গিয়া করিয়াছি একাকার,
আঁধার রাতের বোরখা উতারি এনেছি আশার বাতি।
আমরা সেই সে জাতি।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

রাসুল তুমি যে আমার

রাসুল তুমি যে আমার
হৃদয় বাগের বুলবুল
তোমার সুরের নিবিড় ছোঁয়ায়
তাইত হয়েছি ব্যাকুল।।

মরুর বুকে যে অতুল সুরভী
যে ফুলের পাগল আকবি কবি
সেই ফুল থেকে ঘ্রান নিতে আমার প্রান
হয়েছে আকুল।।

খোদার হাবিব হে ভুবনচারী
আলোর পথের যে দিশারী
তাইতো তোমার গান গেয়ে দিবা যাম
রয়েছি মশগুল।।

-সালমান আযামী-

বন্ধুগো আয় গাইনা সবাই

বন্ধুগো আয় গাইনা সবাই
গাইবো সবাই মিলে নুর নবিজির গান
প্রেমে প্রেমে প্রানের সুরে
সুরে সুরে এসো ধরি মধুর তান।।

যে নবীজি ছোট্ট বেলায় ছিলেন বড় ভাল
কাজের মাঝে খুঁজে পেতেন শান্তি সুরের আলো
মিথ্যা কভু বলতেন না
পাপের পথে চলতেন না
সেই নবীজির প্রেমে প্রেমে কন্ঠে আসুক সুরের বাণ।।

জিব্রিল তাকে বলেছিলেন পড় আল্লাহর নামে
তোমার প্রভুর পথে ডাক ঘাম ও খুনের দামে

সে আদেশের অন্যথা তার হয়নিকো জীবনে
সে ইতিহাস গেয়ে গেয়ে রাখবো যে স্মরনে
কখনো তা ভুলবো না
তার মতনই ন্যায়ের পথে ধরব মোরা অসি খরসান।।

-সালমান আযামী-

হে নবী আবার নেমেছে ধরায়

হে নবী আবার নেমেছে ধরায়
আইয়ামে জাহেলিয়াত
কে আবার এসে তোমার মতন
বাড়াবে দরদী হাত।

তুমি না এলেও আছো তুমি
আল হাদিসের বুকে লেখা
সে লেখা জীবনের সাথে আজ কারো
হয়না কেন যে দেখা;
শতকরা এক ভালো মানুষেরা
করছে অশ্রুপাত।।

জুলুম শোষন জেনা নেশা পাপ
জালিমের অত্যাচার
এসে দেখে যাও জাহেলিয়াতের
যুগকে মানায় হার।।

তুমি নাই তবু আছে ইসলাম
কোরান হাদিস আজি
নাই শুধু তার অনুসারী নাই
হক বিচারের কাজী
বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে
কেঁদে ফেরে দিনরাত।।

-মানিক মাহবুবুর রহমান-

রাহমাতুল্লিল আলামীন, সারদারে আল কাওনাইন

রাহমাতুল্লিল আলামীন, সারদারে আল কাওনাইন
কামলিওয়ালা পেয়ারা নবী নাওগো ছালাম, নাওগো ছালাম।।

তুমি তো রহমতেরই শুধা হয়ে এলে ভবে
তোমারই আগমনে হেদায়াত পেলো সবে
তোমারই নুরের ছোঁয়ায় উঠলো জেগে বসুন্ধরা
তোমারই খাছ ওছিলাতে সুন্দর এই সারা জাহান।।

যতদিন তোমার আনিত হেদায়াত মানুষ ছিল ধরে
ততদিন রহমতেরই দরিয়া ছিল তাদের ঘিরে
শান্তি ও সুখ ছিল দিকে দিকে দিশ- বিদিশায়
ধুকে ধুকে মরেনি মানুষ অনাহার আর দরিদ্রতায়
তোমায় পেয়ে এ ধরার
ঘুঁচলো সকল অন্ধকার
পাপী তাপী সবার তুমি রহমতে আম।।

কোনদিন কারো থেকে প্রতিশোধ নাওনি তুমি
সকলের মুক্তি তরে করেছো দোয়া দিবস যামী
শত্রু মিত্র সবার তুমি ছিলে মহান আমানতদার
আল-আমীন উপাধি তাই ছিলো তোমার পাওনা উপহার
চেয়ে চেয়ে মাগফেরাত
কাঁদবো যেদিন আখেরাত
তুমিই শুধু সাফায়াতের দেবে আনজাম।।

-তারিক মোহাম্মদ মনোয়ার হোসাইন-

লক্ষ চাঁদের আলো নিয়ে

লক্ষ চাঁদের আলো নিয়ে তুমি এলে হে রাসুল
লক্ষ ফুলের সুবাস নিয়ে তুমি এলে
হে রাসুল

তোমার ছোঁয়ায় উঠলো মেতে
রিক্ত ধরা কুল আলম
দিকে দিকে পড়লো সাড়া
তওহীদেরই খোশ কালাম
ফিরে এলো ফের সুখের ফাগুন
ধরা তোমায় পেয়ে ব্যাকুল
হে রাসুল।।

তুমি বিনা চির সুখের
জান্নাতেরি পথটি ভুল
আমরা তোমার চলতে পথে
যাঁচি দোয়া হে রাসুল
যুক্তির পথে অকাতরে থাকি যেন
চির আকুল
হে রাসুল।

-আব্দুল হালিম চৌধুরী

তুমি রহমতে আলম

তুমি রহমতে আলম জানে তা
সারা দুনিয়া
রহমতে নেভে দোযখ
দারুন হাবিয়া।।

তুমি নবী কামলিওয়ালা
যার নুরে ভুবন আলা
আসে বৃষ্টির মত
রহমত অবিরত
ঝরিয়া ঝরিয়া।।

তার নামের সুরভিতে
ঊঠলো ভুবন মেতে
কুল মাখলুক সে নাম
গাহিছে সুবহে ও সাম
মজিয়া মজিয়া।।

সবাই পড় সাল্লে আলা
আর মিটাও প্রানের জ্বালা
প্রেমে তার হওনা পাগল
দুচোখ নামাও বাদল
স্মরিয়া স্মরিয়া।।

-তোফাজ্জল হোসাইন খান-

রাহমাতুল্লিল আলামীন

রাহমাতুল্লিল আলামীনের কে পেল সনদ?
সে যে নবী মোহাম্মদ,
আমার নবী মোহাম্মদ।

কে শুনাল এই দুনিয়ায় আছমানী ফরমান?
কে কহিল খোদার কাছে সবাই এক সমান?
কে শিখালে আল্লাহ নামের মন্ত্র সুমহান
কে কহিল আল্লা নামের
নাই সীমা সরহদ।।

কে কহিল মায়ের পায়ের তলায় স্বর্গ রয়
কে কহিল আশেক জনের নাইরে মরন ভয়
কে কহিল মোমেনেরা করবে সবই জয়
কে আনিল মরুভূমে
চির শান্তির স্বাদ
সে যে নবী মোহাম্মদ
আমার নবী মোহাম্মদ।।

-সৈয়দ আসাদউদ্দৌলা শিরাজী

পুল সিরাতের সাথি তিনি নাম মোহাম্মদ সাল্লেআলা

পুল সিরাতের সাথি তিনি নাম মোহাম্মদ সাল্লেআলা
আমার প্রিয় হযরত মোহাম্মদ শাহে মোহাম্মদ কামলিওয়ালা।।

মদিনার ঐ গুল বাগিচায়
ডাকলো যে কোন বুলবুলি
আর তন্দ্রা থেকে উঠলো জেগে
সারা জাহান চোখ মেলি
উঠলো গেয়ে সুর মিলিয়ে লাইলাহা ইল্লাল্লাহ।।

তার সে পথের সোনার রেখায়
ফেরদৌসেরি স্বপ্ন আঁকা
আর তার সে সবুজ চারন ভূমি
জিন্দেগানীর ফুল বীথিকা।
আমার নেতা তোমার নেতা বিশ্বনবী মোস্তফা।।

-সংকলিত-

দ্বীনের নবী নুরের ছবি

দ্বীনের নবী নুরের ছবি
এলেন দুনিয়ায়,
সারা-জাহান আলোকিত
নুরেরই আভায়ঃ
যার নুরেরই আভায়।।

তাঁহার মধুর মহান বানী
হাদিস বলে আমরা মানি
আজ- তামাম জাহান এলো ফিরে
নবীর তরিকায়।।

তারই শাফায়াতের তরে-
সঙ্গোপন জীবন ভরে।
ডাকি আমি, পড়ি দরুদ
নিশি নিরালয়।।

-আব্দুল হাই আল হাদী

হয়ে খোদার প্রতিনিধি

হয়ে খোদার প্রতিনিধি
এলেন মোহাম্মদ-
দীপ্ত আলোর ঝলক তিনি
নিখিল প্রেমাস্পদ।।

বিশ্ব যখন পংকিলতায়
ছিল নিমজ্জিত-
মজলুমেরই আর্তনাদে
ছিল প্রকম্পিত,
কোরান হাতে এলেন তিনি
দেখাতে সুপথ।।

নুরের নবী এই ধরণীর
অতুল সম্পদ-
মখলুকাতের সেরা যিনি
তিনিই মোহাম্মদ-
তারই জন্য সৃষ্টি হলো-
জাহানেতাবতা।।

-আব্দুল হাই আল- হাদী

মন ভোমরা মজলিনা তুই

মন ভোমরা মজলিনা তুই
রসুল নামের রসে;
ও তুই গাইলিনা তাঁহার গুনগান
রইলিনা নিজ বশে।।

সবুজ বনের অবুঝ পাখি
ওরে সেও বসিয়া নিরালে
প্রান খুলিয়া গায় তাঁরি গান
সন্ধ্যায় ও সকালে,
ও তোর দিন গেলো হায় বিষয় চিন্তায়
রাত কাটে আলসে।।

ফুল থুইয়া তুই ওরে ভোমর
কুড়াইলিরে ভুল;
তাইতো মধু পাইলিনারে
হারাইলি দুই কুল।

রসুল নামের যে ফুল সুধায়
ওরে ভোমর ক্ষুধা তৃষ্ণা রয়না
সেই অমৃত স্বাদ পাইলো যে
আর কিছু সে চায়না
সে, নামের মালা জুড়ায় জ্বালা
মধুময় পরশে।।

-সিরাজুল ইসলাম-

নবী মোর পরশ মনি

নবী মোর পরশ মনি
নবী মোর সোনার খনি
নবী নাম জপে যে জন সেইতো দোজাহানের ধনী।।

নবী মোর নুরে খোদা
তার তরে সকল পয়দা
আদমের কলবেতে তারই নুরের রৌশনী।।

ঐ নামে সুর ধরিয়া
পাখী যায় গান করিয়া
ঐ নামে আকুল হইয়া ফুল ফোতে সোনার বরণী।।

চাঁদ সুরুয গ্রহ তারা
তারই নউরের ইশারা
নইলে যে অন্ধকারে ডুবিত এই ধরণী।।

নিদানে আখেরাতে
ত্বরাইতে পুল সিরাতে
কান্ডারী হইয়া নবী পার করিবেন সেই তরণী।।

-সিরাজুল ইসলাম-

জাগো জাগো হে মুসাফির

জাগো, জাগো হে মুসাফির!
এই রবিউল আউয়ালে,
দীর্ণ হবে দুখের তিমির
এই রবিউল আউয়ালে।।

রাত্রি যাবে বিভীষিকার,
যাত্রি শোন দূর পথে
মুক্ত হবে কিরণ রবির
এই রবিউল আউয়ালে,

তাঁর আগমন হ’ল যিনি
রাহ্মাতুল্লিল আলামিন,
নেতা যিনি সকল নবীর;-
এই রবিউল আউয়ালে।।

জালিম যারা, শোষক যারা
মরণ বাণী আজ শোন,
দিন হ’ল শেষ জুলুম শাহীর
এই রবিউল আউয়ালে।।

ইনসাফ, হক, সাম্যবিধি
করতে কায়েম এক সাথে
আসলো জুতে আমীর ফকীর
এই রবিউল আউয়ালে।।

ইনসানিয়াৎ ওঠে জেগে,
জাহেলিয়াৎ যায় দূরে,
যুগ হ’ল শেষ খুন খারাবীর
এই রবিউল আউয়ালে।।

নতুন যুগের সূচনা এই,
জীর্ণ জ্বরা যায় ঝরে,
মুক্তি এল শিশুর, নারীর
এই রবিউল আউয়ালে।।

ধূলিতে আজ বেহেশত নামে,
নিখিল ধরায় আজ দেখি
মজলুমানের মিছিল খুশীর
এই রবিউল আউয়ালে।।

তামাম আলম, কুল মাখলুক
তাকায় নতুন আশ্বাসে
কা’বার পথে মত্ত অধীর
এই রবিউল আউয়ালে।।

ইনকিলাবের বার্তা এল
বিপর্যয়ের দিন শেষে,
তৌহিদী সুর কন্ঠে কবির
এই রবিউল আউয়ালে।।

-ফররুখ আহমেদ-

তোমার ইন্তেজারিতে

তোমার ইন্তেজারিতে ছিল যে চেয়ে নিতি
জ্বিন, ইনসান, জমিন, পাহাড়, নভঃ ক্ষিতি,
এল যবে নবী কাটিল ধরার ভয় ভীতি
খোশ আমদেদ জানালো তোমাকে হে অতিথি।।

আসিলে খোদার খাস রহমত ধরাতলে,
জান্নাত ছেড়ে নামে ফেরেশতা দলে দলে,
জাগে খোশ্রোজে খুশির আওয়াজ প্রতি পলে
ফোতে মানুষের কন্ঠে আশার কলগীতি।।

সৌভাগ্যের খুলিল দুয়ার এতদিনে,
সত্য- ন্যায়ের পথ ইনসান নিল চিনে,’
ফিরদৌসের শান্তি সুষমা নিল জ্বিনে,
ভেসে গেল দূরে জাহেলিয়াতের সব রিতি।।

অবিশ্বাসের রাত্রি মিলালো বহু দূরে,
পেল মঞ্জিল কাফেলা ভোরের পথ ঘুরে,
জাগিল বিশ্বে আলোকের গান শত সুরে,’
নামিল ধরায় খাস রহমত, প্রেম প্রীতি।।

সত্যের যুগ, শান্তির যুগ এল শেষে,
মজলুমানের দুক্ষের রাত গেলো শেষে,
পূর্ণ জ্ঞানের সন্ধান ধ্যানী পেল শেষে,
দরূদ, সালাম পাঠায় সে আঁখি নীরে তিতি।।

-ফররুখ আহমেদ-

মরুর হাওয়া জানায় এসে

মরুর হাওয়া জানায় এসে, ‘ঈদে মিলাদুন্নবী”
কুল মখলুক বলে হেসে, “ঈদে মীলাদুন্নবী”।

গুলশানে ফুল ওঠে ফুটে খোশবু নিয়ে জান্নাতের
বুলবুলি গায় কানন ঘেঁষে “ঈদে মিলাদুন্নবী”।

বন্দী যারা জিন্দানে ভাই, জাগ্লো ভোরের গান গেয়ে
বার্তা গেলো সুদুর দেশে, “ঈদে মীলাদুন্নবী।।“

নওশেরোয়াঁর ভাংলো মহল নিভলো আগুন জ্বলন্ত
দেখলো রবি রাত্রি শেষে “ ঈদে মীলাদুন্নবী”।।

আজ কাফেলার কন্ঠে নতুন সুর ওঠে যে তৌহিদী,
প্রতীক্ষিত এল যে সে “ ঈদে মিলাদুন্নবী”।।

-ফররুখ আহমেদ-

কুল আলমের রহমত

কুল আলমের রহমত,- যাঁর
প্রশস্তি গাহে কাল,
স্মৃতি নিয়ে তার আসিল আবার
রবিউল আউয়াল।।

সে দিনের কথা পড়ে আজ মনে
মহামানবের জাগরন ক্ষনে
মানবিকতার চিহ্ন ধরার
পথে যবে পয়মাল।।

সে দিন মানুষ নেমেছিল হায়
স্বার্থান্ধের নাম ভূমিকায়,
ঈমান- আমান সাম্য বিধান
ভুলে যেন পশু পাল।।

অন্ধ রাতের নিকষ আঁধারে
ছিল সে বন্দি তিমির পাথারে,
পেয়ে ছিল ঘোর সুপ্তির ডোর
জড়তার মায়া জাল।।

চির সত্যের পয়গাম দিতে
আসিলেন যবে নবী ধরণীতে
মিথ্যা পাপের মূল তিমিরের
কাঁপিল টালমাটাল।।

তৌহিদী আলো মানবিকতার
খুলে দিল সব নিরুদ্ধ দ্বার,
পাড়ি দিল তারা গিরি ও সাহারা
মমুদ্র উত্তাল।।

সকল মিথ্যা সঙ্কীর্ণতা
‘ল সে হারানো অতীতের কথা,
মানুষের তরে মুক্ত সাগরে
যাত্রি ধরিল হাল।।

-ফররুখ আহমেদ-

জাগলে আঁধার রাতের ভালে

জাগলে আঁধার রাতের ভালে নবী মোহাম্মদ।
হেরায় আলোয় পথ দেখালে নবী মুহাম্মদ।।

আল- কুরানের আনলে জ্যোতি নিবিড় তমসাতে,
তৌহিদের দীপ জ্বালালে নবী মুহাম্মদ।।

জ্বালিয়ে দিলে খোদার কালাম দিকে দিগন্তরে,
ঘুমন্তদের ঘুম ভাঙ্গালে নবী মুহাম্মদ।।

শেষ হল রাত মজলুমানের তোমার ইশারাতে,
নতুন আশায় মন রাঙ্গালে নবী মুহাম্মদ।।

ইন্সানিয়াৎ উঠলো জেগে তোমার চলা পথে,
মানব শিশুর প্রান বাঁচালে নবী মুহাম্মদ।।

-ফররুখ আহমেদ-

আজ আমিনা মায়ের কোলে

আজ আমিনা মায়ের কোলে কে এল, কে এল
আসমান আর জমীন বলে, “সে এল, সে এল।।”

প্রতীক্ষিত তার পথে আজ
ঝর্ণা তোলে চলার আওয়াজ,
ভোরের আলো বাতাস বলে “ সে এল, সে এল।”

আজকে শিশু কন্যারা কয়,
“এতদিনে হ’ল সময়,
বাঁচার দাবী নিয়ে ধরায় সে এল, সে এল।।”

শৃঙ্খলিত গোলাম জানায়
“এল সময় বন্দী খানায়
মুক্তি সনদ নিয়ে ধরায় সে ল, সে এল।।”

উৎপীড়িত কয় নারী নর,
“এত দিনে এল খবর
ইসসাফ হক নিয়ে ধরায় সে এল, সে এল।।”

যাত্রি বলে সত্য পথের,
“কালাম নিয়ে এক মাবুদের
নিয়ে খতমে নবুয়ত এ ধরায় সে এল, সে এল।।”

-ফররুখ আহমেদ-

রাসুল তুমি আল্লাহ পাকের

রাসুল তুমি আল্লাহ পাকের
-মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
নবী তুমি সর্ব শেষের
-মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।।

নবুয়তের আগে ছিলে তুমি ‘সাদেক’, ‘আল আমীন’
রাসুল রূপে এলে ধরায় রাহমাতুল্লিল আলামীন,
খাতামুন নাবীয়ীন তুমি, সাইয়্যেদুল মুরসালীন,
তোমার উপর দরূদ পড়ে তামাম আলম, ফেরেশতা, জ্বিন,
বুলবুলি গায় দুই জাহানের
-মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।

আল্লাহ আহাদ স্রষ্টা তোমার, হে উসওয়াতুন হাসানা!
আহমদ নাম টমার তরে মখলুকে যার নাই তুলনা,
জাগিয়ে দিলে বিশ্ব ধরায় তৌহিদেরি এ মূর্ছনা,
নিখিল মানব ভাগ্য থেকে কাটলে আঁধার বিড়ম্বনা,
ভাষ্য তুমি আল কুরানের
-মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ!

তোমার রাহা নিল যারা,- সত্য, প্রেম ও ন্যায় বিচার,
সাচ্চা মুমিন তা’রাই জানি, তারাই কাঁটি ঈমান্দার।
তোমার অনুগামী যারা, তা’রাই শুধু পায় সুপথ,
দুই জাহানে কামিয়াবি;-পায় আল্লাহির মুহাব্বত;
প্রানের চেয়ে প্রিয় যাদের
-মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।

-ফররুখ আহমেদ-

ওগো নুর নবী হযরত

ওগো নুর নবী হযরত
আমরা- তোমারি উম্মত।।

তুমি দয়াল নবী
তুমি নূরের রবি
তুমি- বাসলে ভাল জগত জনে
দেখিয়ে দিলে পথ।।

আমরা তোমার পথে চলি,
আমরা তোমার কথা বলি,
তোমার আলোয় পাই যে খুঁজে
ঈমান; ঈজ্জত।।

সারা জাহানবাসী,
আমরা- তোমায় ভালবাসি,
তোমায় ভালবেসে মনে
পাই মোরা হিম্মত।।

-ফররুখ আমহেদ-

ঘুমিয়ে আছ বুলবুলি গো

ঘুমিয়ে আছ বুলবুলি গো
মদীনার গুলবাগে
না দেখা হে প্রিয় আমার
বুকে বেদন জাগে।।

ফুলের বুকে গন্ধ সম
তোমার স্মৃতি প্রিয়তম
ছড়িয়ে আছে বুকে মম
তারই দোলা লাগে।।

ছুরত তোমার দেখিনি হায়
ভাবি মনে মনে
কেমন ছিলে তার তুলনা
পাইনা ত্রিভুবনে!

চোখের পানির এই দরিয়ায়
কেঁদে কেঁদে খুঁজি তোমায়
কেন আমি জন্মিনি হায়
তোমার যাওয়ার আগে।।

-আজীজুর রহমান-

নবীর নামের মুহাব্বতে

নবীর নামের মুহাব্বতে
মন যে আমার টানে
সূর্যমুখীর প্রানে।।

রওজা শরীফ পাক মদিনায়
দ্বীনের রসুল ঘুমিয়ে যেথায়
পাখীর মত মন উড়ে মোর
যায় আরবের পানে।।

মাটির মানুষেরে যিনি
ভালোবেসেছিলেন
নিখিল পাপী তাপীর আঁসু
মুছিয়ে যিনি ছিলেন।

হৃদয় আমার তাঁহারই পায়
ফুলের মত লুটিতে চায়
সেই শাতেই রঙ্গিণ হয়ে
চোখে স্বপন আনে।।

-আজীজুর রহমান-

যার নামের মুহব্বতে আমি

যার নামের মুহব্বতে আমি
মিটাই প্রানের জ্বালা
সেই মোহাম্মদ মোস্তফা আমার
নবী কামলিওয়ালা।।

মুখে আমি বারে বারে
দরূদ সালাম জানাই তারে
আমার মনের কাবা যে ঐ
নামে উজালা।।

দুঃখে শোকের সান্ত্বনা ঐ
নামের বরকত
সকল ব্যথায় শান্তি ঝরায়
খোদার রহমত।

ফুলের মত গন্ধ ঝরে
হৃদয় আমার দেয় যে ভরে
ঐ নামের নিয়ামতে আমার
মাবুদ আল্লাতালা।

-আজীজুর রহমান-

হে মদিনার নাইয়া

হে মদিনার নাইয়া! ভব- নদীর তুফান ভারি
কর কর পার।
তোমার দয়ায় ত’রে গেল লাখো গুনাহগার
কর কর পার।।

পারের কড়ি নাই যে আমার হয়নি নামাজ রোযা
আমি কূলে এসে বসে, আছি নিয়ে পাপের বোঝা,
ইয়্যা রাসুল মোহাম্মদ বলে কাঁদি বারেবার।।

তোমার নাম গেয়েছি শুধু কেঁদে সুবহ শাম,
মোর তরিবার আর নাই ত পুঁজি বনা তোমার নাম।

আমি হাজারো বার দরিয়াতে ডু’বে যদি মরি
ছাড়বোনা মোর পারের আশা, তোমার চরন –ত্রী,
দেখো সবার শেষে পার যেন হয় এই খিদমতগার।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

যাবি কে মদিনায়

যাবি কে মদিনায়, আয় ত্বরা করি।
তোর খেয়া- ঘাটে এল পুন্য- তরী।।

আবু বকর উমর খাত্তাব
আর উসমান, আলী হায়দা্
দাঁড়ি এ সোনার তরণীর,
পাপী সব নাই নাই আর ডর।

এ তরীর কান্দারী আহমদ,
পাকা সব মাঝি ও মাল্লা,
মাঝিদের মুখে সারি-গান
শোন ঐ “লা শরীক আল্লাহ!’’
মোরা পাপ দরিয়ার তুফানে আর নাহি ডরি।।

শাফায়ত- পাল ওড়ে তরীর
অনুকূল হাওয়ার ভরে,
ফেরেশতা টানিছে তার গুন,
ভিড়িবে বেহেশতী-চরে।।

ঈমানের পারানী কড়ি আছে যার
আয় এ সোনার নায়,
ধরিয়া দীনের রশি
কলেমার জাহাজ- ঘাটায়।
ফেরদৌস হ’তে ডাকে হুর পরী।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

হেরা হ’তে হেলে দুলে

হেরা হ’তে হেলে দুলে
নুরানী তনু ও কে আসে, হায়!
সারা দুনিয়ার হেরেমের পর্দা
খুলে খুলে যায়-
সে যে আমার কামলীওয়ালা
কামলিওয়ালা।।

তার ভাবে বিভোল রাংগা পায়ের তলে
পর্বত জংগল টলমল টলে,
খোরমা খেজুর বাদাম জাফরানী ফুল
ঝ’রে ঝ’রে যায়।।
সে যে আমার কামলিওয়ালা
কামলিওয়ালা।।

আসমানে মেঘ চলে ছায়া দিতে,
পাহাড়ের অঁসু গলে ঝর্ণার পানিতে,
বিজলী চায় মালা হ’তে
পূর্ণিমা চাঁদ তাঁর মুকুট হ’তে চায়।
সে যে আমার কামলীওয়ালা
কামলিওয়ালা।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে

তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে।
মধু পূর্ণিমার সেথা চাঁদ দোলে
যেন ঊষার কোলে রাঙ্গা রবি দোলে।।

কুল- মখলুকে আজ ধ্বনি ওঠে,- কে এলো ঐ,
কলেমা শাহাদাতের বাণী ঠোঁটে,- কে এলো ঐ,
খোদার জ্যোতি পেশানিতে ফোটে, -কে এলো ঐ,
আকাশ গোহ তারা পড়ে লুটে- কে এলো ঐ,
পড়ে দরুদ ফেরেশতা, বেহেশতে সব দুয়ার খোলে।।

মানুষে মানুষে অধিকার দিল যে জন,
“এক আল্লাহ ছাড়া প্রভু নাই”, কহিল যে জন,
মানুষের লাগি চির –দীন বেশ ধরিল যে জন,
বাদশাহ ফকিরের এক শামিল করিল যে জন,-
এল ধরায় ধরা দিতে সেই সে নবী,
ব্যথিত মানবের ধ্যানের ছবি
আজি মাতিল বিশ্ব- নিখিল মুক্তি- কলরোলে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

নাম মোহাম্মদ বোল রে মন নাম মোহাম্মদ বোল

নাম মোহাম্মদ বোল রে মন, নাম মোহাম্মদ বোল
যে নাম নিয়ে চাঁদ সিতারা আসমানে খায় দোল।।

পাতায় ফুলে যে নাম আঁকা,
ত্রিভুবনে যে নাম মাখা,
যে নাম নিয়ে হাসীন ঊষার রাঙ্গে রে কপোল।।

যে নাম গেয়ে ধায়রে নদী,
যে নাম সদা গায় জলধি,
যে নাম বহে নিরবধি পবন হিল্লোল।।

যে নাম বাজে মরু সাহারায়,
যে নাম বাজে শ্রাবন- ধারায়,
যে নাম চাহে কাবার মসজিদ, মা আমিনার কোল।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

আল্লাহ কে যে পাইতে চায় হযরত কে ভালবেসে

আল্লাহ কে যে পাইতে চায় হযরত কে ভালবেসে
আরশ কুর্সী লওহ কালাম না চাইতেই পেয়েছে সে।।

রসুল নামের রশি ধ’রে
যেতে হবে খোদার ঘরে,
নদী তরঙ্গে যে পড়েছে, ভাই
দরিয়াতে সে আপনি মেশে।।

তর্ক করে দুঃখ ছাড়া কী পেয়েছিস অবিশ্বাসী,
কী পাওয়া যায় দেখনা বারেক হযরতেমোর ভালবাসি?

এই দুনিয়ায় দিবা- রাতি
ঈদ হবে তোর নিত্য সাথী;
তুই যা চাস তাই পাবি হেথায়, আহমদ চান যদি হেসে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

তৌহিদেরো মুর্শিদ আমার মোহাম্মদের নাম

তৌহিদেরো মুর্শিদ আমার মোহাম্মদের নাম
মুর্শিদ মোহাম্মদের নাম।
ঐ নাম জপলেই বুঝতে পারি, খোদায়ী কালাম
মুর্শিদ মোহাম্মদের নাম।।

ঐ নামেরই রশি ধরে যাই আল্লার পথে,
ঐ নামেরই ভেলায় চড়ে ভাসি নূরের স্রোতে,
ঐ নামের বাতি জ্বেলে দেখি আরশের মোকাম
মুর্শিদ মোহাম্মদের নাম।।

ঐ নামের দামন ধরে আছি আমার কিসের ভয়
ঐ নামের গুনে পাব আমি খোদার পরিচয়।
তাঁর কদম মোবারক যে আমার বেহেশতি তাঞ্জাম
মুর্শিদ মোহাম্মদের নাম।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

এ কোন মধুর শরাব দিলে আল আরাবী সাকী

এ কোন মধুর শরাব দিলে আল আরাবী সাকী
নেশায় হলাম দীওয়ানা যে, রঙ্গিন হল’ আঁখি।।

তৌহিদের সিরাজী নিয়ে
ডাকলে সবায়ঃ “যা রে পিয়ে।’’
নিখিল জগৎ ছুটে এল, রইল না কেউ বাকী।।

বসল তোমার মহফিল দূর মক্কা- মদীনাতে,
আল- কোরানের গাইলে গজল শবে কদর রাতে।

নরনারী বাদশাহ ফকির
তোমার রূপে হয়ে অধীর
যা ছিল নজরানা দিল রাঙ্গা পায়ে রাখি।।

তোমার কাসেদ খবর নিয়ে ছুটলো দিকে দিকে,
তোমার বিজয়- বার্তা গেল দেশে দেশে লিখে।

লা-শরীকের জলসাতে তাই
শরীক হল এসে সবাই
তোমার আজান- গান শুনালো হাজার বেলাল ডাকি।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

মোহাম্মদ নাম জপেছিলি বুলবুলি তুই আগে

মোহাম্মদ নাম জপেছিলি বুলবুলি তুই আগে।
তাই কি রে তোর কন্ঠের গান এমন মধুর লাগে।।
ওরে গোলাব নিরিবিলি
(বুঝি) নবীর কদম ছুঁইয়েছিলি
(তাই) তাঁর কদমের খোশবু আজ ও তোর আতরে জাগে।।

মোর নবীরে লুকিয়ে দেখে
তাঁর পেশানীর জ্যোতি মেখে
ওরে ও চাঁদ, রাঙ্গলী কি তুই গভীর অনুরাগে।।

ওরে ভ্রমর, তুই কি প্রথম
চুমেছিলি নবীর কদম,
আজও গুনগুনিয়ে সেই খুশী কি জানাস রে গুলবাগে।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

সাহারাতে ফুটলরে ফুল রঙ্গীন গুলে- লালা

সাহারাতে ফুটলরে ফুল রঙ্গীন গুলে- লালা
সেই ফুলেরই খোশবুতে আজ দুনিয়া মাতোয়ালা।।

সে ফুল নিয়ে কাড়াকাড়ি চাঁদ- সুরুয, গ্রহ- তারায়
ঝুঁকে পড়ে চুমে সে ফুল নীল গগন নিরালা।।

সেই ফুলেরই রওশনীতে আরশ কুর্শী রওশন,
সেই ফুলেরই রং লেগে আজ ত্রিভুবন উজালা।।

সেই ফুলেরই গুলিস্তানে আসে লাখো পাখী,
সে ফুলেরে ধরতে বুকে দোলে রে ডাল- পালা।।

চাহে সে ফুন জীন ও ইনসান হুর পরী ফেরেশতায়,
ফকীর দরবেশ বাদশাহ চাহে করতে গলে মালা।।

চেনে রসিক ভোমরা বুলবুল সেই ফুলের ঠিকানা,
কেউ বলে হযরত মোহাম্মদ কেউ বা কমলীওয়ালা।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

মোরা হতে চাই প্রিয়তম তোমার

মোরা হতে চাই প্রিয়তম তোমার
মোদের কবুল কর হে পরওয়ার

মোরা হতে যেন পারি সত্যবাদী
যেমন ছিলেন আবুবকর
মোরা হতে যেন পারি নির্ভিক সৈকিন
যেমন ছিলেন নেতা ওমর
এই মোনাজাত তোমার কাছে খোদা
করি মোরা বার বার।।

তোমার কাছে কটি শপথ করছি মোরা
আনবো এবার আমরা নতুন স্রোতের ধারা
জাগাবো সকল ঘুমের পাড়া

সেই ধারাতে আসবে সুদিন
সাজবে ধরা নব সাজে
সেই ধরাতে হবে ফের
খোদার বিধান এ সমাজে
দুঃখ যাতনা ঘুঁচবে সেদিন আর শান্তির আসবে জোয়ার।।

-সালমান আযামী-

আল্লাহ তুমি সৃষ্টিকারী

আল্লাহ তুমি সৃষ্টিকারী
সকল জীবের লালঙ্কারী
তোমার নামে নিরবধি
জীবন পথে দেব পাড়ি।।

তোমার নামে পাখি গায়
ঝর্ণা ধারা ছুটে যায়
কুলুকুলু নদীর ঐ তান
কোকিলের ঐ কুহু তান
সবই তোমার সৃশটি প্রভু
তুমি সবার পালনকারী।।

মৌনতা ঐ আকাশে
ছবি আঁকা সবুজে
মুগ্ধ মধুর হৃদয় আমার
পায় খুঁজে যে রূপ তোমার
শিল্পীর সেরা শিল্পী তুমি
গাই যে গান তোমারি।।

-হাসান আখতার-

আল্লাহ আমার প্রভু আমার

আল্লাহ আমার প্রভু আমার
তুমি প্রেমময়
তুমিই দয়াময়।।

সুখের দিনে ভুলে থাকি
দুখের দিনে তোমায় ডাকি
তবু জানি আমি, তোমার কাছে চাইতে আমার
নাই কোন সংশয়-
তুমিই দয়াময়।।

ধন ও জনের নয় কামনা
স্বার্থ সুখের নয় ভাবনা
শুধু, বলে দাও প্রভু কেন ভুবন জুড়ে আজ আমাদের
এমন বিপর্যয়-
তুমিই দয়াময়।।

জ্ঞান ও শক্তি দাওগো প্রভু
যেন পিছু হটিনা কভু
যেন তমার দয়ায় করতে পারি তোমারই রাজ
কায়েম জগতময়-
তুমিই দয়াময়।।

-চৌধুরী গোলাম মাওলা-

ধৈর্য্য ধারন করার শক্তি দাওগো মেহেরবান

ধৈর্য্য ধারন করার শক্তি দাওগো মেহেরবান
আমায় দাওগো মেহেরবান
বুকের ভেতর ব্যথার নদী বইছে অবিরাম।।

আঁধার আমার আলো দিয়ে
কানায় কানায় দাও ভরিয়ে
অন্তর জুড়ে দাওগো প্রভু
ভোরের পাখির গান।।

ফাগুন কেড়ে নেয়া চৈত্র আষাঢ় করে দাও
গাছ গাছালির শীতল ছায়ায় জীবন ভরে দাও

আমার ধু ধু মরুর দেশে
দাওগো জোয়ার ভাটার শেষে
পারাবারের বাউরি বাতাস
আমায় করো দান।।

-মতিউর রহমান মল্লিক-

খোদা সকল কিছুর বদল হলেও তোমার শাসন দাও

খোদা সকল কিছুর বদল হলেও তোমার শাসন দাও
শক্তি নাও মোর সম্পদও নাও না হয় আমার জীবন নাও।।

তোমার ধরায় তোমার আইন চাইতে গিয়ে হায়
ভাস্তে হলো লাখো ভায়ের রক্তের বন্যায়
খোদা মদের দাওগো ঈমান
দাও আমাদের শক্তি দাও।।

ভুলে তোমার হুকুম আহকাম তোমার বান্দা আজ
গরতে চাইছে তুমিবিহীন নাস্তিক্য সমাজ
খোদা ওদের দিন খুইল্যা দাও তুমি ওদের পথ দেখাও।

মোদের মরা মোদের বাঁচা মোদের এবাদত
সকল কিছুই তোমার লাগি- তোমার এযাযত
খোদা মোদের ফিরাইওনা
আল কোরানের সমাজ দাও

-গোলাম মোহাম্মদ-

চাইনাকো আমি তখত ই তাউস

চাইনাকো আমি তখত ই তাউস
আমায় শহীদী দরজা দাও,
আল- কোরানের হেদায়েতী নুরে
আমার আঁধার দিল ভরাও।

সত্য দ্বীনের রোশনাই লেগে
মুজাহীদ বেশে উঠি যেন জেগে,
আমার দু’চোখে জাহেলীয়াতের
বেহুঁশ করা ঘুম টুটাও।।

তোমার জমিন বিরাণ আজিকে
এখানে তোমার কানুন নাই,
তাইত মানুষ হয়ে হায়ওয়ান
পশুদেরই মত চরে বেড়ায়।।

বাতিলের সেই দুর্গটি ভেঙ্গে
তোমারই আলোকে তুলি যেন রেঙ্গে
তওফিক দাও, আল্লাহ আমার,
তোমার রহমত ঝরাও।।

-জামেদ আলী-

যদি সাগরের জলকে কালি করি

যদি সাগরের জলকে কালি করি
আর গাছের পাতাকে করি খাতা
আর একে একে লিখে যাই মহিমা তোমার
তবুও রইবেনা একটিও পাতা।

তুমি মাঠ ভরে দিলে ফসলেরও সম্ভার
সঘন বরষা দিলে প্রেম প্রীতি মায়া মমতা
আর একে একে লিখে যাই মহিমা তোমার
তবু রইবেনা একটিও পাতা।

যামন দিয়েছ আলো তেমনি বাতাস
অন্তরে দিলে জ্ঞান আকাশ আকাশ

তুমি শেষ নবী দিলে আমাদেরও জন্য
যেন পথ ভুলে না হই পাপীদের মাঝে গন্য
ভালবেসে দিলে পাক-কোরানের বারতা
আর একে একে লিখে যাই মহিমা তোমার
তবু রইবেনা একটিও পাতা।

-রেজাউল করীম-

কুল আলমের পালনেওয়ালা

কুল আলমের পালনেওয়ালা সব প্রশংসা হক তোমার;
রহমান উর রহিম তুমি যে,- দয়ার তোমার নাই শুমার!!

বাদশা তুমি বচার বেলার
তুমিই মোদের মাবুদ সবার
চাই করুনা কেবল তোমার- তুমিই সবার মদদগার!!

হও দিশারী হাদী মোদের
সরল সঠিক দৃঢ় পথের
দাও দেখিয়ে পথটি তাদের- যাদের দেছ পুরস্কার।।

নয় অভিশাপগ্রস্ত যারা
নয় গুমরাহ- লক্ষ্যহারা
দীপ্ত করে দাও ইশারা- তাদের শুভ পন্থাটার।।

-মুহাম্মদ আবুবকর-

আকাশে সুনীল চাঁদোয়া আঁকা

আকাশে সুনীল চাঁদোয়া আঁকা
জমীন সবুজ গিলাফে ঢাকা
কুসুমে মধু- সুবাস রাখা
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ।।

দিনের বেলা আলোর খেলা
নিশীথ রাতে তারার মেলা
আকাশে পাখী পানিতে ভেলা
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!

এখনি গ্রীষ্মে ঘামে কলেরব
এখনি শীতে কাঁপি থরথর
চাঁচল সাগর নীরব ভুধর
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ।।

করেছ সুলভ তব নিয়ামৎ
ক্ষীন আদমে দিলে খিলাফৎ
দিয়েছ ইশক দিয়েছ হিকমৎ
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ।।

-মুহাম্মদ আবুবকর-

তুমি যে লা শরীক আল্লাহ

তুমি যে লা শরীক আল্লাহ
রহীম রহমান।
খালিক তুমি মালিক তুমি
তুমি মেহেরবান।।

সবি তোমার তুমি সবার
তোমার সয়ার নাই পারাপার
তাই তো পেলো বান্দা তমার
সবার চেয়ে মান।।

হায়াত মউত রিযিক দৌলত
সবি তোমার হাতে।
তুমি সব করিতে পারো আল্লাহ
চোখের ইশারাতে।।

মিছেই মোদের মান গরিমা
তোমারি যে সব মহিমা
জানি তোমার নাই যে সীমা
সবি তোমার শান।।

-ফজলে এ খোদা-

আয় খোদা দয়াময়

আয় খোদা দয়াময়।
বান্দারে আজ দাও সুমতি দূর করো দ্বিধাভয়।।

দাও সেই মন মানুষেরে ভালোবাসিবারে
দাও সেই সুখ সকলের সুখে হাসিবারে
সহিতে দাও যত দুঃখ বেদনা প্রানে যত সয়।।

দাও শক্তি ন্যায় কথা পারি বলিবারে
দাও ভক্তি সৎপথে পারি চলিবারে
ক্ষমতা দাও যত লোভ- লালসা করতে পারি জয়।।

-ফজলে – এ- খোদা-

খোদা তুমি কোথায় তুমি

খোদা তুমি কোথায় তুমি কোথায়
বান্দা তোমারে খুঁজে ফেরে নিতি
তোমারি করুনা চায়।

বেদনার বারি লয়ে আঁখিপাতে
খুঁজি মসজিদ খুঁজি দরগাতে
দুখের সাহাবা পারায়ে খুঁজেছি
মক্কা আর মদিনায়।।

পাঞ্জেগানা নামাযের শেষে ডাকিয়াছি মোনাজাতে
কেঁদেছি তোমার দিদারের আশে নিঁধারা কত রাতে।

হে অদেখা তুমি ধেয়ানে আমার
আসিবে নাকি গো ডাকি বারবার।
গোনাহগার বলি বান্দারে তব
ফিরাবে কি নিরাশায়।।

-সাঈদ সিদ্দিকী-

দে পানাহ দে ইয়া এলাহী

দে পানাহ দে ইয়া এলাহী দে পানাহ
পথ হারায়ে কাঁদি যে রাহী দে পানাহ।।
রওশনী দে বদনসীবে
দিল চেরাগ মোর যায় যে নিভে
নামলো নভে কাল সিয়াহী- দে পানাহ।।

কোন সে সুন্দর, ফুল ফাগুনের
স্বপন হেরি গহন ব্যথায়
সুর-হারা বুলবুল কাঁদে মোর
বিরাণা বাগের শুন্য শাখায়;

তারি বুকের বেদন দিবস রাতি
ঝংকারে মোর দুলরুবাতে
তাই, আঁসুর এ নগমা গাহি – দে পানাহ।।

-সাঈদ সিদ্দিকী-

পাপী তবুও কম বাসোনা

পাপী তবু কম বাসোনা
আমায় তুমি ভালো
এইতো ডেকে বলে আকাশ
শ্যামল সুনীল আলো।।

তোমার প্রেমের খবর পেয়ে
মেঘে দু’চোখ গেলো ছেয়ে
দারুন নরু দহন-জ্বালা
কখন যে জুড়ালো।

পাপী আমি যখন কাঁদি
দেখি দয়ার নদী
উথলে উঠে সোহাগ পরশ
জাগায় নিরবধি।

বাতাস ছোটে মৃদুমন্দ
আকুল করে জীবন ছন্দ
যায়, মুছে যায়, এক পলকে
সব হতাশার কালো।

-সৈয়দ শামসুল হুদা-

ঝিলের শোভা মাঠের ফসল

ঝিলের শোভা, মাঠের ফসল।
নদির কলতান
মায়ের আদর, বোনের সোহাগ
পাখির ঠোঁটের গানঃ
সবই তোমার দান-
মাওলা! সবই তোমার দান।।

ফুলের মত সোনার দেহ
দৃষ্টি দু’চোখের-
প্রানে প্রানে এত আশা
আবেগ হৃদয়ের,
ভালো মন্দ বিবেচনার
পরিপূর্ণ জ্ঞান-
সবই তোমার দান।।

দ্বীন দুনিয়ায় চলা পথের
মহান কান্ডারী
দিলে তুমি দয়া করে
পরম দিশারী
দ্বীনের নবী মোস্তফাকে
হয়ে মেহেরবান!
সবই তোমার দান।।

-আব্দুল হাই আল হাদী-

ও পরান বন্ধু তুমি

ও পরান বন্ধু তুমি
কোথায় রইলা হায়;
তোমারি লাগিয়া আমার
পরান বুঝি যায় রে
পরান বুঝি যায়।।

লতায় পাতায় বনের ফুলে
খুঁজি তোমায় আপন ভুলে
আকাশে পাতালে খুঁজি
পাহাড় দরিয়ায় রে।।

নানান রূপে বিরাজ করো
তুমি সকল ঠাঁই
ধরতে গেলে বন্ধু তোমায়
নাগাল তো না পাই।।

বুকে দারুন আগুন সয়ে
তোমার প্রেমের সে অনল
ঘুরবো কতো পথে পথে
তোমারি আশায় রে।।

-সিরাজুল ইসলাম-

আল্লাহু আল্লাহু তুমি জাল্লে জালালুহু

আল্লাহু আল্লাহু তুমি জাল্লে জালালুহু
শেষ করা তো যায়না গেয়ে তমার গুনগান
তুমি কাদের গফফার
তুমি জলিল জব্বার
অনন্ত অসীম তুমি রহিম রহমান।।

তুমি মাটির আদমকে প্রথম সৃষ্টি করিয়া
ঘোষনা করিয়া দিলে শ্রেষ্ঠ বলিয়া
তাই নুরের ফেরেশ্তা করে আদমকে সেজদা
সবার চেয়ে দিলে মাটির মানুষকে সন্মান।।

যখন ইউনুছ নবীরে খাইল মাছেতে গিলিয়া
ফেরেশতা পাঠাইলে তুমি এছমে আজম দিয়া
দমে দমেতে হরদম সে যে পেল পরিত্রান।।

শিশু মুছা নবীকে যখন দুশমনেরই ডরে
সিন্ধুকে ভরিয়া দিলে ভাসায়ে সাগরে
প্রানে ছিল যাহার ভয়
সেথায় পেল সে আশ্রয়
সেই দুশমনেরই হাতে তাঁহার বাঁচাইলে প্রান।।

-সিরাজুল ইসলাম-

আল্লাহ তুমি রেজেকদাতা

আল্লাহ তুমি রেজেকদারা
নাম তাই রাজ্জাক
সব প্রানীকে দাও যে রুজী
দাও তুমি খোরাক।।

তোমার তারিফ, তোমার গানে
জেগে উঠে মোর বিহানে
বিলে ঝিলে মাঠে রুজী
পায় যে পাখির ঝাঁক।।

মৌমাছিরা গুনগুনিয়ে
যায় সে কাজে গান শুনিয়ে
মধু খেয়ে সারাটি দিন
বাঁধে সে মৌচাক।।

পিঁপড়া যে পায় খুঁজে আহার
কঠিন শ্রমের ময়দানে,আর
কাজ করে যায় সারাটি ক্ষন
শোনে কাজের ডাক।

-ফররুখ আহমেদ-

তোরা চাসনে কিছু কারো কাছে

তোরা চাসনে কিছু কারো কাছে
খোদার মদদ ছাড়া
তোরা পরের উপর ভরসা ছেড়ে
নিজের পায়ে দাঁড়া।

তোরা পরের উপর ভরসা করে
ভয়ের পথে যাসনে মরে
তোরা জয়ের পথে যা বাজিয়ে
জয়ের নাকাড়া।।

খোদার মদদ পেয়ে যারা
হল জাহান জয়ী
তারা মাড়িয়ে গেল মৃত্যু দুয়ার
রাত্রি তিমিরময়ী।

তোরা নিজের পায়ে দাঁড়াস যদি
বইবে আবার আলোর নদী
এই দুনিয়ার গুলশানে ফের
জাগবে নতুন সাড়া।।

-ফররুখ আহমেদ-

তোমার দয়ায় জাহান সারা

তোমার দয়ায় জাহান সারা
আলোক পেল চাঁদ সিতারা
জাগলো নদী, ঝর্ণা ধারা
ইয়া রাহমানো ইয়া রাহিমো……

জীবন জাগে তোমার দয়ায়
জীবন বাঁচে তোমার মায়ায়
সবুজ ঘাসে, লতায় পাতায়
ফুল হেসে চায় পলখারা
ইয়া রাহমানো… ইয়া রাহিমো……

ফুলে মধু ভরাও তুমি
বিপদ থেকে তরাও তুমি
সকল বাধা সরাও তুমি
মিটাও আঁধার পাষান কারা
ইয়া রাহমানো……ইয়া রাহিমো……

-ফররুখ আহমেদ-

তোমার দয়া আছে খোদা

তোমার দয়া আছে খোদা জানি সকল দিকে,
তোমার দয়া দাও ছড়িয়ে মাগরিবে, মাশ্রিকে।।

স্রষ্টা তুমি সৃষ্টি করো,
মহান,-কৃপা দৃষ্টি করো।
দাও সাজিয়ে আলোর ফুলে
আকাশ পৃথিবীকে।।

মহিমা আর শক্তি তোমার কেউ জানেনা কত,
তোমার দয়ার প্রকাশ দেখি আমরা অবিরত।।

প্রভু তুমি লালন করো,
স্নেহের নীড়ে পালন করো,
ফুল, পাখী আর পতঙ্গ, কীট
সকল প্রানীকে।।

-ফররুখ আহমেদ-

আল্লা আমার তোমার কাছে

আল্লাহ আমার তোমার কাছে
চাওয়ার কিছু নাই
তুমি যা বুঝেছ তাই দিয়েছ
আর কিছু না চাই।।

যেমন সাজে তেমনি সাজাও
যেমন বাজে তেমনি বাজাও
যেমন খুশী হাসাও কাঁদাও
যখন যেরূপ তাই।।

নিজের কিছু নাই হে মালিক
নয় কিছু আমার-
জীবন ও মান ধন ও দৌলত
সকলি তোমার।।

যখন যা দাও হাসি মুখে
গ্রহন করি পরম সুখে
আরজু শুধু আমার বুকে
তোমায় যেন পাই।।

-আজীজুর রহমান-

তোমার নামের তসবীহ খোদা

তোমার নামের তসবীহ খোদা
লুকিয়ে যেন রাখি।
সংগোপনে মনে মনে
তোমায় যেন ডাকি।।

মস্তানা সে নেশার ঝোঁকে
নীরব উদাস দুঃখ শোকে
আমি যেন সবার চোখে
পাপী হয়ে থাকি।।

সবাই আমায় করুক ঘৃনা
চাইনা ফুলের মালা
তোমার নামের আবে হায়াত
মিটাক প্রানের জ্বালা।।

মাটির খেলা সাঙ্গ হলে
তখন যেন যায়গো চলে
আল্লাহু আল্লাহু বলে
আমার পরান পাখী।।

-আজীজুর রহমান-

খোদা এই গরীবের শোন শোন মোনাজাত

খোদা এই গরীবের শোন শোন মোনাজাত
দিও তৃষ্ণা পেলে ঠান্ডা পানি, ক্ষুধা পেলে লবন- ভাত।।

মাঠে সোনার ফসল দিও
গৃহ ভরা বন্ধু প্রিয়;
আমার হৃদয় ভরা শান্তি দিও
সেই ত আমার আবে হায়াত।।

আমায় দিয়ে কারও ক্ষতি হয়না যেন দুনিয়ায়,
আমি কারো ভয় না করি, মোরেও কেহ যেন ভয় না পায়।

(যবে) মসজিদে যাই তোমারি টানে
(যেন) মন নাহি ধায় দুনিয়া- পানে,
(আমি) ঈদের চাঁদ দেখি যেন
আসলে দুঃখের আঁধার রাত।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল

এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি
খোদা তোমার মেহেরবানী।
শস্যশ্যামল ফসল ভরা মাটির ডালিখানি
খোদা তোমার মেহেরবানী।।

তুমি কতই দিলে রতন
ভাই বেরাদর পুত্র স্বজন,
ক্ষুধা পেলেই অন্ন জোগাও
মানি চাইনা মানি।।

খোদা! তোমার তোমার হুকুম তরক করি আমি অতি প্রায়,
তবু আলো দিয়ে বাতাস দিয়ে বাঁচাও এ বান্দায়।
শ্রেষ্ঠ নবী দিলে মোরে
তরিয়ে নিতে রোজ- হাশরে,
পথ না ভুলি তাই ত দিলে
পাক কোরানের বাণী।।
খোদা, তোমার মেহেরবানী।।

-কাজী নজরুল ইসলাম-

বাদশাহ তুমি দ্বীন ও দুনিয়ার

বাদশাহ তুমি দ্বীন ও দুনিয়ার
হে পরোয়ারদিগার।
সিজদা লও হে হাজার বার আমার
হে পরোয়ারদিগার।।

চাঁদ সুরুয আর গ্রহ তারা
জ্বীন ইনসান আর ফেরেশ্তারা
দিন রজনী গাহিছে তারা
মহিমা তোমার।।

তোমার নুরের রৌশনি পরশি
উজ্জ্বল হয় যে রবি অ শশী
রঙ্গিন হয়ে উঠে বিকশি
ফুল সে বাগিচার।।

বিশ্ব ভুবনে যাহা কিছু আছে
তোমারি কাছে করুনা যাঁচে
তোমারি মাঝে মরেও বাঁচে
জীবন সবার।।

-গোলাম মোস্তফা-

হে খোদা দয়াময় রহমান রহিম

হে খোদা দয়াময় রহমান রহিম
হে খোদা দয়াময় রহমান রহিম
হে বিরাট, হে মহান, হে অনন্ত অসীম।।

নিখিল ধরণীর তুমি অধিপতি
তুমি নিত্য ও সত্য পবিত্র অতি
চির অন্ধকারের তুমি ধ্রুব- জ্যোতি
তুমি সুন্দর মঙ্গল মহামহিম।।

তুমি মুক্ত স্বাধীন বাধা- বন্ধনহীন
তুমি এক তুমি অদ্বিতীয় চিরদিন
তুমি সৃজন- পালন- ধ্বংসকারী
তুমি অব্যয় অক্ষয় অন্ত- আদিম।।

আমি গুনাহগার পথ অন্ধকার
জ্বালো নুরের আলো নয়নে আমার
আমি চাইনা বিচার হাশরের দিন
চাই করুনা তোমারি ওগো হাকিম।।

-গোলাম মোস্তফা-

ঝংকার- মতিউর রহমান মল্লিকঃ দাও খোদা দাও

দাও খোদা দাও হেথায় পূর্ণ ইসলামী সমাজ
রাশেদার যুগ দাও ফিরায়ে দাও কোরানের রাজ।।

কোটি কোটি মানুষ হেথায় বঞ্চিত রে বঞ্চিত
বাতিল মতের জিন্দানে হায়! লাঞ্চিত রে লাঞ্চিত
জলে স্থলে বিভীষিকা হায়
পশুত্ব আর বর্বরতায়
তাই তো হেথায় আজ কামনা
খোদা তোমার রাজ।।

লাখ শহীদের রক্তে এদেশ রঞ্জিত রে রঞ্জিত
লক্ষ মায়ের বক্ষে ব্যথা সঞ্চিত রে সঞ্চিত
কত ভাই যে হারিয়ে গেল
কত বন্ধু প্রান হারালো
সকল ব্যথা ভুলবো পেলে
খোদা তোমার রাজ।।

আর কত চাও রক্ত খোদা উজাড় এদেশ উজাড় প্রায়
আর কত চাও শহীদ খোদা উজাড় এদেশ উজাড় প্রায়
চাইলে আরো নাওগো আরো
রক্ত সাগর ভরো ভরো
সকল কিছুর বদলাতে দাও
খোদা তোমার রাজ।।

ঝংকার- মতিউর রহমান মল্লিকঃ আজ যত প্রয়োজন

আজ যত প্রয়োজন গান গজলের
আর যত প্রয়োজন শিল্পীর
তারও চেয়ে প্রয়োজন সংগ্রামী আর
সিংহ সাহসী কর্মীর।।

যে কর্মী কোন বাধা মানেনা
যে কর্মী ভয় কি তা জানেনা
কোরানের দুশমন
যারে দেখে ভয় পায়
দুর্বার দুর্জয় উঁচু শির
আজ শুধু প্রয়োজন সেই কর্মীর।।

তাগুতের সয়লাব দেখে যে
শপথের দাবদাহে বাঁধে বুক
শহীদের ইতিকথা পড়লে মনে
ভুলে যায় আপনার সুখ দুখ।।

যে কর্মী জানেনাকো হতাশা
দূর ঠেলে নিরাশার কুয়াশা
জিহাদের ময়দানে
তৎপর অবিরাম
নির্ভীক বিপ্লবী মহাবীর
আজ শুধু প্রয়োজন সেই কর্মীর।।

ঝংকার- মতিউর রহমান মল্লিকঃ মঞ্জিল দূরে নয়

আমাদের সামনে বাধার পাহাড়
সাথে বহে টলমল রক্ত নদী
মঞ্জিল দূরে নয় দুঃসাহসে
কদম কদম পথ চলো যদি।।

সংগ্রাম মুখর এই জীবনে
শপথ তপ্ত করে আগুনে
ঈমানের জ্বালামুখে ঝনঝা এনে
জেহাদের মাঠে চলো সূর্য- সাথী।।

তাকবীর দিকে দিকে ছড়িয়ে
বজ্র বর্ম বুকে জড়িয়ে
জীবনের ঘাটে ঘাটে বহ্নি ঢেলে
জেহাদের মাঠে চলো জংগী –সাথী।।

ঝংকার- মতিউর রহমান মল্লিকঃ সূর্য যে কথা বলছে

জনতার মনে চেতনার শিখা জ্বলছে
নিশীথের তীরে সূর্য যে কথা বলছে।।

ক্রন্দন ভরা দিন
লাল খুন মাখা ঋন
আগামী দিনের বিজয়ের কথা বলছে।।

সবহারা মানুষের
অম্লান সাহসের
ত্যাগ তিতিক্ষা উদয়ের পথে চলছে।।

শান্তির অম্লান
শ্যামায়িত আরমান-
হেজাজের ঝড়ে বীভৎস বাধা দলছে।।